কেন ভারতীয় হিন্দুত্ববাদীরা গাজায় ইসরাইলি হামলা সমর্থন করছে
অনলাইনে ভারত থেকে ইসরাইলের পক্ষে যেসব হ্যাশট্যাগ ট্রেন্ডিং দেখা যাচ্ছে তার মধ্যে আছে, #ISupportIsrael, #IndiaWithIsrael, #IndiaStandsWithIsrael এবং #IsrealUnderFire। এসব হ্যাশট্যাগের সঙ্গে যেসব পোস্ট যুক্ত রয়েছে তার অনেকগুলোতেই ফিলিস্তিনিদের সন্ত্রাসী বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এরকম ভাষায় ফিলিস্তিনিদের চিহ্নিত করে মূলত ইসরাইল।
এর বাইরে কেউ সমর্থন করুক বা না করুক, সকল ফিলিস্তিনিকে সন্ত্রাসী বলতে দেখা যায় না কোনো দেশকেই। এমনকি টুইটারের ভারতের টপ ট্রেন্ডসে দেখা গেছে #PalestineTerrorists হ্যাশট্যাগটি।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত গাজায় ইসরাইলি হামলায় অন্তত ২১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। যার মধ্যে ৬১ জনই শিশু। হতাহত হয়েছেন সহস্রাধিক। অপরদিকে পশ্চিম তীরেও আন্দোলন করছেন ফিলিস্তিনিরা। তারা গাজায় ইসরাইলি হামলার প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। সেখানেও ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। হামাসের রকেট হামলায় ইসরাইলে নিহত হয়েছেন ১২ জন। কিন্তু ভারতে ইসরাইলের এই হামলার প্রতি প্রবল সমর্থন দেখা গেছে। বিশেষ করে টুইটার ও ইনস্টাগ্রামে ছিল ইসরাইল সমর্থকদের সরব উপস্থিতি। তারা বেশির ভাগই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল বিজেপির সমর্থক। ইসরাইলকে সমর্থন দিতে দেখা গেছে ভারতীয় আইনজীবী ও সাংবাদিকদেরও।
১২ই মে বিজেপি’র আইনপ্রণেতা তেজাসভি সুরিয়া টুইটারে লিখেন, আমরা তোমার সঙ্গে আছি ইসরাইল, শক্ত থাকো। তিনি মুসলিমবিরোধী উত্তেজনা সৃষ্টির জন্যও পরিচিত। আবার উত্তর ভারতের শহর চণ্ডিগড়ের বিজেপি মুখপাত্র গৌরব গোয়েল একটানা ইসরাইলকে সমর্থন করে পোস্ট করে যাচ্ছেন। গত শুক্রবার তিনি একটি টুইট করেন যাতে ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর ছবি যুক্ত ছিল। এতে তিনি লেখেন, ‘প্রিয় ইসরাইলিরা, তোমরা একা নও। ভারতও তোমাদের সঙ্গে রয়েছে।’ তার ওই টুইট কয়েক হাজার জন পছন্দ করেছেন। বিজেপি সমর্থক হিসেবে পরিচিত হারডিক ভাভাসারের ফলোয়ার ১ লাখ ৩৪ হাজার। তিনি গাজায় ইসরাইলি হামলায় আল জাজিরা ও এপি’র কার্যালয় ধ্বংসের ভিডিও আপলোড করে আনন্দ প্রকাশ করেন। আবার যেসব ভারতীয় ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানাচ্ছেন তাদেরকেও কটাক্ষ করে প্রচুর পোস্ট দেখা যাচ্ছে দেশটির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
ভারতীয় সাংবাদিক রানা আইয়ুব রোববার বলেন, যারাই ইসরাইলকে সমর্থন করে হ্যাশট্যাগ দিচ্ছেন তাদের মধ্যে বিজেপি সমর্থকই বেশি। অনেকগুলো অ্যাকাউন্টকে বিজেপির মন্ত্রীরা এমনকি স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও ফলো করেন। গবেষক ও লেখক শ্রীনিভাস কোদালি বলেন, মূলত হিন্দুত্ববাদীদের যেই গ্রুপটি অনলাইনে সক্রিয় রয়েছেন তারাই ইসরাইলের এই হামলাকে সমর্থন জানাচ্ছেন। কারণ সেখানে মুসলিমরা হামলার শিকার হচ্ছে। তাদের এই উচ্ছ্বাসের পেছনে রয়েছে মূলত মুসলিমদের প্রতি ঘৃণা।
কোন মন্তব্য নেই