ওমানে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত আট প্রবাসীর লাশ দেশে, কান্নায় ভাসল সন্দ্বীপ
ওমানে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত আট প্রবাসীর লাশ দেশে, কান্নায় ভাসল সন্দ্বীপ
রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম || টাইমস এক্সপ্রেস ২৪
এক বুক রঙিন স্বপ্ন নিয়ে প্রিয় মাতৃভূমি ছেড়ে জীবিকার তাগিদে ওমান গিয়েছিলেন তারা। পরিবারকে সুখ দিতে চেয়েছিলেন প্রবাসে ঘাম ঝরিয়ে। কিন্তু সেই রঙিন স্বপ্ন ফিরল সাদা কফিনে নিথর দেহ হয়ে। ওমানে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত আট প্রবাসীর মরদেহ একসঙ্গে দেশে ফিরেছে।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে তাঁদের মরদেহ চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। পরে স্বজনদের কাছে মরদেহগুলো হস্তান্তর করা হয়।
বিমানবন্দরে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা। আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে পুরো পরিবেশ। পরে মরদেহগুলো সীতাকুণ্ডের কুমিরা ঘাট হয়ে সন্দ্বীপে নিয়ে যাওয়া হয়।
নিহতরা হলেন— সন্দ্বীপের মোহাম্মদ আমিন (৫০), মো. সাহাবুদ্দিন (২৮), মো. বাবলু (২৮), মো. রকি (২৭), মো. আরজু (২৬), মো. জুয়েল (২৮), মোশারফ হোসেন (২৬) এবং রাউজানের চিকদাইর গ্রামের মো. আলাউদ্দিন (২৮)। এর মধ্যে আলাউদ্দিনের জানাজা অনুষ্ঠিত হয় শনিবার রাতে, আর বাকি সাতজনের জানাজা রবিবার সকালে নিজ নিজ গ্রামে সম্পন্ন হয়।
বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহিম খলিল বলেন, “শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে তাদের মরদেহ চট্টগ্রামে পৌঁছে, পরে স্বজনরা গ্রহণ করেন।”
সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মং চিনু মারমা জানান, “রবিবার সকালে মরদেহগুলো সন্দ্বীপে পৌঁছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে।”
জানা গেছে, গত ৮ অক্টোবর ওমানের ধুকুম প্রদেশের সিদরা এলাকায় আট প্রবাসীকে বহনকারী একটি মাইক্রোবাসের সঙ্গে অপর একটি গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তাঁদের মৃত্যু হয়। নিহতরা সবাই মাছ ধরার কাজে নিয়োজিত ছিলেন এবং দুর্ঘটনার সময় সাগর থেকে ফেরার পথে ছিলেন।
দীর্ঘ ১০ দিন পর শনিবার রাতে দেশে ফেরে তাঁদের মরদেহ। রবিবার সকালে সাতজনের মরদেহ নেওয়া হয় সীতাকুণ্ডের কুমিরা ঘাটে, সেখান থেকে স্পিডবোটে করে সন্দ্বীপে পাঠানো হয়। কফিনবন্দি প্রবাসীদের একসঙ্গে দেখতে ছুটে আসেন অসংখ্য মানুষ। আহাজারিতে মুখর হয়ে ওঠে ঘাটপাড় ও নদীপথ।

কোন মন্তব্য নেই