৯৭ কোচিং শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া শুরু - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

৯৭ কোচিং শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া শুরু

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তালিকাভুক্ত কোচিং শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রথমে কারণ দর্শানোর চিঠি দেয়া হবে। শিক্ষকদের জবাবের প্রেক্ষিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ তালিকায় ৯৭ জন কোচিং শিক্ষক রয়েছেন।দুদক ও মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, দুদক সম্প্রতি রাজধানীর আটটি সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনুসন্ধান চালিয়ে ৯৭ জন কোচিং শিক্ষককে চিহ্নিত করে। এসব শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দুদক মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে চিঠি দেয়। ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে। চিঠিটি গত রোববার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) বিভাগে পৌঁছায়। এরপরই মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।


আগামী সপ্তাহে মাউশিকে চিঠি দিয়ে শিক্ষকদের কাছ থেকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিবে মন্ত্রণালয়। এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ করতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে দুদক। এসব কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে আগামী রোববার সকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে মন্ত্রণালয় ও দুদকের মধ্যে সমন্বয় সভা ডাকা হয়েছে। সভায় মন্ত্রণালয়ের দুই বিভাগ ও এর অধীন সব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়।


শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব (বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়) সালমা জাহান বলেন, দুদকের অনুসন্ধানে অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। মাউশির (মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর) মাধ্যমে প্রথমে তাদের শোকজ করা হবে। শোকজের জবাব পাওয়ার পর অন্যান্য ব্যবস্থা নেয়া হবে। কী ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের ঢাকার বাইরে বদলি। আর এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন স্থগিত করা হবে। তিনি বলেন, কোচিং, প্রাইভেট ও নোট গাইড নির্ভরতা কমাতে ‘শিক্ষা আইন’ প্রণয়ন করা হচ্ছে। আইনটি পাস হলে শিক্ষকদের বহু অপকর্ম বন্ধ হয়ে যাবে।
অভিযুক্ত শিক্ষকদের তালিকাসহ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো দুদকের চিঠিতে বলা হয়েছে, অনৈতিক ও অবৈধ কার্যক্রম কোচিং বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালা-২০১২ অনুযায়ী, সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা’ ১৯৮৫ এর অধীনে অসদাচরণ করেছেন গণ্য করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে এই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। দুদকের চিঠি থেকে জানা গেছে, মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ১২ জন, মতিঝিল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের চারজন, খিলগাঁও সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন এবং ধানমন্ডি গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুলের আটজন শিক্ষক রয়েছেন। এছাড়া আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৩৬ জন, মতিঝিল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ২৪ জন, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাতজন, রাজউক স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাঁচজন শিক্ষক রয়েছেন।
দুদকের তালিকা অনুযায়ী অভিযুক্ত শিক্ষকরা হলেন- আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নাজিম উদ্দিন কামাল (ইংরেজি), আব্দুল মান্নান (রসায়ন), উম্মে ফাতিমা (বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরচিয়), মো. আজমল হোসেন (বাংলা), গোলাম মোস্তফা (গণিত), আশরাফুল আলম (রসায়ন), সুবাস চন্দ্র পোদ্দার (রসায়ন), লাভলী আখতার, তাসমিন নাহার, মতিনুর (ইংরেজি), উম্মে সালমা (ইংরেজি), মো. আব্দুল জলিল (ব্যবসায় শিক্ষা), মোহাম্মদ ফখরুদ্দীন (রসায়ন), মনিরা জাহান (ইংরেজি), ফাহমিদা খানম পরী (গণিত), লুৎফুন নাহার (গণিত), হামিদা বেগম (গণিত), নাজনীন আক্তার (গণিত), তৌহিদুল ইসলাম (ইংরেজি), সুরাইয়া জান্নাত (ইংরেজি), মো. সফিকুর রহমান-৩ (গণিত ও বিজ্ঞান), মো. শফিকুর রহমান সোহাগ (গণিত ও বিজ্ঞান), নুরুল আমিন (গণিত), মনিরুল ইসলাম (ইংরেজি), রফিকুল ইসলাম (সমাজবিজ্ঞান), গোলাম মোস্তফা (গণিত), অহিদুজ্জামান (বাংলা), মাকসুদা বেগম মালা, আলী নেওয়াজ আলম করিম, মো. আবুল কালাম আজাদ ও মো. আব্দুর রব এবং বনশ্রী শাখার মো. শফিকুল ইসলাম (ইংরেজি), মো. মাহবুবুর রহমান (পদার্থবিজ্ঞান), মো. মোয়াজ্জেম হোসেন (গণিত) ও আব্দুল হালিম (গণিত)।



মতিঝিল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অভিযুক্ত শিক্ষকরা হলেন- সহকারী প্রধান শিক্ষক এনামুল হক, মেজবাহুল ইসলাম (ইংরেজি), সুবীর কুমার সাহা (গণিত), মো. সাইফুল ইসলাম, মোহনলাল ঢালী, বাসুদেব সমাদ্দার, বকুল বেগম, আসাদ হোসেন (ইংরেজি), প্রদীপ কুমার বসাক, আবুল খায়ের, শারমীন খানম, মো. কবীর আহমদে, খ ম কবির আহমেদ, মো. দেলোয়ার হোসেন, মাও. কামরুল হাসান, মো. রুহুল আমিন-২, মো. কামরুজ্জামান, শেখ শহীদুল ইসলাম, শুকদেব ঢালী, হাসান মঞ্জুর হিলালী, আমান উল্লাহ আমান, হামিদুল হক খান, রমেশ চন্দ্র বিশ্বাস ও চন্দন রায়।


ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অভিযুক্ত শিক্ষকরা হলেন- প্রভাতী শাখার সহকারী শিক্ষক কামরুন্নাহার চৌধুরী (ইংরেজি ভার্সন), ড. ফারহানা (পদার্থ বিজ্ঞান), সুরাইয়া নাসরিন (ইংরেজি), লক্ষ্মীরানী, ফেরদৌসী ও নুশরাত জাহান।

রাজউক উত্তরা মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অভিযুক্ত শিক্ষকরা হলেন- এ বি এম মইনুল ইসলাম (গণিত), মো. আলী আকবর (গণিত), মো. রেজাউর রহমান (গণিত), মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম (ইংরেজি) ও মোহাম্মদ কামরুজ্জামান (রসায়ন)।
মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিযুক্ত শিক্ষকরা হলেন, প্রভাতী শাখার সহকারী শিক্ষক আবুল হোসেন মিয়া (ভৌতবিজ্ঞান), মো. মোখতার আলম (ইংরেজি), মো. মাইনুল হাসান ভূঁইয়া (গণিত), মুহাম্মদ বেলায়েত হোসনে (গণিত), মুহাম্মদ আফজালুর রহমান (ইংরেজি), মো. ইমরান আলী (ইংরেজি), দিবা শাখার সহকারী শিক্ষক মোহাম্মদ কবীর চৌধুরী, এ বি এম ছাইফুদ্দীন ইয়াহ, মো. মিজানুর রহমান, মো. আবুল কালাম আজাদ, মো. জহিরুল ইসলাম ও সহকারী শিক্ষক মো. জামাল উদ্দিন বেপারী।
মতিঝিল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিযুক্ত শিক্ষকরা হলেন- প্রভাতী শাখার সহকারী শিক্ষক নূরুন্নাহার সিদ্দিকা (সামাজিক বিজ্ঞান), দিবা শাখার সহকারী শিক্ষক শাহ মো. সাইফুর রহমান (গণিত), মো. শাহ আলম (ইংরেজি), মোসা. নাছমা আক্তার (ভূগোল)।
গর্ভনমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুলের অভিযুক্ত শিক্ষকরা হলেন মো. শাহজাহান সিরাজ (গণিত), মোহাম্মদ ইসলাম (গণিত), জাকির হোসেন (ইংরেজি), মো. শাহজাহান (গণিত), মো. আবদুল ওয়াদুদ খান (সামাজিক বিজ্ঞান), মো. আলতাফ হোসেন খান (ইংরেজি), মো. আযাদ রহমান (ইংরেজি) ও রণজিৎ কুমার শীল (গণিত)। খিলগাঁও সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিযুক্ত শিক্ষকরা হলেন সহকারী শিক্ষক মো. নাছির উদ্দিন চৌধুরী।

কোন মন্তব্য নেই