দু’জন ডাক্তার দিয়ে চলছে বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

দু’জন ডাক্তার দিয়ে চলছে বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স



মাত্র ২ জন ডাক্তার দিয়ে চলছে ৫০ শয্যা বিশিষ্ঠ রাজশাহীর বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ২৭ জন ডাক্তারের পোষ্ট থাকলেও কাগজে কলমে দায়িত্ব পালন করছেন ৪ জন । এদের কেউ হাসপাতাল চত্বরে থাকেন না। এক্সরে মেশিন থাকলেও লোকবল না থাকায় সেটি বিকল হতে বসেছে। শুন্য রয়েছে ৮ জন নার্স-সহ একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারি। ফলে মাঝে মধ্যে রুগীকে ইনজেকশান দিতে দেখা যাচ্ছে নাইট গার্ডকে। এ ছাড়াও আয়ার দায়িত্ব পালন করছেন নার্স , আর জরুরী বিভাগে টিকিট সরবরাহ করছেন একজন কুক মশালচী।
সরেজমিনে দেখা যায় মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরী বিভাগে কোন ডাক্তার নেই। বহির বিভাগে শত-শত রোগীর চাপ সামলাচ্ছেন মাত্র ২ জন ডাক্তার। হাসপাতালের ভেতর বহির বিভাগে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রুগীরা টিকিট হাতে দাড়িয়ে আছে দীর্ঘক্ষন।
এদের মধ্যে কামাল হোসেন নামের এক রুগী জানালেন, একটু পুর্বে কোন ডাক্তার হাসপাতালে ছিল না। ১০ মিনিট পুর্বে একই সাথে রাজশাহী থেকে দু’জন ডাক্তার প্রবেশ করলেন।
স্থানীয় লোকজন জানান, হাসপাতালে ডাক্তারদের জন্য আবাসিক কোয়াটার ব্যবস্থা রয়েছে। অথচ সেই কোয়াটারে কোন ডাক্তার থাকেন না। এমনকি বড় কর্তা(টিএইচএ) ডা: সিরাজুল ইসলাম তিনিও পার্শ্ববর্তী উপজেলা চারঘাট থেকে প্রতিদিন অফিস করেন। এখানে ২৭ জন ডাক্তারের স্থলে কাগজে কলমে রয়েছে ৪ জন । এর মধ্যে প্রতিদিন রুগী দেখে মাত্র দু’জন ডাক্তার।
অভিযোগ রয়েছে , জরুরী বিভাগে আসা অধিকাংশ রুগীকে রাজশাহী রেফাট করা হয়। সংকট রয়েছে ৮ জন নার্স সহ একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সুইপার-আয়া। ফলে জরুরী বিভাগে টিকিং সরবরাহ করছে কুক মশাল চী । আর আয়ার দায়িত্ব পালন করছেন নার্স সেই সাথে মাঝে মধ্যে রুগীকে ইনজেকশান দিচ্ছেন নাইট গার্ড। এ ছাড়াও কখনো-কখনো আউটডরে ঔষধ দিতে দেখা যায় মাস্টারোলে চাকরি করা চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারীকে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সুত্রে জানা যায়, ২৭ জন ডাক্তারের মধ্য ২৩ টি পদ শুন্য রয়েছে। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেনির ৯২টি পদের মধ্যে কর্মরত রয়েছে ৬২ জন। যে সকল পদ শুন্য রয়েছে তাদের মধ্য, আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার, জুনিয়ন কনসালটেন্ট মেডিসিন, জুনিয়ন কনসালটেন্ট এ্যানেসথেসিয়া, মেডিক্যাল অফিসার, সহকারি সার্জন চারজন, জুনিয়ন কনসালটেন্ট শিশু, অর্থো:, কার্ডিও:, চক্ষু, ইএনটি, যৌন ও চর্ম, সহকারি সার্জন, আএমও, ইএমও, প্যাথলজিস, এনেসথেসিয়া ও মেডিক্যাল অফিসার। এ ছাড়াও শুন্য রয়েছে ইউনানী, আয়ুর্বেদিক, হোমিও প্যাথিক ডাক্তার। এ ছাড়াও ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ৫ জন মেডিকেল অফিসার ও সহকারি সার্জন পদ শুন্য রয়েছে।
শুন্য রয়েছে মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট, সিনিয়ার স্টাফ-সহ ৮ জন নার্স , প্রধান সহকারি, কার্ডিওগ্রাফার, কমপাউন্ডার, ল্যাব এডেনডেন্ট, ওটি বয়, ইমারজেন্সি এডেনডেন্ট, অফিস সহকারি কাম কম অপারেটর দুই জন, ভান্ডার রক্ষক, স্বাস্থ্য সহকারি আট জন, কমিনিটি হেল্থ কেয়ার প্রোভাইডার দুই জন, এমএলএসএস, আয়া, সুইপারসহ পদ শুন্য রয়েছে।
এদিকে স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসা রোগীরাও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,` ডাক্তার সংকটের কারণে তারা সঠিকভাবে সেবা পাচ্ছেন না। দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। আবার সময় শেষ হলে ডাক্তার উঠে যান। অনেকেই চিকিৎসা নিতে এসে ফিরে যাচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন।’
উপজেলার আমোদপুর গ্রামের মালেকা বেগম অভিযোগ করে বলেন , ‌‌`এটা নামে মাত্র হাসপাতাল। যাদের টাকা নেই তারা আসবে এই হাসপাতালে। এখানে চিকিৎসা নিতে এসে দীর্ঘক্ষন দাড়িয়ে থাকার পরেও ঔষধ মিলেনা।’
অপর একজন রুগী কলিমুদ্দিন বলেন, `এই হাসপাতালে যে এক্সরে মেশিন রয়েছে সেটি’র চালক না থাকায় ছয় মাস ধরে বিকল। এর ফলে বাইরে অধিক টাকা দিয়ে এক্সরে করতে হয়।’
এ বিষয় জানতে চাইলে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের (টিএইচএ) ডা: সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‌`আমি সব সময় বাড়ি থেকে অফিস করি এ কথা ঠিক না। মাঝে মধ্যে কোয়াটারে থাকি। তবে ডাক্তার সহ কমকর্তা-কর্মচারী এবং নার্স সংকোটের বিষয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার লিখেও কোন প্রতিকার হয়নি।’

সূত্র: সানশাইন অনলাইন

কোন মন্তব্য নেই