জনগণ নৌকার পক্ষে রায় দেবে, বিশ্বাস লিটনের - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

জনগণ নৌকার পক্ষে রায় দেবে, বিশ্বাস লিটনের

রাজশাহী সিটি ভোটের আগের রাতে নৌকায় সিল মারা ব্যালট ‘লুকিয়ে রাখার’ যে অভিযোগ বিএনপি প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল করেছেন, সেটাকে ‘কাল্পনিক ও উর্বব মস্তিষ্কের’ হিসাবে অভিহিত করেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।
শুক্রবার দুপুরে তালাইবাড়ি মোড়ে গণসংযোগে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বলেন, এটিও তাদের নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চক্রান্ত বা ষড়যন্ত্র বলে আমি মনে করি। প্রথম দিন থেকে তারা এই রকম নানা অভিযোগ দিয়ে আসছিল, এর মধ্যে নানা নাটকীয় ঘটনাও তারা ঘটিয়েছে। তার মধ্যে ধরাও পড়েছে সেগুলি। এটিও তাদের উর্বর মস্তিষ্ক থেকে এনেছে। কাল্পনিক কোনো ঘটনা, হয়তো তারা স্বপ্নে দেখেতে পেয়েছে। আমরা এমন কোনো ঘটনা জানি না, শুনিওনি। মনেও করছি না।
বরিশাল ও সিলেটের সঙ্গে রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও ভোট গ্রহণ করা হবে ৩০ জুলাই। মেয়র পদে দলীয় প্রতীকের নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির বুলবুল।
শুক্রবার সকালে বিএনপি নেতা বুলবুল অভিযোগ করেন, নির্বাচনে ৯০ শতাংশ প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসার ‘আওয়ামী ঘরানার’ লোক থেকে বাছাই করা হয়েছে। তাদের মাধ্যমে ভোটের আগের রাতে নৌকায় সিলমারা ব্যালট ভোটকেন্দ্রে লুকিয়ে রাখা হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
রাজশাহী নগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকায় গণসংযোগে গিয়ে ধানের শীষের প্রার্থী সাংবাদিকদের বলেন, ভোটের আগের দিন প্রিজাইডিং অফিসারদের দিয়ে ভোট কেটে বিভিন্ন জায়গায় সেটা লুকিয়ে রাখা হবে (স্কুলের) হেডমাস্টারের রুমে বা এসিসট্যান্ট হেডমাস্টারের রুমে।


এ কারণে ভোটকেন্দ্রের ওইসব জায়গায় ‘সার্চলাইট’ বসানোর দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, এখানে এইচটি ইমাম নামে এক ভদ্রলোক আছেন, বর্তমান সরকারের মাননীয় উপদেষ্টা, তিনি বেছে বেছেৃ ৯০ পার্সেন্ট আওয়ামী লীগ ঘরানার লোকদের পোলিং অফিসার ও প্রিজাইডিং অফিসার রাখা হয়েছে। আমরা আজকে দুপুরের মধ্যে এর গেজেট চাই।
তবে ভোটের প্রচারের সর্বশেষ পরিস্থিতি ‘উৎসবমুখর’ আছে মন্তব্য করে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি লিটন বলেন, “যথেষ্ট সাড়া আছে ভোটারদের মধ্যে, ভোট দেওয়ার আনন্দ যেটা বাংলাদেশের মানুষ এনজয় করে, সেই পরিবেশটা আছে। তারপরও আগামী ২৪টা ঘন্টা বা ৪৮টা ঘন্টা, সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে পরিবেশ শান্ত রাখা আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় এই নেতা বলেন, আমরা যে বার্তাটি আমাদের কর্মীদের সবসময় দিয়েছি, বিভিন্ন কর্মীসভার মাধ্যমে দিয়েছি, সেটি হল তারা যেন কোনো অবস্থাতেই পরিবেশ পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয় এমন কোনো আচরণ না করে। এবং প্রয়োজনে পরিবেশ শান্ত রাখার জন্য যদি কিছুটা নতজানুও হতে হয়, তাও যেন তারা পরিবেশকে শান্ত রাখে। কারণ ভোটাররা আসবেন, ভোট দেবেন, এটি আমরা চাই। তারপর যে ফল আসে, আমরা মেনে নিব।
২০১৩ সালের রাজশাহী সিটি করপোরেশনে নির্দলীয় নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত বুলবুলের কাছেই হেরেছিলেন তার আগের পাঁচ বছর দায়িত্ব পালন করা লিটন। সে নির্বাচনে বুলবুলের কাছে ৪৭ হাজার ভোটের ব্যবধানে ওই হার লিটনের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে এলেও এবার পরিবেশ ‘অনেক ভালো’ মনে হচ্ছে তার কাছে।
এক প্রশ্নে তিনি বলেন, গতবারের চেয়ে পরিবেশ অনেক বেশি ভালো মনে হচ্ছে। কারণ, যিনি মেয়র ছিলেন তার কাছে কোনো কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন নগরবাসী পায়নি। তারা পরিবর্তন চান। আমি যেহেতু একবার কাজ করেছিলাম, কিছু উন্নয়নমূলক কাজও করেছিলাম। সেটি মাথায় রেখে তারা আমাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন।


তালাইবাড়ি মোড়ে গণসংযোগের আগে জুমার নামাজের পর জাহাজঘাট এলাকা থেকে ছুটির দিনের প্রচার শুরু করেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। পরে বড়কুঠি ও কুমারপাড়া এলাকায় গিয়ে ভোটারদের কাছে নৌকার পক্ষে সমর্থন চান লিটন।
এদিকে, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের আওয়ামী লীগ মনোনীত, মহাজোট সমর্থিত মেয়র প্রার্থী, সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, ‘নৌকার পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। আমরা আশা করছি জনগণ বিপুলভাবে নৌকার পক্ষে রায় দেবে, রাজশাহীতে ইতিহাস সৃষ্টি হবে।’ শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে নির্বাচনী গণসংযোগের সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান হেনার সন্তান এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি, এখনো বলছি নির্বাচনে সেনা মোতায়নের মতো কোনো পরিবেশ হয়নি। তাই সেনা মোতায়নের প্রয়োজন নেই। তারপরও যদি নির্বাচন কমিশন মনে করে, মোতায়ন করতে পারে, সেটি তাদের ব্যাপার।’
বিএনপির ঢালাও মিথ্যাচারের ব্যাপারে খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘আনুষ্ঠানিক প্রচারণার প্রথম দিন থেকেই বিএনপির প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ও বিএনপি নেতাকর্মীরা মিথ্যাচার করে আসছে। আমরা জানতাম যে নির্বাচনের শেষ দিন পর্যন্ত তারা মিথ্যাচার করবে, তাই হচ্ছে। তারা ভোট ডাকাতির কথা বলছে। ভোট ডাকাতির ইতিহাস তো তারাই সৃষ্টি করেছে। মাগুরায় ভোট ডাকাতি হয়েছিল জিয়াউর রহমানের আমলে। আমাদের ভোট ডাকাতির প্রয়োজন নেই। কারণ আওয়ামী লীগ জনগণের দল, জনগণকে নিয়ে আমরা চলি। জনগণের ভোটে আমরা বিজয়ী হবো।
তিনি আরো বলেন, জামায়াত-শিবিরের যদি অরাজনৈতিক তৎপরতা না হয়। তাহলে নির্বাচন স্বচ্ছ ও সুষ্ঠ না হওয়ার কোনো কারণ নেই। শুক্রবার দুপুরে নগরীর জাহাজঘাট জামে মসজিদে পবিত্র জুমার নামাজ আদায় করেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটন। নামাজ শেষে জাহাজঘাট, ধরমপুর, খোজাপুর ও তালাইমারি মোড়ে গণসংযোগ করেন তিনি। এ সময় তাঁর সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

কোন মন্তব্য নেই