রাজশাহীতে রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে স্পিডব্রেকার নির্মাণ শুরু - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

রাজশাহীতে রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে স্পিডব্রেকার নির্মাণ শুরু


বাসচাপায় দুই ছাত্র-ছাত্রীর মৃত্যুর পর টানা পাঁচ দিন সড়কে বিক্ষোভ করে নিজেদের দাবি বাস্তবায়নে সরকারের প্রতিশ্রুতি আদায় করেছে শিক্ষার্থীরা। সরকারও শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। দাবি বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন স্পটে বিশেষ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে স্পিডব্রেকার দিতে শুরু করেছে।
শুক্রবার সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে ১৩টি স্পটে ২৬টি স্পিডব্রেকার স্থাপনে রাস্তা খুড়াখুড়ি শুরু হয়েছে। জানা গেছে, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে এসব স্পিডব্রেকার দেয়া হচ্ছে। রাজশাহীতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মীর আকতার এ কাজের বাস্তবায়ন করছে। ‘মীর আকতার’ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ার শাহাবুদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বাসচাপায় শিক্ষার্থী মৃত্যু ঘটনায় ঢাকাসহ সারা দেশে শিক্ষার্থী আন্দোলন শুরু হয়। শিক্ষার্থীরা ৯ দফা দাবি বাস্তবায়নে এ আন্দোলন করে। তাদের দাবিতে এরই মধ্যে চাপা দেওয়া ওই বাসের চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে, গ্রেফতার করা হয়েছে জাবালে নূর পরিবহনের মালিককেও। মামলায় দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর সঙ্গে অপরাধজনিত হত্যার ধারা যুক্ত করা হয়েছে। এখন বিচার প্রক্রিয়াটি আদালতের উপর নির্ভর করছে। আইনমন্ত্রী বলেছেন, দ্রুত বিচার করে দোষীদের সাজা দেওয়া হবে। সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর জন্য অবহেলাকারী চালকের শাস্তির মাত্রা বাড়াতে দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা সড়ক পরিবহন আইন প্রণয়নে গতি এসেছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, “সড়ক দুর্ঘটনায় সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে নতুন আইন শিগগিরই সংসদে উপস্থাপন করা হবে।”

উল্লেখ্য, গত ২৯ জুলাই জাবালে নূরের দুটি বাসের রেষারেষির মধ্যে একটি বাস বিমানবন্দর সড়কের এমইএস এলাকায় রাস্তার পাশে দাঁড়ানো একদল শিক্ষার্থীর উপর উঠে যায়। তাতে শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হলে ক্ষোভে ফেটে পড়া তাদের সহপাঠিরা সড়ক অবরোধ করে বেশ কয়েকটি বাস ভাংচুর করে।
নৌমন্ত্রী ও পরিবহন শ্রমিক নেতা শাজাহান খানের এক বক্তব্যের পর ঢাকার বিভিন্ন প্রান্তে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও পরদিন সড়কে নামে, তাদের অবরোধে আটকা পড়েন মন্ত্রী, সংসদ সদস্যসহ নানা কর্মকর্তাও। এরপর বিভিন্ন জেলায়ও শুরু হয় বিক্ষোভ।
স্বতঃস্ফূর্ত এই আন্দোলন থেকে নয়টি দাবি উঠে আসে শিক্ষার্থীদের স্লোগানে, ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের কোনো সাংগঠনিক কাঠামো না থাকায় এভাবেই আসে নয় দাবির কথা, যাতে সমর্থনও দিতে দেখা যায় রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন মহলকে।
বিক্ষোভ শুরুর পরদিন থেকে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রীরা শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়ে আসছিলেন।

কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি; শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ আরও জোরদার হয়। এক পর্যায়ে সরকার বৃহস্পতিবার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করেও শিক্ষার্থীদের সড়কে নামা আটকাতে পারেনি।

এরপর বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার কার্যালয়ে ডেকে নেন নিহত দিয়া খানম মিম ও আবদুল করিম রাজীবের পরিবারকে। তাদের ২০ লাখ টাকা করে অনুদান দেওয়ার পাশাপাশি সড়কে নিরাপত্তায় নানা নির্দেশনার কথা তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে আশ্বস্ত হয়ে দিয়ার বাবা শিক্ষার্থীদের ঘরে ফেরার আহ্বান জানান।
পরে রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষার্থীদের ৯টি দাবির যৌক্তিকতা স্বীকার করে বলেন, এসব দাবি বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন।
এরপর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার পর আন্দোলন অযৌক্তিক হবে।

কোন মন্তব্য নেই