বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে চ্যাম্পিয়ন ফিলিস্তিন
বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের শিরোপা ঘরে তুলেছে ফিলিস্তিন। শুক্রবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনাল ম্যাচে দশজনে পরিণত হওয়া তাজিকিস্তানকে টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে হারিয়েছে তারা। নির্ধারিত এবং অতিরিক্ত সময়ের খেলা শেষে ম্যাচ ছিল গোলশূন্য। ফলে খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে, সেখানেই বিজয়কেতন উড়িয়েছে ফিলিস্তিন। ফাইনাল শেষে বিজয়ী দলের হাতে ট্রফি তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
একদিকে লাল, একদিকে সবুজ। ফাইনালে মাঠে লাল আর সবুজ রঙের জার্সিই ছিল। তবে ছিল না লাল-সবুজের দল বাংলাদেশ। গ্যালারিতে উপস্থিত হাজারো দর্শক লাল জার্সিধারী ফিলিস্তিন আর সবুজ জার্সিধারী তাজিকিস্তানের ফাইনাল ম্যাচ উপভোগ করলেন ঠিকই, তবে দারুণ খেলেও সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেয়া স্বাগতিক বাংলাদেশকে মিস করেছেন সমানভাবে।
পারফরম্যান্স আর শক্তির বিচারে আসরের সেরা দুটি দলই খেলেছে ফাইনালে। সেই ফাইনালে ফেভারিট ছিল ফিলিস্তিন। গ্রুপ পর্বের দেখায় তাজিকিস্তানকে ২-০ গোলে অনায়াসেই হারিয়েছিল তারা। কিন্তু গ্রুপ পর্বের ম্যাচ আর ফাইনাল ম্যাচের আবহ যে পুরোপুরি ভিন্ন, সেটাই দেখা গেল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে। যথেষ্ট সতর্ক হয়ে খেলেছে দুই দল। সপ্তম মিনিটে প্রথম আক্রমণ তাজিকিস্তানের। তবে জাহাঙ্গিরের লক্ষ্যভ্রষ্ট শট পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি ফিলিস্তিন গোলরক্ষককে।
তাজিকদের অমন আচমকা আক্রমণ তাতিয়ে দেয় ফিলিস্তিনিদের। এরপর লাগাতার আক্রমণ করে খেলেছে তারা। ১৮ মিনিটে বা প্রান্ত থেকে মুসার শট অল্পের জন্য জড়ায়নি জালে। মিনিট পাঁচেক পর রশিদের পাসে বল পেয়ে আবারও বক্সে ঢুকে জোরালো শট নেন ফিলিস্তিনের এই মিডফিল্ডার। তাজিক গোলরক্ষক ঝাঁপিয়ে পড়ে কর্নারের বিনিময়ে এ যাত্রা রক্ষা করেন দলকে। খানিক পর তাজিকিস্তানকে বাঁচিয়েছে গোলপোস্ট। দারুণ এক শট নিয়েছিলেন ফিলিস্তিন ফরোয়ার্ড খালিদ। বল বা পোস্টে লেগে ফেরত আসে।
৩৪ মিনিটে হঠাৎই ম্যাচে উত্তেজনা। ফিলিস্তিনের সামেহ মারাবাহকে মারাত্মক ফাউল করেন ফাতখুল্লুয়েভ। মুখে ঘুষিও মারেন। একপর্যায়ে দুই দলের ফুটবলাররা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। এরই জেরে রশিদ দেখেন হলুদ কার্ড। অন্যদিকে, লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় ফাতখুল্লুয়েভকে। ফলে দশজনের দলে পরিণত হয় তাজিকিস্তান। তবে তাদের মনোবল দেখে বোঝার উপায় ছিল না, তারা একজন কম নিয়ে খেলছে। ফিলিস্তিনের সঙ্গে দারুণভাবে লড়ে গেছে তাজিকিস্তান।
আসলে ভাগ্যকে ঠিক সেভাবে সঙ্গে পায়নি ফিলিস্তিন। দারুণ সব আক্রমণ শানিয়েছে দলটি। তৈরি করেছে সুযোগ। কিন্তু বারবার বাধার দেয়াল গড়ে দাঁড়িয়ে গেছেন তাজিকিস্তানের গোলরক্ষক। পাল্টা আক্রমণে গিয়ে সুযোগ তৈরি করছে তাজিকরাও। ৬০ মিনিটে বক্সের খুব কাছে ফ্রিকিক পেয়েও গোল আদায় করতে পারেননি আসরুরভ। ৭৬ মিনিটে তো নাজারুভের শট প্রতিহত হয়েছে পোস্টে। ফিরতি বলে শট নিয়ে বল জালে জড়িয়েছিলেন এই ডিফেন্ডার। কিন্তু অফসাইডের কারণে সেটি বাতিল হয়।
এভাবে একের পর এক সুযোগ নষ্টের কারণে নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা শেষ হয় গোলশূন্যভাবে। ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। একাধিক সুযোগ তৈরি করে এই সময়েও গোল পায়নি কোনো দল। ফলে চ্যাম্পিয়ন নির্ধারিত হয়েছে টাইব্রেকারে।

কোন মন্তব্য নেই