৮৪ হাজার ইভিএম কিনছে ইসি
জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ৮৪ হাজার ইলেকট্রিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কেনা হচ্ছে। আর আগামী ৫ বছরে ধাপে ধাপে দেড় লাখ ইভিএম মেশিন কেনা হবে। ১৭ অক্টোবর পরিকল্পন কমিশনে পাঠানে এক চিঠিতে চলতি অর্থবছরেই মেশিন কেনাসহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রম
বাস্তবায়নে ১ হাজার ৯৯৮ কোটি ৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা বরাদ্দ চেয়েছে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্যে ইভিএম মেশিন ক্রয়ে পরামর্শককে দিতে হবে ১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।
জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশন সচিব মোহাম্মদ হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, আমরা যে বরাদ্দ চেয়েছি এ টাকা দিয়ে প্রথম পর্যায়ে ৮৪ হাজার ইভিএম কেনা হবে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, পরামর্শক ব্যয় খুব বেশি নয়। কেননা উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে (ডিপিপি) যা বরাদ্দ আছে আমরাও তাই চেয়েছি। এর বেশি বা কম চাইনি।
সূত্র জানায়, পরিকল্পনা কমিশনের পাঠানো চিঠিতে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘নির্বাচন ব্যবস্থায় তথ্যপ্রযুক্তি প্রয়োগের লক্ষ্যে ইলেকট্রিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার শীর্ষক একটি প্রকল্প ১৯ সেপ্টেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদিত হয়। প্রকল্পটির মোট প্রাক্কলিত ব্যয় ৩ হাজার ৮২৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। এটি সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে (জিওবি) বাস্তবায়িত হবে। জুলাই থেকে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা। প্রকল্পটি অনুমোদন পাওয়ায় এটি বাস্তবায়নে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের এডিপিতে বরাদ্দ প্রয়োজন। প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বর্ণিত বিভাজন অনুযায়ী বিশেষ সহায়তা খাত থেকে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হল।’
নির্বাচন কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী শুধু ইভিএম মেশিন কেনার জন্য চাওয়া হয়েছে ১ হাজার ৯২১ কোটি ৮৬ লাখ ৪১ হাজার টাকা। ব্যক্তি পরামর্শক সেবা খাতে চাওয়া হয়েছে ১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা, অফিস সরঞ্জামাদি ক্রয় বাবদ ৫ লাখ ৬৫ হাজার টাকা, কম্পিউটার সফটওয়্যার খাতে ৫০ কোটি ৯০ লাখ টাকা, আসবাবপত্র ও র্যাক ক্রয় বাবদ ১১ কোটি ৬১ লাখ টাকা, পরিবহন ব্যয় ১ কোটি ৩৮ লাখ ৯২ হাজার টাকা, নিবন্ধন ফি বাবদ সাড়ে ১২ লাখ টাকা, অডিও-ভিডিও বা চলচ্চিত্র নির্মাণ খাতে ১ কোটি টাকা, অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণ খাতে ১ কোটি ৭৬ লাখ ৪১ হাজার টাকা, প্রচার ও বিজ্ঞাপনে ১ কোটি টাকা, হায়ারিং চার্জ ৪৫ লাখ টাকা, বৈদেশিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ খাতে ১ কোটি টাকা, সেমিনার ও কনফারেন্স খাতে ৪০ লাখ টাকা, মোটরযান রক্ষণাবেক্ষণ ভাতা হিসেবে ১২ লাখ টাকা, পেট্রল-ওয়েল-লুব্রিকেন্ট খাতে ১৮ লাখ টাকা, অভ্যন্তরীণ ভ্রমন ব্যয় ১০ লাখ টাকা, ব্যবস্থাপনা ব্যয় ৫ লাখ টাকা। আপ্যায়ন খরচ ৩ লাখ টাকা এবং বিভিন্ন বেতন, ভাতা, সম্মানী, ক্ষতিপূরণ ভাতা, ব্যাটম্যাট ভাতা, নববর্ষ ভাতা, পোশাক ভাতা, শিক্ষা ভাতা, চিকিৎসা ভাতা, উৎসব ভাতা, নিবন্ধন ফি, অতিরিক্ত সময়ে কাজের ফি ইত্যাদি খাতেও বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, বহুল আলোচিত ইভিএম ক্রয়, সংরক্ষণ ও ব্যবহার প্রকল্পের আওতায় প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে- দেশব্যাপী বিভিন্ন নির্বাচন অনুষ্ঠানে দেড় লাখ ইভিএম মেশিন ক্রয়, সংরক্ষণ ও ব্যবহার। নির্বাচনসংশ্লিষ্ট জনবলের জন্য ইভিএম ব্যবহার সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণের আয়োজন এবং ইভিএমের মাধ্যমে ভোট দানে ভোটারদের সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন।
প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন দেয়ার পর পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানান, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়ে বলেছেন- ধীরে ধীরে ইভিএম ব্যববহার করতে হবে। তিন ধাপে এটি ব্যবহার করতে হবে।
তবে এ যন্ত্রের অপব্যবহার যাতে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রথমে শহর এলাকায় ব্যবহার করতে হবে। ধীরে ধীরে সারা দেশে ব্যবহার করতে হবে। এক প্রশ্নের উত্তরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, জাতীয় নির্বাচনে কিছু সংখ্যক ইভিএম ব্যবহার করতে হলে আরপিও সংশোধন করতে হবে। তবে কতটুকু কিভাবে ব্যববহার করা হবে সেটি নির্বাচন কমিশনের ব্যাপার।
কোন মন্তব্য নেই