বিশ্বে সেরা ৫ ব্র্যান্ডের একটি হতে চায় ওয়ালটন - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

বিশ্বে সেরা ৫ ব্র্যান্ডের একটি হতে চায় ওয়ালটন

আগামী ১০ বছরের মধ্যে বিশ্বের সেরা ৫টি ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ডের একটি হতে চায় ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। এ উদ্দেশ্যে কোম্পানিটি তার রিসার্চ ও মার্কেটিংসহ সব বিভাগকে প্রস্তুত করছে। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উপস্থিতি বাড়াতে পুঁজিবাজারে আসছে তারা।

প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আয়োজিত রোড শো অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম আশরাফুল আলম।



কোম্পানিটি বুকবিল্ডিং পদ্ধতির আইপিওর মাধ্যমে বাজারে নতুন শেয়ার বিক্রি করে ১০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে। উত্তোলিত অর্থ কোম্পানির কারখানা সম্প্রসারণ, আধুনিকায়ন, গবেষণা ও মান উন্নয়ন, আংশিক ব্যাংক ঋণ পরিশোধ এবং আইপিও খরচ মেটাতে ব্যয় করা হবে। তবে এটি কোম্পানির আইপিওর ঘোষিত উদ্দেশ্য হলেও মূল উদ্দেশ্য অনেকটাই ভিন্ন। মূলত আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিতি ও গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোর লক্ষ্যে কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে আসার এই প্রক্রিয়া শুরু করেছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা অর্থসূচককে জানিয়েছেন। তাছাড়া কোনো ধরনের পারিবারিক বিরোধ, মতভিন্নতা অথবা নেতৃত্বের দুর্বলতার কারণে যাতে কোম্পানির ভবিষ্যত হুমকির মুখে না পড়ে, প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম পর্যন্ত চলমান থাকে কোম্পানির ব্যবসা- সেই উদ্দেশ্যও রয়েছে আইপিওতে আসার পেছনে।

১৫ জানুয়ারি মঙ্গলবার রাজধানীর বসুন্ধরায় অবস্থিত ওয়ালটনের করপোরেট অফিসের সম্মেলন কক্ষে এই রোড শো অনুষ্ঠিত হয়।

রোড শো-তে ওয়ালটন এমডি বলেন, শুধু টাকার জন্য শেয়ারবাজারে আসছি না। আমাদের জার্নিটার লক্ষ্য সূদুরপ্রসারী। বিশ্বের শীর্ষ ব্রান্ডগুলোর একটি হতে চায় ওয়ালটন। আর এ কারণে বাজারে আসছি। আমাদের জার্নিতে আপনাদেরকে প্রয়োজন।

রোড শোতে এলিজিবল ইনভেস্টর তথা ব্রোকারহাউজ, মার্চেন্ট ব্যাংক, অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টসহ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে কোম্পানির পরিচিতি, আর্থিকচিত্র ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়। রোড শোতে স্টক এক্সচেঞ্জ এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।

রোড শোতে এস এম আশরাফুল আলম বলেন, আজ থেকে ১০ বছর আগে যখন ওয়ালটন দেশে ইলেকট্রনিক পণ্য উৎপাদন শুরু করে তখন হয়তো কেউ কল্পনা-ই করেনি সে সময়কার বাঘা বাঘা কোম্পানিগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে টিকতে পারবে। কিন্তু আমাদের স্বপ্ন ছিল, বিশ্বাস ছিল। ছিল নিরন্তর চেষ্টা। দেশী ও বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে টপকে ওয়ালটন এখন মার্কেট লিডার। ফ্রিজের বাজারের ৭০ শতাংশের বেশি ওয়ালটনের দখলে। অন্যান্য সেগমেন্টেও ওয়ালটনের অবস্থান সুদৃঢ়।

তিনি বলেন, আমরা ওয়ালটনকে বিশ্বের অন্যতম সেরা একটি ব্র্যান্ডে পরিণত করতে চাই। এটি অনেকের কাছে অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে। কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি, এটি খুবই সম্ভব। স্থানীয় বাজারে অন্যান্য কোম্পানিগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে শীর্ষে উঠে আসা যতটুকু কষ্টকর ছিল, আন্তর্জাতিক বাজারে শুক্ত অবস্থান তৈরি করা তারচেয়ে কম কষ্টকর হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।


পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তি সম্পর্কে আশরাফুল আলম বলেন, আসলে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তি একটা জটিল প্রক্রিয়া। এখানে সবাই ভয় দেখাচ্ছে। কথা সাবধানে বলতে হবে, এছাড়া নানা ভীতির কথা শুনছি। তবে আমি বলবো, পুঁজিবাজার বা শেয়ার নিয়ে আমাদের কোনো ভাবনার সময় নেই। আমরা আমাদের পন্য উৎপাদন এবং বিক্রি বাড়ার কথা চিন্তা করছি, করবো। ভবিষ্যতে কিভাবে বিশ্বের সেরা ৫ টি ব্রান্ডের মধ্যে স্থান পাওয়া যায় সেটাই আমাদের লক্ষ্য ও ভাবনা।



তিনি বলেন, যারা আমাদের শেয়ার কিনবেন আশা করি তারা বঞ্চিত হবেন না। আমরা প্রতিবছরই সেরা ভ্যাট দাতা নির্বাচিত হই। ভ্যাট কখনও ইচ্ছে করে বেশি বা কম দেই না। বাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার পরও মুনাফা কম বেশি করা হবে না নিশ্চিত থাকুন।

২০১৯ সালের লক্ষ্য সম্পর্কে তিনি বলেন,  এ বছর আমরা ২ মিলিয়ন পন্য উৎপাদন এবং বিক্রি করবো। আর তা থেকে ১ হাজার কোটি টাকার বেশি মুনাফা হবে। আপনারা তা লিখে রাখতে পারেন। তা অর্জন করতে না পারলে পরবর্তী বার্ষিক সাধারন সভায় (এজিএম) তা আমাকে জিজ্ঞাস করবেন। আশা করি আমি যা বলেছি তা অর্জন সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, ওয়ালটন দেশের বাজারে বড় ধরনের প্লাটফর্ম তৈরী করতে পারে। দেশে যেসব কোম্পানি ৬০-৭০ বছর ব্যবসা করছে ওয়ালটন তাদের পেছনে ফেলে দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি গ্লোবাল মার্কেটের স্ট্যান্ডার্ড ফলো করছে। বিশ্বের সেরা কোম্পানির মধ্যে ওয়ালটনের নাম আসবে বলে আশা করছি।

ওয়ালটনের জন্ম সম্পর্কে তিনি বলেন, ওয়ালটনের জন্ম ফ্যামিলি পরিসরে। আপনাদের হাত ধরে বিশাল বড় কোম্পানি হবে ওয়ালটন। আপনাদেরকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যাবো। ফ্যামিলি প্রতিষ্ঠান একটা নির্দিষ্ট বৃত্তে থাকে। কিন্তু পাবলিক প্রতিষ্ঠান পরিবার তথা দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিশ্বে সেরা হিসেবে গড়ে উঠে। যখন শুরু করি তখন অন্যান্য কোম্পানিকে অতিক্রম করে সামনে এগিয়ে যাবো সেটা ছিল স্বপ্ন। আর এখন তা বাস্তবায়নের পথে। তাই আপনাদেরকে সঙ্গে নিয়ে বিশ্ব সেরা হতে চাই। সেটা যাতে টেকসই হয় তাই আমরা জবাবদিহিতার মধ্যে থাকতে চাই। আর এতে দীর্ঘ মেয়াদী টিকে থাকা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।-অর্থসূচক

কোন মন্তব্য নেই