সাফারি পার্কে জিরাফের মৃত্যু - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

সাফারি পার্কে জিরাফের মৃত্যু

গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) রাতে একটি জিরাফের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে পুরুষ শূন্য হলো পার্কের জিরাফের পরিবারটি। ওই পার্কে এ যাবৎ ৬টি জিরাফের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এজন্য কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. নিজাম উদ্দিনের অবহেলাকেই দায়ি করেছেন পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলামসহ আরো কয়েকজন কর্মকর্তা।

পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম জানান, প্রায় দুইমাস ধরে ওই জিরাফটি পাতা জাতীয় খাবার খেলেও দানাদার খাবার বন্ধ করে দেয়। বিষয়টি পার্কের মেডিকেল বোর্ডের সদস্য বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জারি বিশেষজ্ঞ মো. রফিকুল আলম, ঢাকা চিড়িয়াখানার সাবেক কিউরেটরসহ কয়েকজন চিকিৎসকের নজরে দেয়া হয়। পরে তারা ওই জিরাফটির জন্য ব্যবস্থাপত্রসহ বিশেষ যত্ন নেয়ার পরামর্শ প্রদান করেন।



তবে বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আফ্রিকান সাফারি বেস্টনিতে গিয়ে ওই জিরাফটির মৃতদেহ দেখতে পান কর্তব্যরত পার্ক কর্মকর্তা-কর্মচারিরা। পরে মৃতদেহটি পার্ক চত্বরে মাটি চাপা দেয়া হয়।

এখন পযর্ন্ত বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে ছোট-বড় ৭টি জিরাফের মৃত্যু হয়। এসব জিরাফের মৃত্যুর জন্য পার্কে কর্তব্যরত চিকিৎসক নিজাম উদ্দিনের গাফিলতিকেই দায়ী করেছেন। বিভিন্ন প্রজাতির কয়েকহাজার প্রাণি এই পার্কে থাকলেও চিকিৎসক নিজামউদ্দিনের বিরুদ্ধে অধিকাংশ সময়ই পার্কে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

পার্কের বন্যপ্রাণি সুপারভাইজার (ওয়াইল্ডলাইফ ইন্সপেক্টর) আনিসুর রহমান, সরোয়ার হোসেন খানসহ বিভিন্ন কর্মকর্তারা জানান, চিকিৎসক নিজামউদ্দিন পার্কে রাত যাপন করেন না। তিনি থাকেন পার্ক থেকে প্রায় ১৫কিলোমিটার দূরে শেখ কামাল ওয়াইল্ড লাইফ সেন্টারের আবাসিক এলাকায়। মাঝে মধ্যে তিনি পার্কে আসলেও দ্রুত চলে যান। তিনি পার্কের প্রতিষ্ঠাকালীন ভেটেরিনারী সার্জন (চিকিৎসক)।

এ অবস্থায় কয়েকমাস আগে ওই পার্কে হাতেম সাজ্জাত মো. জুলকার নাইন নামে এক ভেটেরিনারি অফিসার যোগ দেন। তিনি নিজামউদ্দিনের কথা ছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না বলেও অভিযোগ রয়েছে।

এ ব্যাপারে জুলকার নাইনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগ করলেও রিসিভ করেননি।



পার্ক কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম জানান, বন্য প্রাণিরা যেহেতু কথা বলতে পারে না। তাই তাদের যত্ন নিতে হয় খুব কাছে থেকে। কিন্তু উনি তা করেন না। এ ব্যাপারে পার্কের প্রকল্প পরিচালককেও অবগত করা হয়েছে।

২০১৫ সাল পর্যন্ত অফ্রিকা থেকে ১০টি জিরাফ এ পার্কে আনা হয়েছিলো। তারা এ পার্কে শাবক জন্ম দেয় তিনটি। এছাড়াও ২০১৮ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত কয়েক মাসের ব্যবধানে মোট ৬টি প্রাপ্ত বয়স্ক জিরাফ মারা গেছে। এদের মধ্যে কয়েকটি পুরুষ জিরাফও ছিল। গত মঙ্গলবার রাতে সর্বশেষ পুরুষ জিরাফটির মৃত্যুর পর পার্কে বর্তমানে ৭টি জিরাফ রয়েছে। যারা সবাই মাদি।



পার্কের প্রকল্প পরিচালক সামসুল আজম বলেন, তিনিও পার্কে বিভিন্ন সময় পরিদর্শন করতে গিয়ে নিজাম উদ্দিনকে পাননি। যা পরিদর্শন বুকেও লেখা রয়েছে। অতিসত্বর পার্কে পুরুষ জিরাফ আমদানি করা হবে। তবে আশার কথা হলো পার্কের আরো দু-একটি জিরাফ গর্ভধারণ করেছে। তাদের থেকেও পুরুষ জিরাফ জন্ম নিতে পারে।

এ ব্যাপারে নিজাম উদ্দিন জানান, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সঠিক নয়। তিনি সব সময় পার্কে অবস্থান নিয়ে পশু-পাখিকে নিয়মিত চিকিৎসা সেবা দেন। তবে পার্কে তার বিরুদ্ধে কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারি সর্বদা মিথ্যা অভিযোগ ও ষড়যন্ত্রের কাজে লিপ্ত রয়েছেন বলেও জানান।

কোন মন্তব্য নেই