বঙ্গবন্ধু টানেলের বোরিং ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কার্যক্রম উদ্বোধন - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

বঙ্গবন্ধু টানেলের বোরিং ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কার্যক্রম উদ্বোধন



কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে স্বপ্নের টানেল হচ্ছে। ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশের ইতিহাসে তো বটেই দক্ষিণ এশিয়ায় এ প্রথমবারের মতো নির্মিতব্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল বোরিং কার্যক্রম উদ্বোধনের মহামঞ্চও প্রস্তুত। একইভাবে ৩ হাজার ২৫০ কোটি টাকার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ কার্যক্রম উদ্বোধনের মঞ্চও প্রস্তুত।
উন্নয়ন ও অগ্রগতির মহাযাত্রায় চট্টগ্রামকে শিখরে শামিল করার জন্য দুই বড় প্রকল্পের উদ্বোধন হবে প্রধানমন্ত্রীর হাতের ছোঁয়ায়। নেভাল একাডেমি পয়েন্টে দুই প্রকল্পের ফলকের উপরে থাকা কাপড় সরিয়ে টানেল ও এক্সপ্রেসওয়ে যুগে প্রবেশের মাহেদ্রক্ষণ উপস্থিত। ঘড়ির কাটার দিকে দেখছেন প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত এমপি মন্ত্রী ও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্টরা। নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা। আসলেন প্রধানমন্ত্রী। ঘড়ির কাটা ঠিক ১১টা ২ মিনিটে।
প্রথমে টানেল নির্মাণের কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন। এর আগে খানিকটা দেখে নিলেন উদ্বোধন স্থলে রাখা টানেলের ডামি। ৪ মিনিট দাঁড়ালেন সেখানে। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা টানেলের বিস্তারিত অবহিত করলেন প্রধানমন্ত্রীকে।
এরপর ১১ টা ৭ মিনিটে অগ্রযাত্রার সেই টানেল উদ্বোধন করলেন ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে। উদ্বোধন শেষে মোনাজাত পরিচালনা করা হয়। এতে দেশের উন্নয়ন অগ্রগতিতে প্রধানমন্ত্রীর নিবেদিত প্রচেষ্টার কথা স্মরণ করে দোয়া কামনার পাশাপাশি ঢাকার চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের জন্য বিশেষ দোয়া করা হয়।
তথ্য অনুযায়ী, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ৯ হাজার ৮৮০ কোটি টাকায় ৩ হাজার ৫ মিটার দীর্ঘ এ টানেল নির্মিত হচ্ছে। টানেলটি নেভাল একাডেমি পয়েন্ট থেকে শুরু হয়ে কাফকো ও সিইউএফএল পয়েন্টের মাঝখান দিয়ে অপর প্রান্তে যাবে। নদীর তলদেশে সর্বনিম্ন ৩৬ ফুট থেকে সর্বোচ্চ ১০৮ ফুট গভীরে স্থাপন করা হবে দুটি টিউব। ২০২২ সালের মধ্যে এ টানেলটির নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা। এ প্রসঙ্গে অনুষ্ঠানস্থলে টানেলের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী হারুনুর রশিদ জানান, ২০২২ সালের ডিসেম্বর নাগাদ প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হবে বলে আমরা আশা করছি।
এ প্রকল্প বিশ্বের চোখ খুলে দেবে বাংলাদেশের দিকে তাকাতে। একইসাথে উন্নয়ন অগ্রগতি ও বাণিজ্যের মহাসোপানের সাথে চট্টগ্রামকে যুক্ত করবে এ টানেল।
এদিকে নগরের লালখান বাজার থেকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের মূল নির্মাণ কাজেরও উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বেলা ১১টা ১৫ মিনিটে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় এ কাজের ফলক উন্মোচন করেন তিনি। দুই প্রকল্পের উদ্বোধন স্থলের দূরত্ব ২০ গজের মধ্যেই। গতকাল রোববার সকালে এ দুই প্রকল্পের কার্যক্রম শুরুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিমানবন্দর থেকে সকালে সরাসরি তিনি পতেঙ্গার সাগর পাড়ে সভামঞ্চে পৌঁছেন। প্রায় সাড়ে ৩ হাজার ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪ লেনের ১৬ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এঙপ্রেসওয়েটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এ সময় তিনি খননকাজ শুরুর দৃশ্য সরাসরি প্রত্যক্ষ করেন।
দুই প্রকল্প উদ্বোধনের আগে অনুষ্ঠানস্থলে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত হন সড়ক যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি, সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি, মুুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, ভূমি মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপি, পূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, তথ্য মন্ত্রী হাছান মাহমুদ এমপি, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, উপ নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, হুইপ শামসুল হক এমপি, রেল মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ফজলে করিম চৌধুরী এমপি, ওয়াসিকা আয়শা এমপি, সিনিয়র সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, সিডিএ’র চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, আওয়ামী লীগ নেতা মোছলেম উদ্দিন আহমদ, আমিনুল ইসলাম আমিন, মুফিজুর রহমান, আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক শামসুন্নাহার চাঁপা, উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-প্রচার ও কেন্দ্রীয় সদস্য মারুফা আকতার পপি, পারভীন জামান কল্পনা প্রমুখ।
এদিকে উদ্বোধনস্থলে পৌঁছার সাথে সাথে সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপিসহ অন্যান্যরা এগিয়ে এসে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।
এঙপ্রেসওয়ের কার্যক্রম উদ্বোধনের জন্য ফলক উন্মোচন করতে গিয়েই প্রধানমন্ত্রী সিডিএ’র চেয়ারম্যানকে খোঁজেন। এসময় তিনি একপাশে দাঁড়িয়ে থাকলেও ভালভাবে দেখা যাচ্ছিল না।


প্রধানমন্ত্রী এসময় বলেন, ছালাম কোথায়? এদিকে আস। এরপর প্রধানমন্ত্রী সিডিএ’র চেয়ারম্যানকে তাঁর পাশে দাঁড় করিয়ে ফলক উন্মোচন করেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী পাশে পতেঙ্গা বেড়িবাঁধ এলাকায় আয়োজিত সুধী সমাবেশে যোগ দেন।
অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে আশপাশের এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়। এতে প্রত্যেক শৃংখলা বাহিনীর সদস্য এবং গোয়েন্দা এজেন্সির লোকজন দায়িত্ব পালন করেন।

কোন মন্তব্য নেই