আটকে গেল বালিশ তোলার বিল - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

আটকে গেল বালিশ তোলার বিল

 রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে আসবাবপত্রসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক পণ্য কেনার দায়িত্ব পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সব আটকে গেল। গত কয়েক দিন ধরে দেশের বেশিরভাগ গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই প্রকল্পের দুর্নীতি নিয়ে বেশ বিতর্ক চলছে।



২০ মে, রবিবার মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. ইফতেখার হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।

ইতোমধ্যে বালিশ হাতে নিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ করেছে গণঐক্য ও নাগরিক পরিষদ নামে দুটি সংগঠন। এমন বিতর্ক ও বিক্ষোভের পর ওই কাজের দায়িত্ব পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সব বিল আটকে দিয়েছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় গণপূর্ত অধিদফতরের নির্মাণাধীন ছয়টি ভবনে আসবাবপত্রসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজের জন্য ছয়টি প্যাকেজে ই-জিপিতে দরপত্র আহ্বান করা হয়। প্যাকেজগুলোর প্রতিটির ক্রয়মূল্য ৩০ কোটি টাকার নিচে প্রাক্কলন করায় গণপূর্ত অধিদফতর থেকে অনুমোদন দেওয়া হয় ও ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়। এ ক্ষেত্রে দাফতরিক প্রাক্কলন প্রণয়ন, অনুমোদন ও ঠিকাদার নিয়োগে মন্ত্রণালয়ের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এর জের ধরে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে একজন অতিরিক্ত সচিব এবং গণপূর্ত অধিদফতর থেকে একজন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর নেতৃত্বে আলাদা দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সব পেমেন্ট বন্ধ রাখার জন্য গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় হতে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।


ওই কাজের বিপরীতে এখনও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে বিল পরিশোধ করা হয়নি। তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুযায়ী বাজারমূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে বিল পরিশোধের বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে।

এদিকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের দুর্নীতি ঘটনায় গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দেখতে চেয়েছে হাইকোর্ট। এ জন্য সোমবার গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে গঠিত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।



এই প্রকল্পের আওতায় মূল প্রকল্প এলাকার বাইরে হচ্ছে গ্রিন সিটি আবাসন পল্লী। সেখানে বিদ্যুৎকেন্দ্রেটির কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের থাকার জন্য ১১টি ২০তলা ও ৮টি ১৬তলা ভবন করা হচ্ছে।

ইতোমধ্যে ২০তলা ৮টি ভবন ও ১৬তলা একটি ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। এই ৯টি ভবনে তৈরি হয়েছে ৯৬৬টি ফ্ল্যাট। সেই ৯৬৬টি ফ্ল্যাটের জন্য আসবাবপত্র কিনেছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। এর মধ্যে ২০তলা একটি ভবনের ১১০টি ফ্ল্যাটের আসবাবপত্র কেনা ও তা ভবনে ওঠাতে সব মিলে ব্যয় দেখানো হয়েছে ২৫ কোটি ৬৯ লাখ ৯২ হাজার ২৯২ টাকা।

একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী, এসব ভবনের জন্য এক হাজার ৩২০টি বালিশ কেনা হয়েছে। এদের প্রতিটির মূল্য দেখানো হয়েছে ৫ হাজার ৯৫৭ টাকা। আর সেই প্রতিটি বালিশ নিচ থেকে ভবনের ওপরে তুলতে খরচ দেখানো হয়েছে ৭৬০ টাকা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, শুধু বালিশের বিষয়েই নয় প্রকল্পের আসবাবপত্র কেনার নথিপত্র পর্যালোচনা করে আসবাবপত্র কেনা ও ফ্ল্যাটে তোলার ব্যয়ে অসঙ্গতি পাওয়া গেছে। সরকারি আসবাবপত্র ক্রয়ের ক্ষেত্রে অর্থ ব্যয়ের এমন অসঙ্গতির ঘটনা ঘটিয়েছেন গণপূর্ত অধিদফতরের পাবনা জেলার পূর্ত বিভাগের কর্মকর্তারা।

ওই ১১০টি ফ্ল্যাটের জন্য কেনা টিভি, ফ্রিজ ওয়াশিং মেশিন ও মাইক্রোওয়েভ কেনা হয়েছে। সেসব আসবাবের ক্রয়মূল্য ও সেগুলোকে ফ্ল্যাটে তুলতে যে ব্যয় দেখানো হয়েছে তা রীতিমতো অস্বাভাবিক।



সূত্র: যুগান্তর

কোন মন্তব্য নেই