আবু সালেহর ক্যান্সারের ওষুধে ব্যাপক সাড়া - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

আবু সালেহর ক্যান্সারের ওষুধে ব্যাপক সাড়া

আবু সালেহর আবিষ্কৃত ক্যান্সারের ওষুধে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। ইতোমধ্যে কয়েকজন রোগী সুস্থ হয়েছেন বলে তিনি দাবি করেছেন। আরো কয়েকজন ওষুধ সেবন করছেন। নির্দিষ্ট সময় পর তাদের ডায়াগনোসিস করা হবে। চলতি বছরের ৬ জুলাই নয়া দিগন্তে এ-সংক্রান্ত একটি খবর প্রকাশ হওয়ার পর দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ক্যান্সার আক্রান্তদের আত্মীয়-স্বজন আবু সালেহর সাথে যোগাযোগ করে ওষুধ নিয়ে সেবন করছেন।

আবু সালেহ জানান, ওষুধটি বাস্তবে কার্যকর কি না তা দেখার জন্য কিছু মানুষকে ওষুধ দিয়েছেন। তিনি চান, এ ব্যাপারে তাকে সরকার সহায়তা করুক। তিনি বলেন, ‘আমি চাই এ ওষুধটির ওপর সরকারি পর্যায় থেকে আরো গবেষণা হোক এবং আধুনিক ডোজেজ পদ্ধতি বের করা হোক।’

এ জন্য তিনি সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে যোগাযোগও করেছেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে আবেদনও করেছেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তার আবেদনে সাড়া দিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরে পাঠিয়েছে পরামর্শের জন্য। এর মধ্যে অ্যান্টি ক্যান্সারের উপাদান আছে কি না ইতোমধ্যে সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে তা পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষা শেষে সায়েন্স ল্যাব তার আবিষ্কৃত ওষুধের প্রতি মিলিলিটারে ৫.৭৩ মাইক্রোগ্রাম অ্যান্টি ক্যান্সার প্রোপার্টি আছে বলে লিখিতভাবে জানিয়েছে। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও যোগাযোগ করেছেন ওষুধটি নিয়ে আরো আধুনিক গবেষণা করা যায় কি না।

আবু সালেহ তার আবিষ্কৃত ওষুধটি সম্পর্কে বলেন, দেড় যুগেরও বেশি সময় গবেষণায় অ্যান্টি ক্যান্সার ওষুধটি উদ্ভাবন করতে পেরেছি। এ ওষুধটি মূলত জিনগত অস্বাভাবিকতাকেই টার্গেট করে। ফলে সব ধরনের ক্যান্সারের ক্ষেত্রেই ওষুধটি কার্যকর। একটি মাত্র ওষুধের মাধ্যমে সব ধরনের ক্যান্সার নিরাময় হয় বলে এর সুবিধা অনেক।

এ ছাড়া উদ্ভাবিত ওষুধটির আরো একটি চমৎকার দিক হলো, ‘এটি শুধু আক্রান্ত কোষগুলোকেই টার্গেট করে’। ফলে রোগী দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে। কোনো রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই ওষুধটির।

আবু সালেহ বলেন, আমার আবিষ্কৃত এ ওষুধের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। পরীক্ষার জন্য আমি তাদেরই বেছে নিয়েছি চিকিৎসকরা যাদের বলে দিয়েছেন, ‘আর কিছু করার নেই’। গত জুলাই থেকে এ পর্যন্ত ছয়জন রোগী বেছে নিয়েছি।

এদের একজন পাকস্থলীর ক্যান্সারে (অ্যাডিনোকারসিনোমা অব গ্রেড-থ্রি), একজন ব্রেস্ট ক্যান্সারে (ডাক্ট সেল কারসিনোমা অব গ্রেড-টু) এবং তৃতীয় রোগী রেক্টাম ক্যান্সারে (পেপিলারি অ্যাডিনোকারসিনোমা অব গ্রেড-ওয়ান) আক্রান্ত। পাকস্থলীর ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীটি তিন মাস ১২ দিনে শত ভাগ ক্যান্সার মুক্ত হন। ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত চার মাস এবং রেক্টাম ক্যান্সার আক্রান্ত চার মাস পর সুস্থ জীবন যাপন করছেন।

আবু সালেহ বলেন, সাধারণত চার থেকে ছয় মাসের মধ্যেই রোগী শত ভাগ ক্যান্সার মুক্ত হন। তবে কেমোথেরাপি নেয়ার পর কোনো রোগী এই চিকিৎসার আওতায় এলে তখন আট থেকে ১০ মাস ওষুধ গ্রহণ করতে হয়। উদ্ভাবিত ওষুধটি প্রথমেই কেমো বা রেডিও থেরাপির রেডিয়েশন মুক্ত করে তারপর দ্বিতীয় ধাপে ক্যান্সার কোষগুলোকে ধ্বংস করতে শুরু করে।

আবু সালেহ বলেন, ‘চলতি বছরের ৬ জুলাই নয়া দিগন্তে এ-সংক্রান্ত খবর প্রকাশের পর অনেকেই যোগাযোগ করেন এবং তাদের মধ্য থেকে জটিল তিনজন ক্যান্সার আক্রান্ত নির্বাচন করি। এদের একজন রেক্টাম ক্যান্সার (অ্যাডেনোকারসিনোমা অব গ্রেড-ফোর) আক্রান্ত রোগী। ভারতের টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে দীর্ঘ দিন চিকিৎসা নিয়েছেন। রোগের অবনতি হওয়ায় তাকে বাড়ি নিয়ে যেতে বলেন চিকিৎসকরা। নয়া দিগন্তে খবর প্রকাশের পর তারা আমার সাথে যোগাযোগ করেন। আমার ওষুধ সেবনের আগে রোগীর ১০৩-১০৪ ডিগ্রি জ্বর থাকত সব সময়। আক্রান্ত স্থানে কীট জন্মে গিয়েছিল। আক্রান্ত স্থানের ঘা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছিল। ওষুধ গ্রহণের ১৫ দিনের মধ্যে রোগীর জ্বর সেরে যায়। আক্রান্ত স্থানের কীট মরে যায়, ঘা বৃদ্ধি বন্ধ হয় এবং শারীরিক অস্বস্তি ও জ্বালাপোড়া কমে যায়। প্রায় তিন মাস ধরে ওষুধ চলছে। আরো দুই মাস পর রোগীর ডায়াগনোসিস করানো হবে।’

নয়া দিগন্তে খবর প্রকাশের পর এই রোগীর অভিভাবকের সাথে এই প্রতিবেদকের দু’বার কথা হয়েছে। তিনি বলেছেন, তাদের রোগীর অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। তাদের বাড়ি বৃহত্তর ফরিদপুর জেলায়।

আবু সালেহ জানান, ‘দ্বিতীয় রোগী বেছে নিয়েছেন সিলেট অঞ্চলের ব্লাড ক্যান্সার (মাল্টিপল মাইওলোমা) আক্রান্ত একজনকে। চিকিৎসা শুরুর আগে রোগীর শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা ছিল। দিন দিন হাড় ভঙ্গুর হয়ে যাচ্ছিল ও ব্যথার তীব্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছিল। ওষুধ গ্রহণের ১৫ দিনের মধ্যে রোগীর হাড়ের ব্যথা বহুলাংশে কমে যায় এবং রোগী উত্তরোত্তর স্বস্তি পাচ্ছেন। এই রোগী দেড় মাস যাবৎ চিকিৎসা নিচ্ছেন, তিন মাস পর রোগীর ডায়াগনোসিস করানো হবে।’

এই রোগীর ছেলের সাথে নয়া দিগন্তের এই প্রতিনিধির দু’বার কথা হয়েছে। রোগীর ছেলে জানান, তার মা আগের চেয়ে অনেক সুস্থ।

আবু সালেহর সাথে প্রয়োজনে যোগাযোগ করা যাবে ০১৯৭৩৯৩৭৭২৭ এই নাম্বারে।

কোন মন্তব্য নেই