মর্গ থেকে ভেসে আসে হাতুড়ি পেটানোর শব্দ - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

মর্গ থেকে ভেসে আসে হাতুড়ি পেটানোর শব্দ



ধরুন আপনি কোন একটি হাসপাতালের মর্গের সামনে দিয়ে হেটে যাচ্ছেন তখন যদি মর্গের ভেতর থেকে হাতুড়ি পেটানোর শব্দ শুনতে পান তখন আপনার কেমন লাগবে? নিশ্চই ব্যাপারটা আপনার কাছে ভৌতিক মনে হবে। প্রতিনিয়ত এমন হাতুড়ি পেটানোর শব্দই ভেসে আসে যশোরের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গ থেকে। কিন্তু ব্যাপারটা ভৌতিক নয়, মর্গে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে মরদেহর মাথা ভাঙা হয়। করা হয় ময়নাতদন্ত। আশপাশের লোকজনের কাছে শব্দ সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা বলে, মর্গে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে মরদেহের মাথা ভাঙা হচ্ছে। এমন শব্দ প্রায়ই হয়।

এছাড়া মাঝে মাঝে মরিচা ধরা ছেনি দিয়েও মাথার খুলি খোলা হয়। ময়নাতদন্ত কাজে ব্যবহৃত ছুরিগুলোও ভোতা। দেখলে মনে হবে তাতে দীর্ঘদিন শান দেয়া হয়নি। আধুনিক কোনো যন্ত্রপাতি না থাকায় এভাবেই মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, গত বছর আধুনিক যন্ত্রপাতির চাহিদাপত্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। কিন্তু এখনো সাড়া মেলেনি।

তবে জানা গেছে, যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে রোগীর চিকিৎসাসেবা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা হয়েছে। বাদ দেয়া হয়েছে মান্ধাতার আমলের সকল যন্ত্রপাতি। বর্তমানে চলছে ডিজিটাল মেশিনে কার্যক্রম। কিন্তু হাসপাতাল মর্গের দিকে কর্তৃপক্ষের নজর নেই। তাছাড়া মর্গে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় মরদেহ টেবিল ও ফ্লোরে রাখা হয়। মর্গে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালনের জন্য কোনো স্টাফ বা লোকবলও নেই। অথচ জেলা বা উপজেলায় হত্যা বা রহস্যজনক মৃত্যু হলে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ পাঠানো হয় এই মর্গে।

হাসপাতালের প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসে (১৭ নভেম্বর পর্যন্ত) এই মর্গে অর্ধশতাধিক লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক জানান, নামেই এখানে মর্গ। কোনো ধরনের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নেই। অনেক পুরাতন যন্ত্রপাতি দিয়ে কাজ করতে হয়। লাশ সংরক্ষণ করার ফ্রিজটিও মাসের পার মাস অকেজো হয়ে আছে। এক কথায় হাসপাতাল মর্গের দিকে কর্তৃপক্ষের খেয়াল নেই। মরদেহ কাটার কাজে নিয়োজিত লক্ষণ জানান, মর্গে যন্ত্রপাতির বেহাল অবস্থা। ফলে গায়ের জোরে মরদেহ কাটতে হয়। তাছাড়া মর্গের ভেতর পানির ট্যাবগুলোও নষ্ট।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবুল কালাম আজাদ লিটু বলেন, আগে হাসপাতাল মর্গে নানা সমস্যা ছিল। এখন সেখানে কয়েকটি নতুন এসি লাগানো হয়েছে। মর্গের অবকাঠামোও উন্নত হয়েছে। তবে ময়নাতদন্তে ব্যবহৃত আধুনিক যন্ত্রপাতির চাহিদাপত্র স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এখন শুধু অনুমোদনের অপেক্ষা।

কোন মন্তব্য নেই