মহাসড়কে আমের বাজার, জনদুর্ভোগ চরমে
উত্তরাঞ্চলের সর্ববৃহৎ আমের মোকাম পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর বাজারের ইউনিয়ন ভূমি অফিসের মাঠে। বর্তমানে বাজারে ব্যাপক আম আসায় ওই স্থানে সংকুলান হচ্ছে না। যার কারণে অনেকেই ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের উপর আম বেচা-কেনা করছেন। এতে করে দিনের বেশিরভাগ সময় প্রায় এক কিলোমিটার মহাসড়ক জুড়ে ভয়াবহ যানজট লেগে থাকে। যানবাহন চালক ও পথচারীদের অভিযোগ, স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ও বাজার কমিটির গাফিলতির কারণে আমের মৌসুম এলেই মহাসড়কে জনদুর্ভোগ দেখা দেয়।
সোমবার দুপুরে বানেশ্বর আম বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ভূমি অফিসের পশ্চিম পাশ থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের উপর আমের বেচা-কেনা চলছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে বেচা-কেনা চলে বিকেল পর্যন্ত। সড়কের উপর আম বেচা-কেনা হওয়ায় রাজশাহীতে আগত ও ছেড়ে যাওয়া দুরপাল্লার যানবাহন, অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস ও সাধারণ পথচারীদের আমের বাজারের আধা কিলোমিটার পার হতে কখনো এক ঘণ্টা লেগে যায়। ওই এলাকায় ট্রাফিক ও হাইওয়ে পুলিশের লোকজন রয়েছে কেবল নামমাত্র। বাজার কমিটির সাথে চুক্তি থাকায় তারা সড়কের উপর আমের বেচা-কেনা বন্ধের কোনো পদক্ষেপ দিচ্ছেন না।
সড়কের উপর আম বিক্রেতারা জানান, হাট কমিটির লোকজনের নির্দেশে তারা মহাসড়কের পাশে আম বিক্রি করতে দাঁড়িয়েছেন। তবে সড়কের পাশে দাঁড়ানোর কারণে মাঝে মধ্যে বিভিন্ন যানবাহন স্টাফদের সাথে তাদের বাকবিতণ্ডা লেগেই থাকে।
তারা আরো জানান, মহাসড়কের যানজট নিরসন না করে পুলিশের লোকজন প্রতিদিন বাজারে আম নিয়ে আসা বিভিন্ন নসিমন, করিমন ও ট্রাক চালকদের কাছ থেকে চাঁদা নিয়ে থাকে।
বানেশ্বর বাজার ব্যবসায়ীরা বলেন, আমের বাজার মূলত ইউনিয়ন ভূমি অফিসের মাঠে বসার কথা। কিন্তু সেখানে আমের তুলনায় জায়গা অনেক কম। যার কারণে ক্রেতা-বিক্রেতারা মহাসড়কের পাশে কেনা-বেচা করছেন। এতে করে ক্রেতা-বিক্রেতাদের পাশাপাশি সড়কের যানবাহন ও পথচারীরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। বিষয়টি স্থানীয় ব্যবসায়ীরা হাট ইজারদার ও উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করলেও কোনো সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।
বানেশ্বর হাট ইজারদার ওসমান আলী বলেন, আমের এই কয়দিন মহাসড়কে একটু উনিশ-বিশ হবেই। তবে যানজট নিরসন করতে পুলিশের পাশাপশি আমাদের লোকজন কাজ করছে।
এ বিষয়ে পবা হাইওয়ে পুলিশ (শিবপুরহাট ফাড়ি) ইনচার্জ ও উপ-পরিদর্শক কাজল কুমার নন্দি বলেন, আম বাজারে থানা ও ট্রফিক পুলিশের পাশাপাশি হাইওয়ে পুলিশ দ্বায়িত্ব পালন করছেন। সেখানে আমাদের লোকজনের কোনো যানবাহনে চাঁদা নেয়ার সুযোগ নেই। তবে আর কেউ নিচ্ছে কিনা সেটা আমার জানা নেই।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওলিউজ্জামান বলেন, মহাসড়ক যানজট মুক্ত রাখতে হাইওয়ে ও থানা পুলিশকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অপরদিকে হাট কমিটির লোকজনকে বলা হয়েছে, তাদের কিছু লোক দিয়ে যানজট মুক্ত কাজে সহায়তা করার জন্য।
কোন মন্তব্য নেই