বাজার মূলধনের শীর্ষ ৪-এ ওয়ালটন - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

বাজার মূলধনের শীর্ষ ৪-এ ওয়ালটন




পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে লেনদেন শুরুর প্রথম দিন থেকে বাজিমাত করেছে ওয়ালটন। প্রযুক্তি পণ‌্য উৎপাদনের মাধ‌্যমে দেশে-বিদেশের মানুষের মন জয় করার পর এবার প্রতিষ্ঠানটি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জন করেছে।


বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের কারণে কোম্পানির শেয়ার পরপর দুই দিন সর্বোচ্চ দরে বেচা-কেনা হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধনে। ডিএসইতে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে বাজার মূলধনের তালিকায় চতুর্থ স্থান দখল করেছে ওয়ালটন।


উল্লেখ্য, একটি কোম্পানির বাজার মূলধন দেখে তার ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাগুলো উপলব্ধি করা যায়। যার ওপর ভিত্তি করে ওই কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বিনিয়োগকারীরা।


বাজার পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার প্রথম দিন বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সর্বোচ্চ ৩৭৮ টাকায় লেনদেন হয়েছে। ওই দিন কোম্পানির বাজার মূলধন দাঁড়ায় ১১ হাজার ৪৫০ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সর্বোচ্চ ৫৬৭ টাকায় কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়। এতে কোম্পানির বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ১৭৬ কোটি টাকা। এর ফলে দীর্ঘদিন বাজারে মূলধন বিবেচনায় নেতৃত্বের শীর্ষ তালিকায় থাকা ইউনাইটেড পাওয়ার ও রেনাটাকে পেছনে ফেলেছে ওয়ালটন।


এদিকে, বর্তমানে দেশের পুঁজিবাজারে গ্রামীণফোন বাজার মূলধনে নেতৃত্ব দিচ্ছে। কোম্পানির শেয়ার সর্বশেষ ৩৩২ টাকা ৫০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। ফলে কোম্পানির বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৪৪ হাজার ৮৯৭ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।


দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব‌্যাকো লিমিটেড। কোম্পানির শেয়ার সর্বশেষ ১ হাজার ১২৮ টাকায় লেনদেন হয়েছে। সে অনুযায়ী কোম্পানির বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার ৩০৪ কোটি টাকা।


তৃতীয় অবস্থানে আছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। কোম্পানির সর্বশেষ শেয়ার ২০৬ টাকা ৩০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। কোম্পানির বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৪১৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।


চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। গত তিন মাস ধরে বাজার মূলধনের দিক দিয়ে ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড ডিস্টিবিউশন কোম্পানি চতুর্থ অবস্থান ধরে রেখেছিল।

কোম্পানির শেয়ার সর্বশেষ ২৯৭ টাকায় লেনদেন হয়েছে। কোম্পানির বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৬৫১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। তবে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির পর ওয়ালটনের বাজার মূলধন বেড়ে যাওয়ায় ইউনাইটেড পাওয়ার পঞ্চম স্থানে নেমে গেছে।


সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোনো কোম্পানির মধ্যে যদি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা এবং সুশাসন থাকে তাহলে ওই প্রতিষ্ঠান ভালো মুনাফা করে। ভালো মুনাফা করলে শেয়ারহোল্ডাররা বেশি লভ্যাংশ প্রত্যাশা করে। ওই কোম্পানিও বিনিয়োগকারীদের প্রত্যশা পূরণে এগিয়ে আসতে পারে। বিনিয়োগের মাধ্যমে ওই কোম্পানি থেকে ডিভিডেন্ড গেইন করতে পারেন বিনিয়োগকারীরা। এছাড়া, ভালো মৌল ভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানি থেকে ক্যাপিটাল গেইন করাও সম্ভব। ওয়ালটন স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসন নিশ্চিত করে দেশে-বিদেশে ব্যবসা সম্প্রসারণ করছে। দেশীয় এ কোম্পানি সম্পর্কে বিনিয়োগকারীরা ভালো ধারণা পোষণ করেন, তাই এর শেয়ারে আগ্রহ বেশি। এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে পুঁজিবাজারে।


পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবু আহমেদ রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘সার্বিক দিক বিবেচনায় ওয়ালটনের শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ অনেক বেশি। এ কারণে যেসব বিনিয়োগকারী আইপিওতে শেয়ার পাননি, তারা সেকেন্ডারি মার্কেটে ওয়ালটনের শেয়ার কিনতে চেষ্টা করছেন। ফলে শেয়ার বৃদ্ধির শীর্ষে থাকায় বাজার মূলধনের শীর্ষ তালিকায় স্থান পেয়েছে ওয়ালটন।’


বিনিয়োগকারীদের মতে, ওয়ালটনের পণ্য দেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে। দেশীয় এ প্রতিষ্ঠানটি পুঁজিবাজারে আসবে বলে বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘ অপেক্ষায় ছিলেন। অবশেষে অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে পুঁজিবাজারে এসেছে ওয়ালটন। এ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের আইপিওর চাঁদা গ্রহণ করোনাকালে হলেও চাহিদার চেয়ে সাড়ে ৯.৫৫ গুণের বেশি আবেদন জমা পড়েছে। কিছু শেয়ার সর্বোচ্চ দরে লেনদেন হয়ে পরপর দুই দিনই সার্কিট ব্রেকার স্পর্শ করে হল্টেড হয়েছে। সর্বশেষ কোম্পানির শেয়ার সর্বোচ্চ ৫৭৮ টাকায় লেনদেন হয়েছে।


এ সম্পর্কে পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কাজী আব্দুর রাজ্জাক রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘বিনিয়োগকারীদের আস্থা থাকায় ওয়ালটনের শেয়ার সর্বোচ্চ মূল্যে পাওয়ার চেষ্টা করছেন বিনিয়োগকারীরা। আশা করছি, ওয়ালটন বিনিয়োগকারীদের স্বার্থকে প্রাধান্য দেবে। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে ওয়ালটন গ্রুপের অন্য কোম্পানিও বাজারে তালিকাভুক্ত হবে বলে প্রত্যাশা করি।’



কোন মন্তব্য নেই