পদ্মা সেতুর প্রায় ৫ কিলোমিটার দৃশ্যমান
রোববার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ৩২তম স্প্যান বসানোর কার্যক্রম শুরু হয়। এক ঘণ্টা চেষ্টার পর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে খুঁটির ওপর স্প্যান বসানোর কাজ শেষ হয়। এর আগে এই প্রান্তে দুটি স্প্যান বসানো হয়েছিল। এতে করে মোট স্প্যান দৃশ্যমান এখন তিনটি।
এর আগে শনিবার দুপুর ১-৩০ টার দিকে ধূসর রঙের ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের তিন হাজার ১৪০ টন ওজনের স্প্যানটি মাওয়া কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে তিন হাজার ৬০০ টন ধারণক্ষমতার 'তিয়ান ই' ভাসমান ক্রেনে করে রওনা দেয়।
নির্ধারিত পিলারের কাছে পৌঁছায় দুপুর ২টার দিকে। আড়াই ঘণ্টা চেষ্টার পর বিকাল সাড়ে ৪টার দিকেও খুঁটির ওপর স্প্যান বসানো কোনো প্রকার সম্ভব হয়নি। পরে পদ্মায় প্রবল স্রোতের কারণে স্প্যান বসানোর কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়।
জানা গেছে,
গত আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে পাঁচটি স্প্যান খুঁটির ওপর বসানোর লক্ষ্য ছিল। তবে মাওয়া প্রান্তের মূল পদ্মায় প্রচন্ড স্রোত থাকায় একটি স্প্যানও বসানো সম্ভব হয়নি। এখন পদ্মায় বন্যার পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্রোতের তীব্রতাও স্বাভাবিক গতিতে ফিরেছে। ফলে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজেও গতি ফিরেছে।
সবশেষ গত ১০ জুন জাজিরা প্রান্তে ৩১তম স্প্যানটি বসানো হয়েছিল। এরপর ২৪ জুন ৩২তম স্প্যানটি বসানোর কথা থাকলেও নদীতে তীব্র স্রোতের কারণে স্প্যান বসানোর কাজ অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়। ৩১তম স্প্যান বসানোর চার মাস পর এই স্প্যানটি বসানো হলো।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের দ্বিতল পদ্মা সেতুতে মোট ৪২টি খুঁটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে মাওয়া প্রান্তে ২১টি ও জাজিরা প্রান্তে ২১টি। আর ৪২টি খুঁটির ওপর বসবে ৪১টি স্প্যান।
উলেস্নখ্য, ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করা হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যানটি বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে বসানো হলো ৩২টি স্প্যান। প্রতিটি স্পেনের দৈর্ঘ্য ১৫০ মিটার। ৪২টি পিলারের ওপর ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে সবকটি পিলার এরই মধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে।
মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড। বহুমুখী এই সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এই সেতুর কাঠামো।
কোন মন্তব্য নেই