বাংলাদেশীসহ বিদেশীদের জন্য দরজা খুলছে ভারত, তবে শর্তসাপেক্ষে
ভারতের দরজা আবার খুলে দেওয়া হচ্ছে বিদেশিদের জন্য। তবে যারা ব্যবসায়িক কাজে যাবেন তাদের জন্য। পর্যটকদের জন্য এখনই নয়। করোনা সংক্রমণ কিছুটা কমতে থাকায় এ সিদ্ধান্ত নিলেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
বৃহস্পতিবার দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যেহেতু বাণিজ্যিক বিমান চলাচল সীমিতই থাকবে, সেহেতু বিদেশিরা সরকারি উদ্যোগে চালু করা এয়ার বাবলের মাধ্যমে ভারতে আসতে পারবেন। আর পারবেন ব্যক্তিগত বিমানে যেতে।
করোনা শুরুর দিকে যে বিমানে শুধু ভারতীয়দের দেশে আনা হচ্ছিল, সেটিতেই এখন বিদেশিদের ভারতে যাওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। এটিকেই এয়ার বাবল বলা হচ্ছে।
বাংলাদশে থেকে ভ্রমনের ক্ষেত্রে যাদের আগে ভিসা নেওয়া ছিল তারা সবাই ভারতে যেতে পারবেন। তবে মেডিকেল ও ট্যুরিস্ট ভিসা এই সুবিধার আওতায় পড়বে না।
তবে তাদের করোনার নেগেটিভ রিপোর্ট সঙ্গে নিতে হবে। ঢাকা থেকে চেন্নাই যেতে হলে টিএন রেজিস্টার করতে হবে। সেজন্য ওয়েবসাইটের ঠিকানা ভারতীয় দূতাবাস থেকে দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে দেওয়া আছে। যে তারিখে ভারতে যেতে ইচ্ছুক তার অন্তত ৭২ ঘন্টা আগে ভারতের এয়ারসুবিধার ওয়েব সাইটে একটি সেলফ রিপোর্টিং ফরম পূরণ করে জমা দিতে হবে। তা বাদেও ওখানে যাওয়ার পর ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকার অঙ্গীকার দিতে হবে ওই ফর্মে।
এর মধ্যে সাতদিন সরকারি ব্যবস্থাপনায় বাকি সাতদিন নিজ ব্যবস্থাপনায় কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে ভারতে যাওয়ার পর।
করোনা মহামারির দ্বিতীয় সর্বাধিক বিস্তার ঘটেছে ভারতে। গত মাসে দৈনিক গড়ে সংক্রমণ শনাক্ত হচ্ছিল এক লাখ। সংখ্যাটি এ মাসে কমে ৫৫ হাজারে নেমে আসার পরই ভারত সরকার বিদেশিদের সে দেশে আসতে দেওয়ার বিষয়ে এসব সিদ্ধান্ত নিলো। তবে যারাই যাবে তাদের করোনাকালের জন্য জারিকৃত স্বাস্থ্যবিধিসমূহ কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে বলে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা অবশ্য সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছে নতুন করে সংক্রমণ আবার বাড়তে পারে এবং ফেব্রুয়ারির আগে হয়তো তা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। এদিকে সরকারের সমালোচকেরা বলছে, পর্যাপ্ত সংখ্যক টেস্ট না করানোর কারণেই সংক্রমণ কম শনাক্ত হচ্ছে।
সরকারি আদেশে বলা হয়েছে, ইলেক্ট্রনিক, ট্যুরিস্ট এবং মেডিকেল ভিসা বাদে বাকি ভিসাসমূহের কার্যক্রম শিগগিরই শুরু হতে যাচ্ছে। তবে এখন যাদের ভিসা নেওয়া ছিল কিন্তু মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে তারা ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। এছাড়া ব্যবসা, বৈঠক, কাজ, শিক্ষা, গবেষণা ও চিকিৎসার প্রয়োজনে বিদেশিরা ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবে।
তবে মহামারির মধ্যে ভারতই শুধু বিদেশিদের যাওয়ার সুযোগ দিচ্ছে তা না। ইন্দোনেশিয়ার অবস্থা পূর্ব এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে খারাপ হওয়া সত্ত্বেও বিদেশিদের আসতে দেওয়ার কথা ভাবছে বলে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন।
এদিকে ভারত বিদেশ থেকে ভারতীয়দের আনার জন্য ইন্টারগ্লোব এভিয়েশন, ইন্ডিগো এবং স্পাইসজেটসহ কিছু বিমানকে অনুমোদন দিয়েছে। এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, আফগানিস্তানসহ ১৮টি দেশের সঙ্গে এয়ার বাবল চুক্তি করেছে ভারত।
কোন মন্তব্য নেই