নিস্তব্ধ সমুদ্রসৈকত - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

নিস্তব্ধ সমুদ্রসৈকত

 

নীরব-নিস্তব্ধ কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত। বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত পর্যটন স্পট বন্ধ ঘোষণার পর গতকাল বিকেলে সৈকতের চিত্র ছিল ছবির মতো। কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত দর্শনে যেখানে প্রতিদিন লাখ লাখ মানুষের সমাগম হতো, সেই সৈকত এলাকা এখন পর্যটকশূন্য। হঠাৎ যেন জনমানবহীন হয়ে পড়েছে। গতকাল শুক্রবার সারা দিন সৈকতে কোনো পর্যটক নামেননি। করোনাভাইরাসের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়াও কক্সবাজার প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলাব্যাপী জনসমাগম ও পর্যটকসমাগম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একই সাথে কক্সবাজারে পর্যটক আগমন করতে দেয়া হচ্ছে না। সৈকতজুড়ে এখন শুধুই লবণাক্ত জলের ঢেউয়ের শব্দ আর কিচির-মিচির শব্দে পাখির আনাগোনা। মাঝে মাঝে নিরাপত্তার স্বার্থে টহলে আসেন পুলিশের সদস্যরা।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমুদ্রসৈকতের তিনটি প্রবেশমুখে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। চলছে প্রচারপত্র বিলি। সৈকত ও আশপাশ এলাকায় পর্যটকদের সৈকতে না নামার জন্য প্রশাসন ও ট্যুরিস্ট পুলিশের মাইকিং করে করোনাভাইরাসের বিষয়ে সচেতনতামূলক বার্তা দেয়া হচ্ছে। কক্সবাজারের সমুদ্রসৈকতসহ সব পর্যটন কেন্দ্র আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৯টায় পর্যটন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো: মামুনুর রশিদ এই ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, দেশে করোনা সংক্রমণের হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে জেলা প্রশাসনের কাছে একটি নির্দেশনা পৌঁছায়। এতে হোটেল- মোটেলসহ কক্সবাজারের সব পর্যটন কেন্দ্রগুলো আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক বলেন, ‘সরকারের নির্দেশনা মতো ব্যবস্থা নিতে ট্যুরিস্ট পুলিশসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের তাৎক্ষণিকভাবে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর যে বা যারা নির্দেশনা অমান্য করবে তাদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক আইনগত ব্যবস্থা নিতেও বলা হয়েছে।’

জেলা প্রশাসনের নির্দেশনার পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে পর্যটকদের আনাগোনাসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ট্যুরিস্ট পুলিশের কক্সবাজার জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, সন্ধ্যায় মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার পাওয়ার পরপরই ট্যুরিস্ট তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে। এরপর থেকে ঘুরতে আসা পর্যটকদের সৈকতে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। পাশাপাশি সৈকতের বিনোদন ছাতা (কিটকট), বিচ-বাইক ও জেটস্কিসহ সব ধরনের পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

তবে সরকারি নির্দেশনার আসার আগে বিকেল থেকেই সমুদ্রসৈকতের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে পর্যটকদের ফিরিয়ে দেয়াসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে দিয়েছিল ট্যুরিস্ট পুলিশ।

এর আগে করোনা মহামারীর কারণে গত বছর ১৮ মার্চ থেকে কক্সবাজারের সব পর্যটন কেন্দ্রগুলো বন্ধ ঘোষণা করেছিল প্রশাসন। পরবর্তীতে গত বছর ১৭ আগস্ট থেকে স্বাস্থ্যবিধিসহ নানা নির্দেশনা মানার শর্তে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়েছিল।

এ দিকে পুলিশ সুপার মো: হাসানুজ্জামানের নেতৃত্বে পুলিশ শহরের বিভিন্ন স্থানে গণপরিবহনে সরকার ঘোষিত নির্দেশনা মেনে যাত্রী পরিবহন হচ্ছে কি না, যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করা হচ্ছে কি না তা সরেজমিন পরিদর্শন করছেন।

এ সময় চালক বা যাত্রী ও পথচারীদের মধ্যে লিফলেট ও মাস্ক বিতরণ করা হয়। দূরপাল্লার বড় যানবাহন ও লোকাল যানবাহনের চালক ও যাত্রীদেরকে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সচেতন করা হয়। পুলিশ সুপার নিজেও চালক বা যাত্রী ও পথচারীদের মধ্যে লিফলেট ও মাস্ক বিতরণ করেন।

কোন মন্তব্য নেই