গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সুরক্ষায় ফেসবুকের নতুন নিয়ম
এখন থেকে প্রতিষ্ঠানটি অধিকারকর্মী ও সাংবাদিকদের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে গণ্য করবে এবং এসব ব্যক্তি যেসব গ্রুপে রয়েছেন সেখানে কটূক্তি, হিংসাত্মক বক্তব্য ও হয়রানি বন্ধে নিরাপত্তার পরিমাণ বাড়াবে বলে জানা গেছে।
সামাজিক যোগাযোগের এ মাধ্যমটি ব্যক্তিগত পরিধির তুলনায় জনসম্মুখে বা জনপ্রতিনিধিদের পোস্টে অধিক সমালোচনামূলক বক্তব্য দেয়ার সুযোগ দিয়ে থাকে। তবে বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি সাংবাদিক ও অধিকারকর্মীদের প্রতি যেরূপ আক্রমণাত্মক আচরণ করা হয়, সেটি বন্ধে তাদের কার্যক্রমে পরিবর্তন আনছে। মূলত এসব ব্যক্তি তাদের ব্যক্তিত্বের তুলনায় কাজের কারণে অধিক পরিচিত।
কনটেন্ট যাচাই-বাছাইসহ প্লাটফর্মে সংঘটিত কিছু ঘটনার কারণে দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আইনপ্রণেতা ও নীতিনির্ধারকরা ফেসবুকের কড়া সমালোচনা করে আসছেন। কিছুদিন আগে ফেসবুকের বেশকিছু গোপন নথি ফাঁস হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত সপ্তাহে সিনেটে শুনানিও অনুষ্ঠিত হয়। বর্তমানে বিশ্বে ২৮০ কোটি মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করে থাকে। এত ব্যবহারকারীর মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি কীভাবে জনপ্রতিনিধি কিংবা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের পোস্ট ও কনটেন্ট কীভাবে পর্যালোচনা করে থাকে সে বিষয়ে তুমুল তর্ক-বিতর্ক হয়।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে প্রতিষ্ঠানটির ক্রস-চেক ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে শীর্ষস্থানীয় একটি গণমাধ্যমে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। যেখানে কিছু হর্তকর্তাকে নিয়মের বাইরে সুযোগ দেয়ার তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
অনলাইন আলোচনায় ফেসবুক জনপ্রতিনিধি বা জনগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও ব্যক্তিগতদের আলাদা নিরাপত্তা দিয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপ সামাজিক যোগাযোগ প্লাটফর্মে ব্যবহারকারীরা কাউকে ট্যাগ বা উল্লেখ না করে একজন সেলিব্রিটির মৃত্যুর কথা বলতে পারেন। তবে ফেসবুকের নতুন নীতি অনুসারে এখন কোনো ব্যবহারকারী কোনো অধিকারকর্মী, সাংবাদিকের মৃত্যুর বিষয়ে কথা বলতে পারবেন না।
অধিকারকর্মী, সাংবাদিক ব্যতীত আর কারা এ তালিকায় রয়েছেন, সে বিষয়ে ফেসবুক আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো কিছু জানায়নি। চলতি বছরের শুরুতে সোস্যাল মিডিয়া জায়ান্টটি মার্কিন নাগরিক জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুসংক্রান্ত কটূক্তি ও উদযাপনমূলক কনটেন্ট সরিয়ে দেয়ার বিষয়ে জানিয়েছিল। কেননা তাকে অনিচ্ছাকৃত জনপ্রিয় ব্যক্তি হিসেবে গণ্য করা হয়েছিল।
ফেসবুকের বৈশ্বিক নিরাপত্তা প্রধান অ্যান্টিগোন ডেভিস বলেন, প্রতিষ্ঠানটি প্লাটফর্মে অবস্থানরত জনগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ওপর যেসব হামলা করা হয়ে থাকে, সেগুলো প্রতিরোধের ব্যবস্থা বাড়িয়েছে। মূলত, নারী, এলজিবিটিকিউ কমিউনিটি ও বিভিন্ন গোত্রের মানুষদের অনাকাঙ্ক্ষিত আক্রমণের হাত থেকে রক্ষার্থে গৃহীত পদক্ষেপের অংশ হিসেবে এ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। নতুন নিয়মের আলোকে এখন থেকে ফেসবুক গুরুতর ও অবাঞ্ছিত যৌন বিষয়বস্তু প্রকাশ, অবমাননাকর সম্পাদিত ছবি কিংবা কারো ব্যক্তিগত প্রোফাইলে নেতিবাচক কমেন্ট করার সুযোগ দেবে না।
এর আগে নিষিদ্ধ বিষয়বস্তু সরাতে ব্যর্থ হওয়ায় সোস্যাল মিডিয়া জায়ান্ট ফেসবুক ও মাইক্রোব্লগিং প্লাটফর্ম টুইটারকে জরিমানা করেছিলেন রাশিয়ার একটি আদালত। বিশ্বের বড় ইন্টারনেট ও প্রযুক্তি জায়ান্টদের ওপর নিয়ন্ত্রণ সৃষ্টির অংশ হিসেবে এ জরিমানা আরোপ করেছিল দেশটির সরকার। ট্যাগানস্কির জেলা আদালত সূত্রে জানা যায়, এখন পর্যন্ত ফেসবুক মোট ২ কোটি ১০ লাখ রুবল বা ২ লাখ ৮৭ হাজার ৮৫০ ডলার ক্ষতিপূরণ দিয়েছে। অন্যদিকে টুইটার ৫০ লাখ রুবল জরিমানা দিয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই