প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শেয়ারবাজার নিয়ে আলোচনা ‘সুপার’: বিএসইসি চেয়ারম্যান - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শেয়ারবাজার নিয়ে আলোচনা ‘সুপার’: বিএসইসি চেয়ারম্যান

 

শেয়ারবাজারে টানা পতনের মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনায় বসে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন-বিএসইসি। বৈঠকশেষে নিয়ন্ত্রক সংস্থার কর্মকর্তারা আলোচনা ফলপ্রসু হয়েছে বলে জানিয়েছেন।


এর পরের দিন আজ (বুধবার) শেয়ারবাজারের সার্বিক বিষয় অবহিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম।


সরকার প্রধানের সঙ্গে বিএসইসির চেয়ারম্যান কোন কোন বিষয় আলোচনা করেছেন এবং আলোচনা ফলাফল কী রকম, বিএসইসির চেয়ারম্যান তা বিস্তারিত জানাননি। তবে তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় তিনি তৃপ্ত। এক বাক্যে বললেন, ‘সুপার হয়েছে’ যার মাধ্যমে তার উচ্ছ্বাসটা স্পষ্ট হয়েছে।


সরকার প্রধানের সঙ্গে আলোচনার ফলাফল কী- এমন প্রশ্নে তিনি একটি প্রথম শ্রেণির নিউজ পোর্টালকে বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমার একান্তে বৈঠক হয়েছে। সিদ্ধান্ত কী হয়েছে, সেটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশের আগে আমার বলা উচিত হবে না।’


কিন্তু বৈঠকের বিষয়ে বিনিয়োগকারীদের জন্য কী বার্তা থাকবে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সুপার হয়েছে। এক্সিলেন্টও।’


যে আলোচনা হয়েছে, তা শেয়ারবাজারে কেমন প্রভাব ফেলবে- এই প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘অনেক ভালো হবে। সব আলোচনায় হয়েছে শেয়ারবাজার নিয়ে।’


তিনি বলেন, ‘শেয়ারবাজার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী খুবই আন্তরিক।’


বিএসইসি চেয়ারম্যান জানিয়ছেন, শেয়ারবাজারের সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন। কোন কোন বাধার কারণে শেয়ারবাজার তার নিজস্ব গতিতে যেতে পারছে না সে বিষয়গুলোও তুলে ধরেছেন তিনি।


এর আগে গত বছরের মে মাসে করোনা পরিস্থিতিতে শিবলী রুবাইয়াতকে প্রধান করে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি পুনর্গঠনের পর থেকে শেয়ারবাজারে দারুণ দিন ফিরতে শুরু করে। প্রায় এক যুগ আগের মহাধসে হারানো শেয়ারদর কিছুটা হলেও ফিরে পেতে শুরু করে।


শেয়ারবাজার পতন থেকে উঠার প্রথম দিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকও শেয়ারবাজারে তারল্য বাড়াতে নানা পদক্ষেপ নেয়। ব্যাংকগুলোতে তার বিনিয়োগীসার বাইরে গিয়ে বিনিয়োগের সুযোগ করে দেয় আলাদা তহবিল করে।


শেয়ারবাজারে চাঙ্গাভাব ফেরার প্রক্রিয়ায় চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে সূচক মহাধসের পর প্রথমবারের মতো ৭ হাজার পয়েন্টের সীমা অতিক্রম করে। কিন্তু এ পর্যায়ে এসে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেশ কিছু পদক্ষেপ শেয়ারবাজারে তারল্য কমিয়ে দেয়।


এরপরই কেন্দ্রীয় ব্যাংক পিছুটান দিতে থাকে। ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ তার সীমার মধ্যে আছে কি না, সে বিষয়টিতে কড়াকড়ি আরোপের পাশাপাশি প্রতিদিনের লেনদেনের তথ্য জানতে চায় প্রতিষ্ঠানটি। বাজারমূল্যে বিনিয়োগসীমা নির্ধারণ করায় শেয়ার মূল্য বেড়ে গিয়ে ব্যাংকের সেই নির্ধারিত অঙ্কের বেশি শেয়ার ধারণ করলেই জরিমানার মুখে পড়তে হয় ব্যাংকগুলোকে।


বাংলাদেশ ব্যাংক পাশাপাশি ব্যাংকগুলো বন্ডে যে বিনিয়োগ করেছে, সেটিও শেয়ারবাজারে বিনিয়োগসীমার মধ্যেই ধরার কথা জানায়। এর মধ্যে মিউচ্যুয়াল ফান্ড পরিচালনা করা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির কাছেও প্রতিদিনের লেনদেনের তথ্য চায় তারা।


এসব ঘটনায় বাজারে অযাচিত বিক্রয় চাপ তৈরি হয়, নতুন বিনিয়োগও আটকে যায়। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি বড় বিনিয়োগকারীরাও হাত গুটিয়ে বসে থাকে।


ফলে শুরু হয় ধসের মতো পরিস্থিতি। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে বিএসইসির বৈঠকের আগের আট কর্মদিবসে একদিন বাড়ে প্রতিদিনই সূচক পড়েছে। এই কয়দিনেই বাজার থেকে সূচক কমে যায় প্রায় ৪০০ পয়েন্ট।


অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে অবশেষে সেই বৈঠক গতকাল অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকশেষে বিএসইসির পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দেয়া কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ জানান, তারা যেসব দাবি তুলেছিলেন, তা মেনে নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বন্ডে বিনিয়োগ ব্যাংকের বিনিয়োগসীমার বাইরে থাকবে। আবার সারা পৃথিবীর মতো ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা বা এক্সপোজার লিমিট শেয়ারের ক্রয়মূল্যে বিবেচনার বিষয়য়েও কেন্দ্রীয় ব্যাংক একমত হয়েছে নীতিগতভাবে।

কোন মন্তব্য নেই