মডার্ন সিকিউরিটিজের এমডি বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে যা বললেন - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

মডার্ন সিকিউরিটিজের এমডি বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে যা বললেন


দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সদস্যভুক্ত প্রতিষ্ঠান মডার্ন সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) খুঁজিস্তা নূর-ই-নাহরীন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও ডিএসইর প্রশংসা করে তাঁর ফেসবুক ফেইজে বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তাঁর স্ট্যাটাসটি হুবহু বিনিয়োগকারী ও সংশ্লিষ্টদের জন্য তুলে ধরা হলো-


মডার্ন সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, “ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশন শেয়ারবাজারের অভিভাবক, রেগুলেটরি বডি বা নিয়ন্ত্রক সংস্থা। তাঁদের কাছে আমাদের জবাবদিহিতা সার্বক্ষণিক। তাঁদের কমপ্লাইয়েন্স যত স্ট্রিক্ট বা কঠোর হবে বিনিয়োগকারীদের অধিকার ততো অক্ষুন্ন থাকবে।


যদিও প্রতিমাসের প্রথম তিন কার্যদিবসে নেট ক্যাপিটাল ব্যাল্যান্স অর্থাৎ আর্থিক লেনদেনের হিসাব, সিডিবিএলে সংরক্ষিত সমস্ত শেয়ারের পরিমাণসহ নিজেদের অফিসের অবস্থান স্পষ্ট জানান দিতে হয়, তদুপরি যে কোনদিন যেকোন সময় তাঁরা ইন্সপেকশনে আসতে পারেন, তথ্য চাইতে পারেন, তথ্য যাচাই বাছাই পূর্বক প্রয়োজনে ক্ষমতাবলে কঠোর কোন সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারেন।


আমাদের অফিস মডার্ন সিকিউরিটিজ লিমিটেডে ৬/০২/ ২০২২ তারিখে ডিএসই অতর্কিত ইন্সপেকশনে আসেন। যত বেশী ইন্সপেকশন ততো বেশী স্বচ্ছতা, অফিস আর বিনিয়োগকারীদের আমানতের সুরক্ষা । কারণ এক্সপার্ট তাঁরা মুহূর্তের মধ্যে যে কোন অসামঞ্জস্য থাকলে খুঁজে বের করে ফেলতে পারেন, শত চেষ্টাতেও যা হয়ত অনেকের পক্ষেই সম্ভব নয়। এটা তাঁদের এবং প্রতিটি হাউজের রুটিন ওয়ার্ক।


তাঁরা সমস্ত তথ্য যাচাই বাছাই করে ২২/২/২০২২২ এ জানালেন ৬ কোটি ৯৯ লক্ষ টাকার হিসেব মিলছে না।আমাদের মাথায় হাত এতো টাকা যাবে কোথায়? সব ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী। এতো টাকার ঘাটতি থাকলে কারো না কারো চেক ডিজ অনার হতো, চেক পাশে সমস্যা থাকতো পর পর তিনটি আইপিও তে কোটি কোটি টাকার চেক পাশ হতো না কিছুতেই ।

পর পর তিনটি আইপিও মার্কেটে আসাতে জানুয়ারি মাসে প্রচণ্ড কাজের প্রেশার ছিল। ৪ ঠা জানুয়ারি ২০২২ এ একই সাথে ৪ কোটি ৭৯ লক্ষ ৪২ হাজার ৪ শত ৪০ টাকার একটি চেক অন লাইন ট্রান্সফারের মাধ্যমে জমা হয়েছে এবং ৪ কোটি ৮৪ লক্ষ ১৫ টাকা আইপিও হয়েছে। ব্যাংকের সব কাজ ঠিক মত হয়েছে ঠিক কিন্তু সফট ওয়ারে ইনপুট দেওয়া হয়নি।যার ফলে ব্যাক অফিস সফট ওয়ারের সাথে ব্যাংকের হিসাব মিলছে না। প্রথম থেকেই সন্দেহ ছিল ডাটা এন্ট্রি তে ভুল, হয়েছেও তাই। এই কাজটি যার দায়িত্বে ছিল সে বেমালুম ভুলে গেছে বিধায় হিসাবের এই অমিল খুঁজে বের করা কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়ে।


কিন্তু একটি ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলাম কোন রকম দুর্নীতি সংঘটিত হয়নি বা ক্যাশ আউট হওয়া অসম্ভব এই অফিস থেকে।


বাকি কিছু টাকা চেক জমা দেওয়া মাত্র ট্রেড করা এবং আগের দিন সেল দিয়ে পরদিন কেনার জন্য মাইনাস দেখিয়েছে। তা ছাড়া ৫০ হাজার বিনিয়োগকারীদের বেশীরভাগ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী বিধায় তাঁদের ২০ হাজার টাকার শেয়ার রাখা বাধ্যতামূলক করার বিনিময়ে প্রতিনিয়ত লেনদেন তো করে কিন্তু কমিশনের টাকা বেশীরভাগ ক্ষেত্রে বাকিই রয়ে যায়। যা মূলত আমাদের অফিসের উপর চাপ বাড়ায়।


১৮ বছরে অলিখিত আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ বিনিয়োগকারীদের অসম্মত বা ''না'' বলতে দ্বিধান্বিত হন ট্রেডিং এর অথরাইজরা।


নিয়ম অনুযায়ী এক টাকা বাকি বা মাইনাস রাখার কোন অনুমতি নেই আমাদের কিন্তু শত চেষ্টাকে বিফল করে অনেক কোডেই ২০০ থেকে ৫০০ টাকা মাইনাস রয়ে যায়। তাঁদের অজুহাত কোডে তো ২০০০০ টাকার শেয়ার রয়ে গেছে, তবে কেন দুই চার পাঁচশত টাকার জন্য এতো কাঙ্গালীপনা।


ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ এবং বিএসইসি আমাদের অভিভাবক, স্বার্থ রক্ষক এবং উপকারী বন্ধু। তাঁদের সমস্ত কাজ আমাদের এবং আমাদের বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায়।


ডাটা এন্ট্রির ভুল, তথ্য বিভ্রাট একটি এক্সিডেন্ট মাত্র। এটা অবশ্যই দুঃখজনক ঘটনা কিন্তু অন্যায় নয়। কারণ এই গরমিল উদ্দেশ্য প্রণোদিত নয়, এর পেছনে কারো কোন খারাপ উদ্দেশ্য বা হীন স্বার্থ খুঁজার কারণ নেই।


অনিচ্ছাকৃত হলেও যখন কোন ঘটনার জন্ম হয় তা উপড়ে ফেলা বাঞ্ছনীয়। আমরা নিজেরাও চাই বেশী বেশী তদন্ত সাপেক্ষে সারভিলেন্সের আওতায় আমার হাউজ একেবারে স্বচ্ছ স্ফটিকের মত উজ্জ্বল হয়ে আলো ছড়াক।আপনারা যাদেরকে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী বলেন তাঁরা আমাদের অত্যন্ত সম্মানিত কারণ বিশ্বাস করে তাঁদের আমানত গচ্ছিত রেখেছেন। তাঁদের বিশ্বাসের মর্যাদা আমাদের কাছে জীবনের চেয়ে মূল্যবান।


আরেকটি কথা ৭ কোটি নয় ৭ টাকার গরমিলও কাম্য নয় কিছুতেই।


তবে আশ্চর্য হয়েছি একটি ঘটনা সম্পূর্ণ তদন্ত হওয়ার আগেই কিছু কিছু অতি উৎসাহী অপরিণামদর্শী গণমাধ্যম কর্মী এটাকে টাকা আত্মসাৎ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তাঁরা একটিবারের জন্যও ঘটনাটির সত্যতা যাচাই বা ক্রস চেক করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেননি।


তদন্তের যে পর্যায়ে আপনারা প্রকাশ করেছেন কিংবা আপনাদের হাতে এসেছে এটাও অবাক করা ঘটনা। কারণ এমন গরমিল বা এক্সিডেন্ট হরহামেশা যে কোন হাউজেই ঘটতেই পারে কিন্তু তাই বলে ভালো করে না জেনে চরিত্র হননে উঠে পরে লেগে যাবেন এটা মোটেও কাম্য নয় ।

দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগেই একজনের মান-সম্মান দীর্ঘ দিনের ক্রেডিবিলিটি, সুনাম, অর্জন বিনা কারণে ভুলন্ঠিত করার হীন প্রচেষ্টা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং অপ্রত্যাশিত।


গুঁটি কয়েক হাউজের অসততার দায় কিছুতেই বাকি সব হাউজের ঘাড়ে বর্তাতে পারে না।

আমাদের হাউজের বিনিয়োগকারীদের ধন্যবাদ এই কঠিন সময়ে তাঁরা কেবল পাশেই থাকেননি পরিপূর্ণ আস্থায় আমাদের সাহস যুগিয়েছেন।


মেধাবী আর অভিজ্ঞ গণমাধ্যম কর্মীদের ধন্যবাদ যারা আমার কমেন্ট বা মতামত তাঁদের খবরে যুক্ত করেছেন, সঠিক কারণ অনুসন্ধানের চেষ্টা চালিয়েছেন ।


ডিএসই মনিটরিং ডিপার্টমেন্ট কে ধন্যবাদ সার্বক্ষণিক পাশে থেকে বুদ্ধি, সাহায্য আর সহযোগিতা করার জন্য। তাঁদের মেধা, প্রজ্ঞা, অভিজ্ঞতা, পরামর্শ ভুলের উৎস খুঁজে বের করাকে স্বল্প সময়ে সহজতর করেছে।

বিএসইসি আমাদের শত্রু নয় বরং বন্ধু। তাঁদের কঠোর মনিটরিং এই পুঁজি বাজারের সমস্ত হাউজ এবং বিনিয়োগকারীদের নিশ্চিতির ঘুম।


ভবিষ্যতে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকেও এমন কঠোর সারভিলেন্সের আওতায় আনা গেলে কোন বিনিয়োগকারীকে আর সর্বস্বান্ত হয়ে পথে বসতে হবে না।


সাত হাজার নয়, সাত শতও নয় মাত্র সাত কোটি টাকার হিসেবের গরমিলে আপনারা নিমিষেই আমাকে দুর্নীতিবাজের কাতারে ফেলে দিলেন?


দুর্নীতিবাজ হওয়াও কি এতোটা সহজ ?


এর জন্য চতুর আর ধূর্ত হতে হয়, কুট কৌশল জানতে হয় যা আমার সাথে একেবারেই বেমানান।

একেক মানুষের জীবনের হিসেব একেক রকম। ছোট্ট এই জীবনের জন্য নিজের অন্তর আত্মাকে কলুষিত করবো, বিবেকের দংশনে জ্বলে পুড়ে খাক হবো এতোটা বেহিসেবি বোকা নই আমি।

শান্তি প্রিয়, সাদা-সিধা নিরীহ এক প্রাণী, সততা আর মানুষের নির্মোহ ভালবাসাই যার একমাত্র সম্বল। এই দামী সম্পদ এতো কম দামে বিকোবে ভাবলেন কি করে ???


পরিশেষে সকলের জন্য শুভকামনা আর আশীর্বাদ, সবার জীবন মঙ্গলময় হোক। আর কেউ যেন অযথাই এমন ঈর্ষা আর বিভ্রান্তির অনলে পুড়ে ছাই না হয় সেই দিকে দৃষ্টি রাখার জন্য গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে অনুরোধ রইল।”

1 টি মন্তব্য: