চমক দেখাল পি কে হালদারের দুই কোম্পানি - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

চমক দেখাল পি কে হালদারের দুই কোম্পানি




সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় প্রশান্ত কুমার হালদারের (পি কে হালদার) গ্রেফতারের খবরে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস এবং এফএএস (ফাস) ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড শেয়ারবাজারে বড় ধরনের চমক দেখিয়েছে। শেয়ারবাজারে আজ সোমবার ভয়াবহ পতন হলেও এই দুই কোম্পানির শেয়ারদর দিনের বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে বিক্রেতাশুন্য থাকারশিরোপা পেয়েছে।


আর্থিক খাতে পি কে হালদারের ব্যাপক লুটপাটের শিকার এই দুই প্রতিষ্ঠানের শেয়ার আজ লেনদেন শুরুর অল্প কিছু সময়ের ব্যবধানে দিনের সর্বোচ্চ দারে উঠে যায়। একপর্যায়ে দুটি কোম্পানির শেয়ারই বিক্রেতাশূন্য হয়ে পড়ে। যা দিনভর অব্যাহত থাকে।


ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) আজ ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের শেয়ারদর ৫০ পয়সা বা ১০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ৬ টাকায়। আর এফএএস ফাইন্যান্সের শেয়ারদর ৫০ পয়সা বা সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ৫ টাকা ৬০ পয়সায়।


নিয়ম অনুযায়ী, সাধারণত এক দিনে কোনো কোম্পানির শেয়ারের দাম ১০ শতাংশের বেশি বাড়তে পারে না। সেই হিসাবে দুটি কোম্পানিরই এদিন সর্বোচ্চ মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। এদিন ঢাকার বাজারে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের প্রায় সাড়ে ৯ লাখ ও এফএএস ফাইন্যান্সের ৪১ লাখ শেয়ারের লেনদেন হয়েছে।


বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের একটি অংশ বলছেন, ভারতে পি কে হালদারের গ্রেপ্তারের খবরে কোম্পানিটির শেয়ারের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা আশার সঞ্চার হয়েছে। তবে আরেকটি অংশের ধারণা, যাঁদের হাতে কোম্পানিটির শেয়ার ছিল, তাঁরা পি কে হালদারের গ্রেপ্তারের খবরকে পুঁজি করে শেয়ারের দাম বাড়িয়ে নিজেদের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। তাই নতুন করে যাঁরা এই কোম্পানির শেয়ার কিনবেন, তাঁরা ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন। কারণ, পি কে হালদার গ্রেপ্তার হলেও সহসা তাঁর কাছ থেকে টাকা উদ্ধার হয়ে যাবে, এমন সম্ভাবনা খুবই কম।


খবরে জানা যায়, পি কে হালদার গত শনিবার ভারতে গ্রেপ্তার হন। এর আগে বেনামে শেয়ার কিনে দেশের চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান দখলে নেন পি কে হালদার। সেগুলো হলো ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, বিআইএফসি, এফএসএ ফাইন্যান্স ও পিপলস লিজিং। এর মধ্যে পিপলস লিজিংয়ের লেনদেন দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। আর বিআইএফসি শেয়ারের দাম আজ কমেছে।


শেয়ারবাজার থেকে নামে-বেনামে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে শেয়ার কিনে এসব কোম্পানি দখলে নেয় পি কে হালদার। পরে কাগুজে কোম্পানি খুলে তার বিপরীতে বিপুল অর্থ বের করে নেন এসব প্রতিষ্ঠান থেকে। তাতে প্রতিষ্ঠানগুলো বলতে গেলে প্রায় অর্থশূন্য হয়ে পড়ে। আমানতকারীরা তাঁদের অর্থ ফেরত না পেয়ে পথে পথে ঘুরছেন।


দুদক সূত্রে জানা যায়, পি কে হালদার ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকে ২ হাজার ৫০০ কোটি এবং এফএএস ফাইন্যান্স থেকে প্রায় ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা ৩০-৪০টি অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ নিয়ে লুটপাট করেছেন। এসব ঋণের বিপরীতে মর্টগেজ (জামানত) নেই বলে দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তে উঠে এসেছে।


এসব কেলেঙ্কারি জানাজানি হওয়ার পর ২০১৯ সালে দেশ থেকে পালিয়ে যান পি কে হালদার। গত শনিবার ভারতে পি কে হালদারের গ্রেপ্তারের পর দেশটিতে নামে-বেনামে তাঁর বিপুল সম্পদ কেনার খবর প্রকাশিত হয়েছে ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে।


কোন মন্তব্য নেই