জয়ে বছর শুরু, শেষটা হবে কীভাবে?
পহেলা জানুয়ারি থেকে ৫ জানুয়ারি। পাঁচদিন সাদা পোশাকে অসাধারণ পারফর্ম করে নিউ জিল্যান্ডকে তাদের মাটিতে হারিয়ে ইতিহাসের পাতায় নিজেদের আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে নেয় মুমিনুল, মুশফিক, ইবাদত, তাসকিনরা।
কিন্তু বছরের শুরুটা যতটা রঙিন ছিল, শেষটা তখটাই ধূসর। বছরের বাকি আট টেস্টের সাতটিই দলের হার, ড্র কেবল একটি। দেশে, দেশের বাইরে সব জায়গাতেই এলোমেলো বাংলাদেশ। দলেও হয়েছে নানা অদলবদল। খেলোয়াড় পরিবর্তন, অধিনায়ক পরিবর্তন, নতুন পরিকল্পনা, নতুন রণকৌশলসহ কতো কিছু। কিন্তু ফল পক্ষে আসেনি। আসেনি বলেই বাংলাদেশের পারফরম্যান্সের ক্যানভাসে একেবারেই বিবর্ণ।
সুযোগ আছে শেষটা ভালো করার। ভারতের বিপক্ষে ঢাকা টেস্ট শুরু হচ্ছে বৃহস্পতিবার। নিউ জিল্যান্ডকে হারিয়ে জয়ে শুরু বছরের শেষটা যদি ভারতকে হারানো যায় তাহলে বছরের সারাংশটা এভাবেও টানা যেতে পারে, ‘শেষ ভালো যার, সব ভালো তার।’
জয়ের ছবি এঁকেই মাঠে নামছে বাংলাদেশ। পেস বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ড বলেছেন, ‘আমরা জিততে চাই। আমরা ভারতের বিপক্ষে খেলছি না অন্য কারও সঙ্গে, সেটা আসলে আমাদের সাফল্যের পরিকল্পনা স্থির করবে না। আমরা জিততে মুখিয়ে আছি। আমিসহ দলের অনেকেই জয় নিয়ে বাড়ি ফিরে বিলম্বিত ক্রিসমাস পালন করতে চাই।’
কাজটা ততটা সহজ নয়। চট্টগ্রামে ভারত বেশ দাপট দেখিয়েছে। ঢাকায় সেই আধিপত্য ধরে রাখতে চাইবে। তবে খেলাটা মিরপুরে বলে আলোচনায় দুই দলের লড়াই। মিরপুরে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মতো প্রতিপক্ষকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এখানে ১২ বছর পর ভারতকে লাল বলে আতিথেয়তা দিতে যাচ্ছে। তাদেরকে টেস্ট ক্রিকেটে হারানোর এর চেয়ে ভালো সুযোগ আর হতে পারে না।
মাঠে নামার আগে দল পেয়েছে সুখবর। অলরাউন্ডার সাকিবকে নিয়েই মাঠে নামতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তার বোলিং নিয়ে সংশয় ছিল। কিন্তু কাঁধের চোট কমে যাওয়ায় স্পিনার সাকিবকেও এই ম্যাচে পাওয়া যাচ্ছে। সঙ্গে তাসকিন আহমেদ আছেনই। ইবাদতের জায়গায় খেলবেন তিনি।
মিরপুরের উইকেট নিয়ে আলোচনা হলো ম্যাচে আগের দিনই। ভারতের কোচ রাহুল দ্রাবিড় উইকেট নিয়ে কথা বলতে ছুটে যান কিউরেটর গামিনি ডি সিলভার রুমে। রুমে তাদের আলোচনা খুব ভালো হয়নি বোঝা যায় দ্রাবিড়ের তেড়েফুরে বের হয়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখে।
টেস্টে ভালো ফল পেতে বাংলাদেশকে নজরে রাখতে হচ্ছে প্রথম ইনিংসটি। চট্টগ্রামে ভারতকে অল্পরানে গুটিয়ে দেওয়ার সম্ভাবনা জাগিয়েছিল। কিন্তু একাধিক ক্যাচ হাতছাড়া করে পিছিয়ে যায় স্বাগতিকরা। সঙ্গে বোলিংয়ে পূর্ণ শক্তি না পাওয়াও ছিল আরেকটি কারণ। ব্যাটিংও ছিল বাজে। মাত্র ১৫০ রানে গুটিয়ে যায়।
দ্বিতীয় ইনিংসে অবশ্য লড়াই করে বাংলাদেশ। জাকিরের সেঞ্চুরি ও সাকিবের ৮৪ রানের সুবাদে জবাব দেয় বাংলাদেশ। ডোনাল্ডের মতে, দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ যেভাবে লড়াই করেছে সেটাই হবে ঢাকা টেস্টের ব্লুপ্রিন্ট। বিশেষ করে জাকিরের সাড়ে তিন ঘণ্টারও বেশি সময়ের ব্যাটিংকে লড়াইয়ের প্রতিচ্ছবি হিসেবে দেখছেন ডোনাল্ড।
বাংলাদেশের ভাবনার বিষয় শেরে বাংলায় শেষ তিন টেস্টে তিনটিতেই হেরেছে। গত বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ১৭ রানে হার। এ বছল পাকিস্তানের কাছে ইনিংস ও ৮ রানে হার এবং সবশেষ শ্রীলঙ্কার কাছে ১০ উইকেটে হার। এবার ভারতের বিপক্ষে কেমন করে সেটাই দেখার।
টেস্টে বছর শুরুর সাফল্য ঢাকা পড়ে গেছে সারা বছরের ব্যর্থতায়। শেষটা যদি রাঙাতে পারে তাহলে ভালো অবস্থানে থেকে নতুন বছর শুরু করতে পারবে বাংলাদেশ।
কোন মন্তব্য নেই