সর্বনিম্ন চামড়ার দামের রেকর্ড - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

সর্বনিম্ন চামড়ার দামের রেকর্ড



রাজশাহী অঞ্চলে এবার কোরবানির চামড়া বিক্রি হয়েছে সর্বনিম্ন দরে। অভিযোগ উঠেছে, ব্যবসায়ীরা কারসাজি করে চামড়ার দাম কমিয়ে দিয়েছে। নানা অজুহাত ও ছলচাতুরি করে নামমাত্র মূল্যে চামড়া কেনার চক্রান্ত বাস্তবায়ন করেছে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। ফলে শেষ পর্যন্ত কোরবানীদাতারা অনুনয় বিনয় করে চামড়া বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন। একটি বড় গরুর চামড়া মাত্র আড়াইশ টাকাতেও বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন কোরবানীদাতারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহী অঞ্চলে এবার কোরবানির চামড়ার দাম ছিল গেল কয়েক বছরের মধ্যে সর্বনি¤্ন। মসজিদ-মাদ্রাসা কমিটির কাছে দান করা চামড়ার দামও ওঠেনি এবার। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বেশি দরে চামড়া কিনে প্রতিবছরই তাদের লোকসান গুণতে হয়। এ জন্য এবার তারা বেশ সতর্ক হয়েই চামড়া কিনেছেন। তবে তাদের দাবি বেশী টাকায় চামড়া কিনেছেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবারই প্রথম অনেক কম দামে চামড়া কিনেছেন ব্যবসায়ীরা। কোনো কোনো এলাকায় কোরবানীতাদাদের বিপাকে ফেলে চামড়া কেনা হয়েছে নামমাত্র মূল্য দিয়ে। অন্য বছর সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দরে চামড়া বিক্রি হলেও এবার তা হয়নি। ফড়িয়াদের দৌরাত্ম কম থাকলেও শেষ পর্যন্ত পেশাদার চামড়া ব্যবসায়ীরাই লুফে নিয়েছেন পানির দরে চামড়া।
রাজশাহী অঞ্চলের কোথাও কোথাও চামড়া বিক্রি হয়েছে নির্ধারিত দামেরও চেয়েও অনেক কম টাকায়। বিগত কোনো বছরে কোরবানির ঈদে চামড়া এতো কম মূল্যে বিক্রি হতে দেখা যায়নি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন এবার চামড়ার বাজারে ‘রাজত্ব’ করেছেন ব্যবসায়ীরা।
রাজশাহীর চামড়া বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতবছর রাজশাহীতে গরুর যে চামড়া দেড় হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে, সে মাপের চামড়া এবার সর্বোচ্চ ৬০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর গত বছর যে চামড়া এক হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে, সেগুলো এবার ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এদিকে ছাড়লের চামড়া এবার মাত্র ৫০ থেকে সর্বোচ্চ ৮০ টাকায় কিনেছেন ব্যবসায়ীরা। ভেড়ার চামড়া বিক্রি হয়েছে মাত্র ২০ থেকে ৫০ টাকায়। কোরবানীর চামড়া সাধারণত মসজিদ-মাদ্রাসায় দান করা হয়। শহরে কোরবানিদাতারাই চামড়া বিক্রি করে সে টাকা দুস্থদের মাঝে বিতরণ করে দেন। পঁচে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় প্রায় সবাই এবার কম দামেই চামড়া বিক্রি করেছেন।
কয়েকজন কোরবানিদাতা জানান, বেশি সময় ধরে রাখলে চামড়া নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই বাধ্য হয়েই অল্পমূল্যে চামড়া বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। রাজশাহী মহানগরীর তেরোখাদিয়া এলাকার বাসিন্দা করিম বলেন, ৭৮ হাজার টাকা মূল্যের গরুর চামড়া তিনি বিক্রি করেছেন মাত্র ৪শ’ টাকায়। শহরের চেয়ে গ্রামের কোরবানী দাতারা এবার বেশী ঠকেছেন। গ্রামের বড় আকারের গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে আড়াইশ থেকে তিনশ টাকার মধ্যে।
তবে রাজশাহী চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রউফ বলেন, সাধারণত প্রতি বছর ঈদে ৮০ থেকে ৯০ হাজার গরু-মহিষ ও প্রায় দেড় লাখ খাসি-ভেড়া কোরবানি হয় জেলায়। বিপুল পরিমাণ এই চামড়া তারা কিনে লবণ দিয়ে কয়েকদিন সংরক্ষণের পর নাটোরের আড়তগুলোতে নিয়ে যান। ঢাকার ট্যানারি মালিকরা সেখান থেকে চামড়া কিনে নিয়ে যান। তার দাবি এবার বেশী দামেই তারা চামড়া কিনেছেন।

কোন মন্তব্য নেই