যুদ্ধে পারবে না জেনেই তারা হুমকির ভাষায় কথা বলছে আলী শামখানি
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান জাতিসংঘ প্রস্তাব ও আন্তর্জাতিক রীতিনীতি অনুযায়ী এবং পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে পশ্চিম এশিয়ায় নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে।
ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সচিব আলী শামখানি তাসনিম বার্তাসংস্থাকে দেয়া সাক্ষাতকারে ইরান ও পশ্চিম এশিয়া বিষয়ক আঞ্চলিক পরিবর্তিত পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে বলেছেন, "সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলা করা এবং পশ্চিম এশিয়ায় নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করা ইরানের অপরিবর্তনীয় নীতি। এ কারণে বছরের পর বছর ধরে ইরান সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছে।"
ইরান মনে করে, বিদেশিদের হস্তক্ষেপ ছাড়াই কেবল আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে এ অঞ্চলে নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব। যদি কোনো সমস্যা থেকে থাকে তাহলেও তা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। এ দৃষ্টিভঙ্গি নিশ্চিতভাবে আমেরিকা ও এ অঞ্চলের দখলদার শক্তির স্বার্থের অনুকূলে নয়। এ কারণে আমেরিকা, ইসরাইল ও সৌদি আরব সম্মিলিতভাবে ইরানের এ দৃষ্টিভঙ্গির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। বিশেষ করে আমেরিকা নানা উপায়ে পশ্চিম এশিয়ায় ইরানের গঠনমূলক ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
এ লক্ষ্যে ইরান আতঙ্ক সৃষ্টি ও ইরানের বিরুদ্ধে আঞ্চলিক জোট গঠনের চেষ্টা করছে আমেরিকা। সম্প্রতি ওয়ারশ সম্মেলনেও ইরানের বিরুদ্ধে জোট গঠনের জন্য আমেরিকা ব্যাপক চেষ্টা চালিয়েছে। যদিও মার্কিন কর্মকর্তারা এখানেও ব্যর্থ হয়েছেন কিন্তু তারপরও তারা এটা দেখানোর চেষ্টা করছেন যে ইরানের বিরোধিতার করার ক্ষেত্রে তারা একা নয়।
ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সচিব আলী শামখানি তার সাক্ষাতকারে এ ব্যাপারে বলেছেন, "এটা ঠিক যে আমেরিকা ইরানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক জোট গঠনের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কিন্তু এ অঞ্চলের দেশগুলো হোয়াইট হাউজের নীতির সঙ্গে একমত নয়।" তিনি বলেন, "ইরান সবসময়ই শত্রুর সামরিক হুমকিকে গুরুত্বের সাথে নিয়ে থাকে এবং এ কারণেই আমরা ক্ষেপণাস্ত্র শক্তি কিংবা বিমান প্রতিরক্ষা শক্তিকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। বর্তমানে ইরান এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, শত্রুর যে কোনো হুমকির কঠিন জবাব দিতে প্রস্তুত আর ট্রাম্প প্রশাসন এ বিষয়ে ভালভাবে অবহিত আছে। ইরানের অবস্থান সম্পর্কে তেলআবিবেরও পরিষ্কার ধারণা রয়েছে। যেহেতু তারা জানে যুদ্ধে পেরে উঠবে না তাই তারা কেবল উঁচু গলায় ইরানের বিরুদ্ধে হুমকি দিয়ে চলেছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও যুদ্ধে আগ্রহী নন তাই কেবল হুমকির ভাষায় কথা বলছেন।"
গত কয়েক দশকের ঘটনাবলীর দিকে নজর দিলে দেখা যাবে মার্কিন নেতৃত্বে পাশ্চাত্য সবসময়ই এ অঞ্চলের দেশগুলোর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থেকেছে। আমেরিকা সামরিক হস্তক্ষেপের মাধ্যমে একদিকে যেমন এ অঞ্চলে জোর জবরদস্তিমূলক প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছে তেমনি নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টির পাশাপাশি সামরিক প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করেছে যার পরিণতি ধ্বংসাত্মক।
প্রকৃতপক্ষে, ইরান সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর নিরাপত্তাকে নিজের নিরাপত্তা বলে মনে করে। ইরানই ছিল প্রথম দেশ যে কিনা সন্ত্রাসীদের মোকাবেলায় সিরিয়া সরকারের ডাকে ইতিবাচক সাড়া দেয়। এ অঞ্চলে ইরানের নীতি হচ্ছে পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদার ও জাতিগুলোর ইচ্ছার প্রতি সম্মান দেখানো। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইরান এতটাই প্রস্তুত যে এ অঞ্চলের যে কোনো দেশকে সহযোগিতা করতে পারে তেহরান। -পার্সটুডে
কোন মন্তব্য নেই