মাধ্যমিকে বিজ্ঞান-মানবিকের বিভাজন চান না প্রধানমন্ত্রী
এসএসসি পর্যন্ত একটি বিভাগ হওয়া উচিত বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। তার মতে, নবম শ্রেণি থেকে শিক্ষার্থীদের সায়েন্স, আর্টস, কমার্স বিভাগে ভাগ করে না দেয়াই ভালো।
বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে আয়োজিত 'প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক' বিতরণ অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তৃতায় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, "আমাদের ক্লাস নাইন থেকে কে কোন সাবজেক্টে যাবে, তা ভাগ করে দেওয়া হয়। আমাদের এখানে একসময় করা হয়েছিল। এটা বোধহয় প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের সময়, ৬৩ সালে করা হয়। কেউ বিজ্ঞান পড়ল না দুই বছর, এ জন্য সে এটায় ভর্তি হতে পারবে না, ওটায় ভর্তি হতে পারবে না।"
এসএসসি পর্যন্ত সব বিষয়ই শিক্ষার্থীদের পড়া প্রয়োজন মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, "সব সাবজেক্টই তারা পড়তে পারে। এসএসসির পরে গিয়ে যদি বিভক্তি হয় তবে সেটাই ভালো। তাহলে অন্তত তার মেধা বিকাশের একটা সুযোগ পায়। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের চলতে হবে।"
প্রযুক্তিনির্ভর ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "এখন তো সব সাবজেক্টই বিজ্ঞানভিত্তিক। বিজ্ঞানের বাইরে কিছু না। আমরা এখন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের কথা বলছি। এখন থেকে আমাদের ছেলেমেয়েদের দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। কারণ প্রযুক্তিভিত্তিক শিল্প গড়ে উঠছে, সেটা আরও বিকশিত হবে। এখানে আমাদের জনশক্তি লাগবেই।"
সমন্বিত শিক্ষা পদ্ধতিতে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাও পিছিয়ে থাকবে না বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। "আমরা কাউকে অবহেলা করতে চাই না। মাদ্রাসাতেও কিন্তু অনার্স কোর্স চালু হয়েছে। সেখানে প্রযুক্তি শিক্ষা রয়েছে। এমনকি আমাদের কওমি মাদ্রাসাগুলোকে স্বীকৃতি দিয়েছি, দাওরায়ে হাদিস পর্যায়ে আমরা মাস্টার্স মান দিয়েছি। এ কারণে তাদেরকেও আমরা সমন্বিত শিক্ষার মধ্যে নিয়ে আসতে চাই, একই ডিসিপ্লিনে নিয়ে আসতে চাই।"
কৃষি গবেষণার মাধ্যমে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষায় গবেষণা বাড়ানোর তাগিদ দেন। বলেন, শিক্ষার সুযোগকে সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে কাজ করছে সরকার। সে লক্ষ্যেই বিভিন্ন জেলায় স্থাপন হচ্ছে নতুন নতুন বিশ্ববিদ্যালয়।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, দেশের বিশ্ববিদ্যালসমূহের কৃতি শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশ ও অধ্যয়নে উৎসাহ প্রদানের জন্য ইউজিসি ২০০৫ সালে প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক প্রবর্তন করেন।
কোন মন্তব্য নেই