এমন ‘মহামানব’ শতবর্ষে একবারই আসেন - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

এমন ‘মহামানব’ শতবর্ষে একবারই আসেন














বাঙালি জাতির ইতিহাসে উজ্জ্বল কালান্তরের সূচনা করেছিলেন তিনি। দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে উঠেছিল তার হাত ধরেই। যা পরবর্তী সময়ে রূপ নেয় মুক্তির আন্দোলনে। বাঙালির কাছে তিনি ‘বঙ্গবন্ধু’ নামেই পরিচিত। বিশ্লেষকরা বলছেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়ন করতে পারলেই আলোর পথে এগোবে বাংলাদেশ।

শুধু দোর্দণ্ডপ্রতাপের নেতা নন তিনি, চিফ ইন কমাণ্ডার নন, ব্যক্তি পূজার বেদীতে আসীন কোনো গুরু নন তিনি। বাঙালির পরম বন্ধু তিনি। শেখ মুজিবুর রহমান। এ নামটিতেই ইতিহাসের দরজা খুলে যায়, সেখান থেকেই আমরা ফিরে যাই আজ থেকে ঠিক একশ বছর পিছনে। দেখতে পাই নিভৃত পল্লী টুঙ্গিপাড়া। সেখানেই শেখ পরিবারে জন্মে নিচ্ছেন একটি শিশু।

একদিকে বাংলার নিভৃত পল্লীতে বেড়ে উঠছেন কিশোর শেখ মুজিব, অন্যদিকে হাসিক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। বৃটিশ শাসনের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তুলছে ভারতবর্ষ। টালামাটাল অবস্থা।

কিশোর শেখ মুজিব চোখ মেলে দেখছেন, কি গভীরভাবেই না অবহেলিত স্বদেশ, পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ মানুষ।

নবগঠিত পাকিস্তান একটি বুদবুদ ছাড়া কিছুই নয়, তা অনুধাবনে সময় নেননি শেখ মুজিব। রাজনৈতিক প্রজ্ঞায় তিনি পেরিয়েছেন ভাষা আন্দোলন, যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ছয় দফা আন্দোলন, উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান আর সত্তুরের সাধারণ নির্বাচন। নানা ঘটনা পেরিয়ে বাঙালি জীবনে আসলো ৭ মার্চ ১৯৭১।

পাক সার জমিন সাদ বাদের বিরুদ্ধে সোনার বাংলার চেতনা রোপিত করলেন বঙ্গবন্ধু। নিরীহ বাঙালিকে, সশস্ত্র যোদ্ধায় পরিণত করলেন। এর মধ্য দিয়েই বাঙালি অর্জন করলো হাজার বছরের কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতার স্বাদ।








পাকিস্তানী বন্দী জীবন শেষে দেশ ফিরলেন রাজনীতির কবি বঙ্গবন্ধু। দ্বিতীয়বার আনন্দে ভাসলেন বাঙলার মানুষ।

এত কিছুর পরও এমন জ্যোতির্ময় পরিপূর্ণ সমৃদ্ধিকে, এমন বৈভবময় ইতিহাসকে হত্যা করা হলো। ঘোর অমানিশা নেমে আসে বাংলার বুকে। আজ জন্মশতবর্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ইতিহাসের আলোয় আমরা আজও তাকে খুঁজে পায় নানা মাত্রায়। ইতিহাস গবেষক আফসান চৌধুরী বলেন, শেখ মুজিবুর রহমানের শক্তিটা কোথায় ছিল। তিনি মানুষের কাছাকাছি ছিলেন। সেই প্রতিবাদী মানুষ ছিলেন। কোন জাতীয়তাবাদের প্রতিনিধি ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান? আমি মনে করি তিনি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি ছিলেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাঙালির হাজার বছরের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা পূর্ণতা পেয়েছিল শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরেই। তাই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে আরও প্রত্যয়ই ভূমিকা নেয়াই হবে জাতির পিতার প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন। ইতিহাসবিদ মেজবাহ কামাল বলেন, স্বাধীনতার আদর্শ ও মানব মুক্তির আদর্শকে তিনি ধারণ করতেন তা নিয়ে বঙ্গবন্ধু আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে এসেছেন। এই জন্মশতবর্ষে আমি নিশ্চিত তিনি আরও শক্তিশালী হিসেবে আবির্ভূত হবেন।

মুক্তির আন্দোলনের কোন সীমা থাকেনা। বিমূর্ততার অন্তরাল ভেদ করে প্রাণবান মুজিব তাই করাঙ্গুলি প্রসারিত করেন আজও যখন জাতি থাকে সংকটে, সংশয়ে। মানুষের প্রতি নিবেদিত প্রাণ শেখ মুজিবুর রহমান। মৃত্যুঞ্জয়ী এই মহামানবকে, মহাকালে বাঙ্গালী পাবে পরম স্বজন হিসেবে।

কোন মন্তব্য নেই