টিকা কোম্পানিগুলোর বাজিমাত! - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

টিকা কোম্পানিগুলোর বাজিমাত!


হাজার হাজার মানুষকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে আনছে করোনার টিকা। প্রশংসা কুড়াচ্ছে সারাবিশ্বে। এই করোনার টিকা যে শুধু মানুষের উপকারেই আসছে, তা নয়। বাজিমাত করছে ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিগুলো।

টিকা কোম্পানিগুলোর বাজিমাত!


করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়ানোয় টিকার চাহিদা এখন তুঙ্গে। শুধু জুনের পরিসংখ্যানই ধরা যাক। বিশেষজ্ঞরা ধারণা করেছিলেন, চলতি বছর ৭ হাজার কোটি ডলারের করোনার টিকা বিক্রি হবে। কিন্তু ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কারণে টিকা বিক্রির পরিমাণ আরও অনেক বাড়বে। কারণ মানুষ এখন বুস্টার ডোজও নেবে।



তবে বুস্টার টিকা দেওয়া হোক বা না হোক, ২০২১ সালে আগের চেয়ে অনেক বেশি বিক্রি বাড়বে ফাইজারের। এ বছর ৩০০ কোটি ডোজ টিকা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে তারা। গত ডিসেম্বর থেকে এ পর্যন্ত সংস্থাটি ১০০ কোটি ডোজ টিকা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সরবরাহ করেছে। এখন পর্যন্ত সব লভ্যাংশ বায়োনটেকের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিয়েছে ফাইজার।


গত সপ্তাহে জনসন অ্যান্ড জনসন জানিয়েছে, এ বছর ২৫০ কোটি ডলারের করোনা প্রতিরোধী টিকা বিক্রি করবে তারা। একই সময়ে মডার্নার লক্ষ্য- ১ হাজার ৯২০ কোটি ডলারের টিকা বিক্রি।


যুক্তরাষ্ট্রের তহবিল থেকে টিকা বানানোর জন্য অর্থ পাওয়া মডার্না বলছে, শিগগিরই তারা জানাবেন দ্বিতীয় প্রান্তিকে কত খরচ হয়েছে ভ্যাকসিন বানাতে। পূর্বাভাস ছিল, মে মাসেই ভ্যাকসিন থেকে ১ হাজার ৯২০ কোটি ডলার আয় হবে। এই আয়ের পরিমাণ আরও বাড়বে। আরেক মার্কিন টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ফাইজার বলছে, করোনার টিকা বিক্রি করে যে মুনাফা হবে, সেটা দিয়ে নতুন শেয়ার কিনবে তারা।


ইউরোপ আর যুক্তরাষ্ট্রে দুই ডোজ করোনার টিকা ৩০ ডলার করে বিক্রি করছে ফাইজার। যেখানে ব্রিটিশ ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রাজেনেকা আর যুক্তরাষ্ট্রের জনসন অ্যান্ড জনসন বলছে, মহামারি চলাকালে টিকা বিক্রিতে কোনো মুনাফা করবে না তারা।


চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে টিকা থেকে ১ হাজার ১৩০ কোটি ডলার মুনাফা করেছে নিউইয়র্কের ফাইজার। জার্মানির কোম্পানি বায়োনটেকের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে টিকা তৈরি করেছেন তারা। গেলো সপ্তাহেই পূর্বাভাস দিয়েছে চলতি বছর ৩ হাজার ৩৫০ কোটি ডলারের টিকি বিক্রি করবেন তারা, যেখানে আগে পূর্বাভাস ছিল ২ হাজার ৬০০ কোটি ডলারের টিকা বিক্রির। এই দুই কোম্পানি নতুন ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে কার্যকর ভূমিকা রাখতে টিকা তৈরি করছে, এই টিকা চলতি মাসেই মানুষের দেহে প্রয়োগ করা হবে। চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ফাইজারের টিকা বিক্রি ৮৬ শতাংশ বেড়েছে।


ভ্যাকসিন তো ভাগ্যই বদলে দিয়েছে মডার্নার। ২০১০ সালে ম্যাসাচুসেটসে প্রতিষ্ঠিত এ বায়োটেক ফার্মটি। ২০২১ সালের প্রথম প্রান্তিকে প্রথম মুনাফার মুখ দেখেছে। কারণ এই প্রান্তিকে প্রতিষ্ঠানটির ১৭০ কোটি ডলারের করোনার টিকা বিক্রি হয়েছে।


অন্যদিকে অ্যাস্ট্রাজেনেকা আর জনসন অ্যান্ড জনসন টিকা বিক্রি করছে ঠিকই, কিন্তু মুনাফার চিন্তা বাদ দিয়ে। অ্যাস্ট্রাজেনেকা দুই ডোজ টিকার দাম রাখছে সাড়ে ৪ থেকে ১০ ডলার। জনসন অ্যান্ড জনসন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একেকটি ডোজের দাম রাখছে ১০ ডলার। এরপরও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় আর অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা বিক্রি করে বছরের প্রথমার্ধেই ১২০ কোটি ডলার আয় করেছে। এটিও করোনার প্রথম অনুমোদিত ভ্যাকসিন, এখন সরবরাহ করা হচ্ছে সারাবিশ্বে।


জুনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ঘোষণা দেন, যুক্তরাষ্ট্র ৫০ কোটি ভ্যাকসিন সারাবিশ্বে দান করবে। ৯২ টি নিম্ন ও নিম্নমধ্য আয়ের দেশে এবং আফ্রিকায়। গবেষণা বলছে, সারাবিশ্বের মাত্র ১৪ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ করোনার টিকা নিয়েছে। ২৮ শতাংশ মানুষ করোনার টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছে। সারাবিশ্বে দেওয়া হয়েছে ৪০০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন। সেখানে নিম্ন আয়ের দেশগুলোর মাত্র ১ শতাংশ মানুষ করোনার টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছে।

কোন মন্তব্য নেই