মার্কিন আচরণে ক্ষুব্ধ ফ্রান্স, বাইডেনকে ট্রাম্পের সঙ্গে তুলনা
ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে চুক্তি হয়েছে। এইউকেইউএস নামের এই চুক্তির অধীন অস্ট্রেলিয়াকে পারমাণবিক সাবমেরিনের প্রযুক্তি সরবরাহ করবে ওই দুই দেশ। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফ্রান্স। কারণ, অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে দেশটির সাবমেরিন বিষয়ে একটি চুক্তি হয়েছিল ২০১৬ সালে। ওই চুক্তির আর্থিক মূল্য ছিল চার হাজার কোটি মার্কিন ডলার। কিন্তু সেটি বাদ দিয়ে এবার পারমাণবিক শক্তিচালিত অত্যাধুনিক সাবমেরিন তৈরিতে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের সঙ্গে চুক্তি করেছে অস্ট্রেলিয়া সরকার।
বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ফ্রান্সের সঙ্গে আগের চুক্তিটি স্থগিত করার তথ্য নিশ্চিত করেছেন খোদ অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। তার কথায়, ‘আঞ্চলিক নিরাপত্তায় দ্রুত পরিবর্তন’ আসার কারণে প্রচলিত সাবমেরিনগুলো চাহিদার ‘অনুপযুক্ত’ হয়ে পড়েছে।
আর এতেই ক্ষেপেছে ফ্রান্স। ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-ইভস লে দ্রিয়াঁ এটিকে সরাসরি ‘পিঠে ছুরি মারা’র সঙ্গে তুলনা করে বলেছেন, আমরা অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বিশ্বাসের সম্পর্ক গড়েছিলাম, সেটি ভাঙা হয়েছে।
তবে ফ্রান্সের মূল ক্ষোভটা গিয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর। এভাবে ‘একতরফা’ চুক্তি করায় বাইডেনের সঙ্গে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মিল খুঁজে পেয়েছেন ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি ফ্রান্সইনফো রেডিওকে বলেন, (বাইডেনের) এই নৃশংস, একতরফা ও অনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত অনেকটা ট্রাম্প যা করতেন, আমাকে সেটিই মনে করিয়ে দিচ্ছে। মিত্রদের সঙ্গে এমনটি করতে হয় না।
এছাড়া ফরাসি প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর সঙ্গে এক যৌথ বিবৃতিতে লে দ্রিয়াঁ বলেছেন, আমরা যখন ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি, তখন মার্কিন সিদ্ধান্তে ইউরোপীয় মিত্র ও ফ্রান্সের মতো অংশীদারকে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারিত্ব থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এতে ফ্রান্স শুধু অনুশোচনাই করতে পারে।
এ ঘটনার পরপরই ক্ষুব্ধ ফ্রান্সকে শান্ত করার চেষ্টা শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, ফ্রান্স এখনো অনেক ইস্যুতেই যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ফ্রান্সের সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রতিটি উপায় খুঁজে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র, এর মধ্যে ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরও রয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী ইউরোপীয় দেশগুলোকে স্বাগত জানাই। ন্যাটো, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অন্যদের কাছ থেকে এ প্রচেষ্টায় অব্যাহত সহযোগিতা আশা করছি আমরা। বিশেষ করে ফ্রান্সের কাছ থেকে, তারা অনেক বিষয়েই আমাদের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার- এটি বহুদিন ধরে রয়েছে, ভবিষ্যতেও থাকবে।

কোন মন্তব্য নেই