অবকাঠামো খাতে বৃহৎ বিনিয়োগ পরিকল্পনা যুক্তরাজ্যের
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনালের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ পরিকল্পনায় আগামী ১০ বছরে সারা দেশে অবকাঠামো প্রকল্পে রেকর্ড ৬৫ হাজার কোটি পাউন্ড সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগ বাস্তবায়ন হবে। প্রকল্পটি হাজার হাজার শিক্ষানবিশ, প্রযুক্তিবিদ, স্নাতক ও দক্ষ কর্মীদের জন্য নতুন কাজের সুযোগ সৃষ্টি করবে। সরকারের দাবি, প্রকল্পটি দেশজুড়ে সমানভাবে বাস্তবায়ন করা হবে।
ব্রিটিশ সরকার বলেছে, নতুন প্রকল্পে সামাজিক অবকাঠামোতে ৮ হাজার ৯০০ কোটি পাউন্ড বিনিয়োগের লক্ষ্য নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে বিদ্যালয় ও কলেজ পর্যায়ে বড় পুনর্নির্মাণসহ সম্প্রদায়গুলোকে সহায়তায় ১৬৫টি শিক্ষা প্রকল্পে ২৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এছাড়া সরকার আগামী ১২ মাসে সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবকাঠামোতে ৩ হাজার কোটি পাউন্ডের পরিকল্পিত অর্থায়নও নির্ধারণ করেছে।
সরকারের দেয়া হিসাব অনুযায়ী, কভিড-১৯ মহামারীতে এখন পর্যন্ত কর্মীদের বেতন সহায়তা (ফোরলগ স্কিম) বাবদ ব্যয় হয়েছে ৬ হাজার ৮৫০ কোটি পাউন্ড এবং ১ কোটি ১৬ লাখ মানুষ এ সহায়তা পেয়েছেন। এর মধ্যে স্কটল্যান্ডে ৯ লাখ ১০ হাজার কর্মসংস্থান, ওয়েলসে ৪ লাখ ৭০ হাজার এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডে ২ লাখ ৯০ হাজার কর্মসংস্থানকে সমর্থন দেয়া হয়েছে।
সরকার জানিয়েছে, কর্মসংস্থান পরিকল্পনা কাজ করছে। আট মাসের মধ্যে ফ্রন্টলাইন জব সেন্টারের কর্মীদের সংখ্যা দ্বিগুণ করে ২৭ হাজার কর্মীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এসব কার্যক্রমের ফলে বেকারত্বের পূর্বাভাস পূর্বের আশঙ্কার চেয়ে ২০ লাখ কম হয়েছে। যুক্তরাজ্যের বেকারত্ব হার এখন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইতালি, স্পেন ও অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে কম।
এখন পর্যন্ত ব্রিটিশ সরকারের কিকস্টার্ট স্কিমের আওতায় ৬৩ হাজার যুবক কাজ শুরু করেছে, নতুন প্রণোদনার অধীনে ৮০ হাজারেরও বেশি শিক্ষানবিশকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে এবং আরেকটি কর্মসংস্থান স্কিম জব এন্ট্রি টার্গের সাপোর্টের মাধ্যমে ১ লাখ ৬৩ হাজারেরও বেশি লোক উপকৃত হয়েছে।
ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেন, সরকার তাদের প্রয়োজনের সময় চাকরি ও ব্যবসা রক্ষার জন্য একটি পরিকল্পনা করেছে। আমি এটি বলতে পেরে আনন্দিত যে আমাদের কর্মসংস্থান বৃদ্ধির পরিকল্পনা কাজ করছে। আগামী চার বছরে বছরভিত্তিক ৪ লাখ ২৫ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টির ঘোষণা দেয়া হয়েছে। আমাদের পরিকল্পনার আওতায় সারা দেশে সুযোগ বাড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। তবে এটি কেবল সংখ্যার বিষয় নয়। আমাদের কর্মসংস্থান পরিকল্পনা মহামারী থেকে বেরিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে মানুষকে তাদের সম্ভাবনা পূরণের আশা ও সুযোগ দেয়ার বিষয়ও।
প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, মহামারীর পর এ দশকে আরো ভালোভাবে দেশ গড়ার জন্য আমরা কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছি। ব্যবসার আত্মবিশ্বাস বাড়ছে এবং আমাদের পদক্ষেপের জন্য ২০ লাখেরও কম মানুষকে কাজের বাইরে দেখতে পাব বলে আশা করছি।
তিনি বলেন, আমরা আমাদের পরিকল্পনায় বিনিয়োগ করছি। কারণ মানুষকে কাজে সহায়তা করা, ভালো চাকরি পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা নিশ্চিত করা এবং ব্যবসাগুলোকে শূন্যপদ পূরণে সহায়তা করা অর্থনীতি গতিশীল করার সর্বোত্তম উপায়।
কোন মন্তব্য নেই