নতুন সংকটের শঙ্কা বিদেশী ব্যাংকে আমানতে পিছু হটছে জার্মানরা
বিদেশের ব্যাংকে আমানত রাখা থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিচ্ছেন জার্মানির নাগরিকরা। অধিকতর আকর্ষণীয় মুনাফার টোপ ফেলেও তাদের প্রলুব্ধ করা যাচ্ছে না। যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক বন্ধ হওয়ার পর থেকে তাদের মনে ভয় কাজ করছে। বিদেশের ব্যাংকগুলোয় আমানত রাখলে যেকোনো সময় ঝামেলা হতে পারে বলে তারা আশঙ্কা করছেন।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনের বরাতে জানা যায়, জার্মান নাগরিকদের সবচেয়ে বেশি অর্থ জমা আছে ইউরোপের বিভিন্ন ব্যাংকে। নগদ ২ লাখ কোটি ইউরো। পাশাপাশি তুলনামূলক দুর্বল অর্থনীতির দেশগুলোতেও অধিকতর মুনাফায় আমানত রাখার প্রবণতা ছিল তাদের। এসব দেশের মধ্যে লিথুয়ানিয়া, মাল্টা, ইতালি ও পর্তুগাল অন্যতম। কিন্তু গত ১০ মার্চ থেকে এ প্রবণতা হঠাৎ করেই কমে যায়। সেদিন সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ব্যাংক খাতের চলমান অস্থিরতা প্রমাণিত হয়।
ফেব্রুয়ারির তুলনায় ১০ মার্চ থেকে জার্মানির নাগরিকদের বিদেশের ব্যাংকে আমানত রাখার চাহিদা ১৫-২০ শতাংশ কমেছে। চেকটোয়েন্টিফোর ও বিয়াল্লো নামক দুটি অনলাইন প্লাটফর্ম এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
অন্যদিকে জার্মানির ব্যাংকগুলোয় আমানত রাখার চাহিদা বেড়েছে বলে জানিয়েছে অনলাইন সংস্থা দুটি। সে দেশের সরকারের হাই ক্রেডিট রেটিং এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে। তাছাড়া আমানতের ওপর দুটি পৃথক সেফটি নেট আছে। এসব কারণে আমানতের জন্য দেশীয় ব্যাংককেই নিরাপদ ভাবছেন জার্মানির নাগরিকরা।
স্কোপ রেটিংস অ্যাজেন্সির একজন পরিচালক ক্রিশ্চিয়ান ভন বিক বলেন, ‘চলমান সংকট গ্রাহককে নিজ দেশের ব্যাংকে আমানত রাখতে উদ্বুদ্ব করছে।’
বিশ্বব্যাপী ব্যাংক খাতে চলমান অস্থিরতার কারণে আমানতকারীরা ‘ট্রিপল-আ’ খ্যাত দেশগুলোর দিকে ঝুঁকছে। এ প্রসঙ্গে চেকটোয়েন্টিফোরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মরিত্জ ফিলডে বলেন, ‘১০ মার্চের পর থেকে আমানতকারীদের মানসিকতা পরিবর্তন হয়েছে। ট্রিপল-আ দেশগুলোর ব্যাংকে আমানত রাখার চাহিদা বেড়েছে।’ উল্লেখ্য যেসব দেশে ঋণখেলাপের পরিমাণ কম, সেগুলো ট্রিপল-আ দেশ হিসেবে পরিচিত। এসব দেশের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ডেনমার্ক, নরওয়ে ও জার্মানি অন্যতম।
জার্মানির নাগরিকরা সবচেয়ে বেশি মুনাফা পান ইতালির স্মার্ট ব্যাংক থেকে। বৃহস্পতিবার এক বছরের আমানতের ক্ষেত্রে তারা ৩ দশমিক ৫ শতাংশ হারে মুনাফা দেয়ার কথা ঘোষণা করেছিল। মুনাফার ক্ষেত্রে এটিই সর্বোচ্চ হার। এর পরে ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ হারে মুনাফা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিল মাল্টার ইজোলা ও ক্রোয়েশিয়ার কোভানিকা ব্যাংক। সে তুলনায় জার্মানির এসডব্লিউকে ব্যাংক কর্তৃক ঘোষিত মুনাফার হার ছিল অনেক কম। মাত্র ২ দশমিক ৫৫ শতাংশ।
কোন মন্তব্য নেই