অ্যামাজনের বিরুদ্ধে মামলার পরিকল্পনা এফটিসির - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

অ্যামাজনের বিরুদ্ধে মামলার পরিকল্পনা এফটিসির


অ্যালেক্সা স্পিকারের মাধ্যমে অবৈধভাবে শিশুদের তথ্য সংগ্রহের অভিযোগ উঠেছে অ্যামাজনের বিরুদ্ধে। বলা হচ্ছে পিতা-মাতার সম্মতি ছাড়াই শিশুদের থেকে অবৈধভাবে তথ্য সংগ্রহ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এ অভিযোগের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের স্বাধীন সংস্থা ফেডারেল ট্রেড কমিশনের (এফটিসি) মামলার মুখোমুখি হতে যাচ্ছে ই-কমার্স জায়ান্টটি। খবর টেকটাইমস। 


অ্যামাজনের বিরুদ্ধে অভিযোগে আরো বলা হয়, পিতা-মাতার সম্মতি ছাড়াই ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের কাছ থেকে অবৈধভাবে তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে অ্যামাজন অনলাইন প্রাইভেসি প্রটেকশন অ্যাক্ট (শিশুদের অনলাইন গোপনীয়তা সুরক্ষা আইন) লঙ্ঘন করেছে। ব্লুমবার্গের বরাত দিয়ে টেক টাইমসের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, মামলা দায়েরের পরবর্তী মাসের মধ্যেই বিচার বিভাগ কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করতে পারে। 


অ্যামাজন এটির স্পিকারের মাধ্যমে শিশুদের গোপনীয়তা লঙ্ঘন করেছে কিনা এ বিষয়ে শিশুদের সুরক্ষা নিয়ে কাজ করে এমন কয়েকটি পরামর্শক সংস্থা ২০১৯ সালে তদন্তের সুপারিশ করে। অভিযোগ করা হয়, কোম্পানিটি অনির্দিষ্টকালের জন্য ভয়েস রেকর্ডিংগুলো ধারণ করে রাখছে। ব্যবহারকারীরা মুছে ফেলার চেষ্টা করলেও কিছু ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। কয়েক বছর ধরেই অ্যামাজনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগের তদন্ত চলছে। 


অভিযোগে আরো বলা হয়, শিশুদের জন্য অ্যালেক্সা ভয়েস সহকারীর বেশির ভাগ অ্যাপ্লিকেশনেই গোপনীয়তা নীতি ছিল না। তাছাড়া অ্যামাজনও তথ্য সংগ্রহের জন্য শিশুদের বাবা-মা সম্মতি নেয়নি। অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রতিষ্ঠানটিকে বড় ধরনের আর্থিক জরিমানা দিতে হতে পারে।


অ্যামাজন যখন ইকোডট স্মার্ট স্পিকারের শিশুবান্ধব সংস্করণ নিয়ে আসে তখন সমালোচকরা তথ্য সংগ্রহের বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। তারা বলেছিল, স্পিকারটির শিশুদের তথ্য সংগ্রহের বিষয়ে পিতা-মাতাদের সতর্ক থাকা উচিত। তবে অ্যামাজনের পক্ষ থেকে যুক্তি দেয়া হয়, এসব স্পিকার মূলত শিশুদের লার্নিং টুলস হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। তাদের ইকো ডট কিডস সংস্করণ ও ফ্রিটাইম মূলত চিল্ড্রেনস অনলাইন প্রাইভেসি প্রটেকশন রুল (সিওপিপিএ) মেনে তৈরি। এ ডিভাইসে খুব শক্তিশালী সুরক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে।


ধারণা করা হচ্ছে অভিযোগ প্রমাণিত হলে, শিশু গোপনীয়তা আইন লঙ্ঘনের কারণে ফেডারেল সরকার অ্যামাজনের পক্ষ থেকে প্রতিজন শিশুর বিপরীতে ৫০ হাজার ডলার করে নাগরিক আর্থিক জরিমানা সংগ্রহ করতে পারে। এর আগে অবৈধভাবে শিশুদের তথ্য চুরির অভিযোগের মামলাগুলোয় বড় ধরনের শাস্তির মুখোমুখি হতে হয়েছে অভিযুক্তদের। তবে এফটিসি ও অ্যামাজনের পক্ষ থেকে মামলার বিষয়ে কোনো বিবৃতি বা মন্তব্য প্রকাশ করা হয়নি।


জার্মান মালিকানাধীন রাজনৈতিক পত্রিকা পলিটিকোর প্রতিবেদনে বলা হয়, এফটিসির প্রধান লিনা খানের অধীনে অন্য কোম্পানিগুলোর মতোই অ্যামাজনের প্রতিটি ব্যবসায়িক ক্ষেত্রগুলোকে ঘিরে ‘এন্টি ট্রাস্ট’ তদন্ত চালানো হচ্ছে। এর আগে শিশুদের থেকে অবৈধভাবে তথ্য সংগ্রহের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান ওয়েট ওয়াচারসকে জরিমানা করা হয়। ভিডিও গেম এপিক গেমসকে ৫২ কোটি ডলার জরিমানার পাশাপাশি যে শিশুদের লক্ষ্যবস্তু করে গেমটি ক্রয়ে প্রলুব্ধ করা হয়েছিল তাদের অর্থ ফেরত দিতে বলা হয়েছে। 


প্রযুক্তি শিল্পের ক্রমবর্ধমান বিকাশের বিষয়টি ইতিবাচক হলেও শিশুদের তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণের বিষয়গুলো সম্পর্কে উদ্বেগ বাড়ছে। আমেরিকান মিডিয়া ওয়েবসাইট সিএনইটি ব্যবহারকারীদের অ্যামাজন ইকো স্পিকারের গোপনীয়তা বৃদ্ধিবিষয়ক সেটিংস পরিবর্তনের কিছু উপায় জানিয়েছে। যেমন অ্যালেক্সা যে ব্যবহারকারীর কথোপকথন শুনছে না, তা নিশ্চিত করতে স্পিকার আনপ্লাগ বা মিউট করা। এছাড়া ভয়েস রেকর্ডিং মুছে ফেলা সম্পর্কেও বলা হয়েছে।

কোন মন্তব্য নেই