ভালো মুনাফার সম্ভাবনা মেটাভার্সে বিনিয়োগে প্রস্তুত নয় অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

ভালো মুনাফার সম্ভাবনা মেটাভার্সে বিনিয়োগে প্রস্তুত নয় অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান


ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভালো মুনাফা অর্জনের সুবিধা করে দিতে মেটাভার্সের ভালো সক্ষমতা রয়েছে। তবে এ খাতে প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত বড় কোনো বিনিয়োগ হয়নি। বিনিয়োগ করলে সফলতা আসবে কিনা সে বিষয়েও কোনো তথ্য নেই। সম্প্রতি কেপিএমজির এক জরিপে তথ্যটি উঠে এসেছে। খবর সিএনবিসি।


কেপিএমজির টিএমটি লিডার মার্ক গিবসন বলেন, ‘প্রযুক্তি, মিডিয়া ও টেলিকম কোম্পানিগুলোর জন্য এটি বিব্রতকর পরিস্থিতি। মূলত কোথায় ও কী পরিমাণে বিনিয়োগ করতে হবে সে বিষয়টি পরিষ্কার নয়। আবার বিনিয়োগ করে লোকসানে পড়ার একটা ভয়ও রয়েছে।’


মেটাভার্স মূলত একটি ডিজিটাল জগৎ। যেখানে ব্যবহারকারীরা ভার্চুয়ালি যুক্ত হতে পারবেন। সবার আলাদা আলাদা অ্যাভাটার থাকবে। এর মাধ্যমে পারস্পরিক যোগাযোগ, তথ্য আদান-প্রদান, খেলায় অংশগ্রহণের মতো সামাজিক কাজ করা যাবে। এজন্য ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্লাটফর্ম ব্যবহার করতে হবে।


কেপিএমজির জরিপে দেখা যায়, টিএমটির ৬০ শতাংশ নির্বাহী মনে করেন, সরাসরি লেনদেন কার্যক্রম ভার্চুয়ালি সম্পাদনে সহায়তার মাধ্যমে মেটাভার্স ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে ভালো মুনাফা অর্জনের সুবিধা করে দেবে। এছাড়া পরিচালন ব্যয়ও অনেক কমে আসবে। তাদের বিশ্বাস পারস্পরিক যোগাযোগের মাধ্যমে গ্রাহকের সন্তুষ্টির মাত্রাতেও পরিবর্তন আসবে। নির্বাহীদের একটি অংশ জানায়, মেটাভার্সের সম্ভাবনা থাকলেও, এর আরো পরিমার্জন ও উন্নয়ন প্রয়োজন। প্রতিবেদনে বলা হয়, জরিপে টিএমটির যে নির্বাহীরা অংশ নিয়েছেন তাদের মতে কয়েক বছরের মধ্যে মেটাভার্স একটি সমৃদ্ধ বাণিজ্যিক ইকোসিস্টেমে পরিণত হবে। জরিপের তথ্যানুযায়ী বিশ্বের ৭০ শতাংশের বেশি প্রতিষ্ঠান চলতি বছর প্রযুক্তি খাতে মোট বরাদ্দের মাত্র ৫ শতাংশ মেটাভার্সে ব্যয় করেছে। অন্যদিকে ২৭ শতাংশ প্রতিষ্ঠান এখনো কোনো বাজেট নির্ধারণ করেনি।


জরিপে বিশ্বের বিভিন্ন প্রযুক্তি, মিডিয়া ও টেলিকম কোম্পানির ৭৬৭ জন নির্বাহীর মতামত নেয়া হয়েছে। যাদের বাৎসরিক আয় ২৫ কোটি ডলার। প্রতিষ্ঠানগুলো ১৩টি দেশ ও পাঁচটি মহাদেশের অন্তর্গত। কেপিএমজির প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রযুক্তি, মিডিয়া ও টেলিকম খাত সংশ্লিষ্টদের অধিকাংশই মেটাভার্সে বড় ধরনের বিনিয়োগের আগে এর কার্যকারিতা দেখতে চায়।


জরিপ করা ৪০ শতাংশ উত্তরদাতার মতে, মেটাভার্সে বিনিয়োগ করার পর যে মুনাফা আসবে সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো তথ্যপ্রমাণ বা উদাহরণ তৈরি হয়নি। ৫০ শতাংশ অংশগ্রহণকারী জানান, তাদের প্রতিষ্ঠান বড় ধরনের বিনিয়োগের আগে মেটাভার্সের বর্তমান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। অন্যদিকে মেটা ও ডিজনির মতো প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে মেটাভার্সে কয়েক কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। কিন্তু এ বিনিয়োগ এখনো সফলতার মুখ দেখেনি। ২০২২ সালে মেটার মেটাভার্স পরিচালনে ১ হাজার ৩৭২ কোটি ডলার লোকসানের তথ্য জানিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি এখনো আয়ের জন্য বিজ্ঞাপনের ওপরই বেশি নির্ভরশীল।


শিল্প খাত তদারককারীদের একজন সিএনবিসিকে জানান, মেটাভার্স থেকে মনোযোগ সরানোর পর মেটার বাজার পুনরায় চাঙ্গা হয়েছে। পারতপক্ষে মেটার অনেক নির্বাহী স্বীকার করেছেন, মেটাভার্সের অধিকাংশ পণ্যের কার্যকারিতা সম্পর্কে জানতে আরো ১০-১৫ বছর সময় লাগবে। এদিকে গত সপ্তাহে কর্মী ছাঁটাইয়ের অংশ হিসেবে ডিজনি তাদের মেটাভার্স ডিভিশনের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি এর আগে মেটাভার্স নিয়ে সেভাবে বিস্তৃত কোনো পরিকল্পনার কথা জানায়নি। কেপিএমজির জরিপে অংশ নেয়া অধিকাংশ নির্বাহী জানান, তাদের কোম্পানি এখনো মেটাভার্সের সঙ্গে যুক্ত হতে বা সেখানে বড় ধরনের বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত নয়। কেপিএমজি বিবৃতিতে জানায়, মেটাভার্সকে গ্রহণ করা ও এতে বিনিয়োগে কয়েকটি বাধা রয়েছে। এর মধ্যে প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ, উন্নয়নের অধিক খরচ ও দক্ষ কর্মীর অভাব উল্লেখযোগ্য।

কোন মন্তব্য নেই