সরকারবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল প্যারিস, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গ্রেপ্তার শতাধিক
সরকারবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল প্যারিস, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গ্রেপ্তার শতাধিক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক || টাইমস এক্সপ্রেস ২৪
প্রকাশিত: বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, রাত ৯:০০
ফ্রান্সে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ নতুন মাত্রা পেয়েছে। বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাজধানী প্যারিসসহ বিভিন্ন শহরে হাজারো তরুণ সড়কে নেমে আসেন। “ব্লোকঁ তু” (সবকিছু অচল করে দাও) কর্মসূচির আওতায় তারা রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি, অগ্নিসংযোগ ও সড়ক অবরোধ করেন।
সংঘর্ষ ও গ্রেপ্তার
-
ফরাসি গণমাধ্যম লো মঁদ জানিয়েছে, বিক্ষোভ শুরুর এক ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ অন্তত ২০০ জনকে আটক করে।
-
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স বলছে, আটককৃতের সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়েছে।
-
দেশজুড়ে বিক্ষোভ দমনে প্রায় ৮০ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ সম্প্রতি ব্যয় সংকোচন নীতি বাস্তবায়ন শুরু করলে তরুণদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ে।
-
গত সোমবার আস্থা ভোটে হেরে প্রধানমন্ত্রী ফ্রঁসোয়া বায়রু পদত্যাগ করেন।
-
মাখোঁ এরপর ঘনিষ্ঠ সহযোগী সেবাস্টিয়ান লোকনুকে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেন।
-
লোকনুর দায়িত্ব গ্রহণের দিনেই দেশজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ
বিক্ষোভকারীদের দাবি—
-
মাখোঁ জনগণের প্রত্যাশা ভঙ্গ করেছেন।
-
সংসদ ভেঙে দেওয়া অথবা একজন বামপন্থী প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেওয়া উচিত ছিল।
-
ঘনিষ্ঠজনকে প্রধানমন্ত্রী বানানো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অপমান।
বিক্ষোভের চিত্র
-
প্যারিসসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেড তৈরি করে আগুন ধরান।
-
কোথাও রেললাইনের বিদ্যুৎ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
-
পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর রেনেতে একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়।
-
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।
সরকারের প্রতিক্রিয়া
ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রেতাইয়ো বলেছেন—
“এই বিক্ষোভ পরিকল্পিত। সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের পরিবেশ তৈরির চেষ্টা চলছে।”
তিনি অভিযোগ করেন, গ্রেপ্তারদের মধ্যে অনেকে ইচ্ছাকৃতভাবে সংঘাতে জড়াতে রাস্তায় নেমেছিল। এছাড়া কিছু বামপন্থী রাজনীতিবিদ আন্দোলনকারীদের মদদ দিচ্ছেন বলেও দাবি করেন তিনি।
বিশ্লেষণ
লো মঁদ জানায়, এই আন্দোলনের কোনো আনুষ্ঠানিক নেতৃত্ব নেই। বরং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সংঘবদ্ধ হয়ে তরুণরা বিক্ষোভ করছে। তাদের ক্ষোভ শুধু ব্যয় সংকোচন নীতির বিরুদ্ধে নয়, বরং শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও সামাজিক বৈষম্য নিয়েও।
এখন রাজনৈতিক মহলে মূল প্রশ্ন—
-
শুধু কঠোর পুলিশি পদক্ষেপেই কি বিক্ষোভ দমন সম্ভব?
-
নাকি মাখোঁ প্রশাসনকে জনগণের দাবির প্রতি সাড়া দিতে হবে?
কোন মন্তব্য নেই