আট লিজিং কোম্পানি বন্ধ: শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের অনিশ্চয়তা
আট লিজিং কোম্পানি বন্ধ: শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের অনিশ্চয়তা
নিজস্ব প্রতিবেদক | টাইমস এক্সপ্রেস ২৪
📅 ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, রাত ১০:৩৩
বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিনের অনিয়ম, দুর্নীতি ও দুর্বল ব্যবস্থাপনার কারণে অচল হয়ে পড়া ৯টি নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই) বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে ৮টি প্রতিষ্ঠান শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত থাকায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে তীব্র অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
তালিকাভুক্ত লিজিং কোম্পানি
-
ফাস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট
-
বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি
-
প্রিমিয়ার লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স
-
ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট
-
জিএসপি ফাইন্যান্স কোম্পানি
-
প্রাইম ফাইন্যান্স
-
পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস
-
ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস
বিনিয়োগকারীদের ক্ষতির আশঙ্কা
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা জানাচ্ছেন—
-
কিছু প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ প্রায় ৯৯% পর্যন্ত পৌঁছেছে।
-
দায় পরিশোধের জন্য পর্যাপ্ত সম্পদ নেই।
-
সাধারণ শেয়ারহোল্ডাররা মূলধন ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
বিলুপ্তির প্রক্রিয়ায় প্রথমে বহিঃঋণদাতারা, এরপর আমানতকারীরা, ডিবেঞ্চার হোল্ডার এবং অগ্রাধিকারমূলক শেয়ারহোল্ডাররা অর্থ ফেরত পাবেন। সাধারণ শেয়ারহোল্ডাররা তালিকার একেবারে শেষে থাকায় তাদের ক্ষতি হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।
শেয়ারবাজারে প্রভাব
এই সিদ্ধান্ত ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম ১৯–৩৩ শতাংশ পর্যন্ত কমে গেছে। বর্তমানে অনেক শেয়ার ১০ টাকার নিচে, এমনকি কিছু শেয়ার ২ টাকারও নিচে লেনদেন হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের আশ্বাস
গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, “আমানতকারীদের অর্থ সুরক্ষিত থাকবে। স্পন্সর-পরিচালকদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে।” তিনি জানান, বিলুপ্তি প্রক্রিয়া ফাইন্যান্স কোম্পানি অ্যাক্ট ২০২৩ অনুযায়ী হাইকোর্টের অনুমোদন সাপেক্ষে সম্পন্ন হবে।
বিএসইসি’র অবস্থান
এখনও আনুষ্ঠানিক মন্তব্য না করলেও বিএসইসি’র মুখপাত্র আবুল কালাম জানিয়েছেন, “কেন্দ্রীয় ব্যাংক আনুষ্ঠানিকভাবে জানালে আমরা বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার চেষ্টা করব।”
অতীতের কেলেঙ্কারির প্রভাব
অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, এই সংকট দীর্ঘ দিনের অনিয়মের ফল। প্রশান্ত কুমার হালদারের কেলেঙ্কারি এর বড় উদাহরণ, যেখানে চারটি এনবিএফআই থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি অর্থ অবৈধভাবে উত্তোলন করা হয়েছিল।
মূল বিষয় এক নজরে
✔️ ৮টি তালিকাভুক্ত লিজিং কোম্পানি বন্ধের পথে
✔️ সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের মূলধন ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ
✔️ শেয়ারদর ১৯–৩৩% পর্যন্ত কমেছে
✔️ বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, আমানতকারীদের অর্থ সুরক্ষিত থাকবে
কোন মন্তব্য নেই