ডিমের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি: অতিরিক্ত মুনাফা বন্ধ করতে জাতীয় ব্যবস্থা জরুরি
ডিমের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি: অতিরিক্ত মুনাফা বন্ধ করতে জাতীয় ব্যবস্থা জরুরি
টাইমস এক্সপ্রেস ২৪
প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:০৮
চাল-ডাল-তেল-মাছ-সবজির দরই যখন সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে, তখন সাধারণ জনগণের প্রোটিনের ভরসা였ো ডিমের মূল্য বৃ্দ্ধি চালের ওপর আরও এক তীব্র আঘাত। ঢাকা শহরের বাজারে কয়েক দিনের মধ্যেই ফার্ম ডিমের ডজনপ্রতি দামে প্রায় ১০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধির খবর গভীর উদ্বেগের বিষয়। সীমিত আয়ের মানুষের রোজকার পুষ্টি নিশ্চিত করা এখন আরও কঠিন হয়ে উঠেছে।
ডিম ছিল নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য সাশ্রয়ী প্রোটিনের অন্যতম উৎস। শিশু, কিশোর ও গর্ভবতী নারীদের পুষ্টি সুরক্ষায় ডিমের ভূমিকা অপরিহার্য। এর দাম অনিয়মিতভাবে বাড়লে তা কেবল খাদ্য তালিকায় ঘাটতি আনবে না — ভবিষ্যতে জাতীয় স্বাস্থ্য সূচকেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
বাজারের অস্থিরতার পেছনে উৎপাদন–বিতরণ ব্যবস্থার স্বচ্ছতার অভাব ও মধ্যস্বত্বভোগীর অতিরিক্ত মুনাফা একটি বড় কারণ। খামারিদের কাছ থেকে কমে ডিম কিনে পরে ভোক্তাকে উচ্চ মূল্য চাওয়ার ধারা চললে, ফলটি ভোক্তার ক্ষতির পাশাপাশি কৃষকেরও হবে। সরকার ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ সংস্থাকে এখন কার্যকর ও তৎক্ষণাৎ পদক্ষেপ নিতে হবে—কৃত্রিম সংকট ও গোপন মজুদ খুঁজে বের করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ, বাজার মনিটরিং শক্তিশালীকরণ এবং সরবরাহ লাইনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা জরুরি।
নিরাপদ ও সাশ্রয়ী পুষ্টি নিশ্চিত করা শুধুমাত্র অর্থনীতির প্রশ্ন নয় — এটি সামাজিক ন্যায় ও মৌলিক অধিকার। প্রয়োজনে ন্যায্যমূল্যের দোকান, ভর্তুকি অথবা ‘কৃষকের বাজার’ চালু করে সরাসরি বিক্রির ব্যবস্থা করতে হবে যাতে খামারি ন্যায্য মূল্য পায় এবং ভোক্তা সাশ্রয়ী পণ্যে পৌঁছায়। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাজারের তথ্য স্বচ্ছভাবে প্রকাশ করা হলে হঠাৎ দাম বাড়ানো বা গোপন মজুদের সুযোগ কমে যাবে।
সরকার যদি দ্রুত ও দৃশ্যমান পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে ডিমের মতো ন্যূনতম পুষ্টির ব্যবস্থা দূষিত হবে এবং লক্ষ লক্ষ মানুষের পুষ্টি ঝুঁকিতে পড়বে। অতিরিক্ত মুনাফায় লাগাম টানাই এখন সময়োপযোগী রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব।

কোন মন্তব্য নেই