অ্যানথ্রাক্স আতঙ্কের মধ্যে ঝালকাঠিতে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই পশু জবাই
অ্যানথ্রাক্স আতঙ্কের মধ্যে ঝালকাঠিতে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই পশু জবাই
ঝালকাঠি প্রতিনিধি || টাইমস এক্সপ্রেস ২৪
প্রকাশিত: ১৫ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২৫
রংপুর ও গাইবান্ধায় অ্যানথ্রাক্স বা তড়কা রোগের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ার পর সারা দেশে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এরই মধ্যে ঝালকাঠি জেলায় স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই পশু জবাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। এতে বাড়ছে সংক্রামক রোগ ও অ্যানথ্রাক্স সংক্রমণের ঝুঁকি।
জানা গেছে, ঝালকাঠির বিভিন্ন হাটবাজারে নিয়ম অনুযায়ী কোনো পশু চিকিৎসকের ছাড়পত্র ছাড়াই প্রতিদিন গরু, ছাগল ও ভেড়া জবাই করা হচ্ছে। জবাইয়ের আগে পশু অসুস্থ না সুস্থ—তা পরীক্ষা করা হচ্ছে না। ফলে রোগাক্রান্ত পশুর মাংস মানুষের খাদ্যতালিকায় চলে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
মাংস ক্রেতা আবদুস সালাম, সদর উপজেলার বাসিন্দা, বলেন—
“নিয়ম অনুযায়ী পশু জবাইয়ের আগে চিকিৎসক পরীক্ষা করে ছাড়পত্র দেবেন, কিন্তু এখানে কোনো তদারকি নেই। আমরা জানিই না, পশুটা সুস্থ ছিল কিনা।”
নলছিটি উপজেলার বাসিন্দা এইচ এম সিজার বলেন,
“রংপুর-গাইবান্ধায় অ্যানথ্রাক্স ছড়িয়েছে। ঝালকাঠিতেও পশু জবাই হচ্ছে বিনা পরীক্ষায়। এতে মানুষের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে।”
একজন মাংস ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,
“আগে নিয়মিত পশু পরীক্ষা হতো, এখন আর কেউ আসে না। প্রশাসনের নজরদারি বন্ধ হয়ে গেছে।”
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নীরোদ বরণ জয়ধর জানান,
“আমি সদ্য যোগদান করেছি। কেন স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়া পশু জবাই হচ্ছে তা খতিয়ে দেখা হবে। অসুস্থ পশু জবাই হলে তা থেকে অ্যানথ্রাক্স সংক্রমণ ছড়াতে পারে।”
এ বিষয়ে ঝালকাঠির সিভিল সার্জন ডা. হুমায়ুন কবির বলেন,
“পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা না হওয়া মানুষের জন্য বড় ঝুঁকি। খোলা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পশু জবাই বন্ধে স্যানিটারি ইন্সপেক্টরদের তদারকি বাড়ানো হবে।”
জেলা প্রশাসক আশরাফুর রহমান জানিয়েছেন,
“জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসারকে বিষয়টি তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হবে।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, অ্যানথ্রাক্স ব্যাকটেরিয়া আক্রান্ত প্রাণীর সংস্পর্শ বা মাংস ভক্ষণ করলে মানুষও সংক্রমিত হতে পারে। তাই পশু জবাইয়ের আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা জরুরি।

কোন মন্তব্য নেই