চকোলেট নয়, এখন বাজারে ‘চকোলেট ফ্লেভার’ পণ্য! কোকোর সংকটে বদলাচ্ছে রেসিপি
চকোলেট নয়, এখন বাজারে ‘চকোলেট ফ্লেভার’ পণ্য! কোকোর সংকটে বদলাচ্ছে রেসিপি
টাইমস এক্সপ্রেস ২৪
চকোলেটপ্রেমীদের জন্য দুঃসংবাদ—বাজারে যে চকোলেট বা চকোলেট বিস্কুট কিনছেন, তার বেশিরভাগই আর আসল চকোলেট দিয়ে তৈরি নয়। এখন অনেক পণ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে কেবল ‘চকোলেট ফ্লেভার’।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি এক ধরনের নতুন ধারা—‘শ্রিংকফ্লেশন’-এর পর এবার ‘ফ্লেভারাইজেশন’ ট্রেন্ড, যেখানে পণ্যের দাম আগের মতোই থাকছে, কিন্তু আসল উপাদান কমিয়ে আনা হচ্ছে।
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় কোকো উৎপাদনকারী দেশ ঘানা ও আইভরি কোস্টে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে উৎপাদন মারাত্মকভাবে কমে গেছে। অস্বাভাবিক গরম, অনিয়মিত বৃষ্টিপাত ও ফসল নষ্ট হওয়ার কারণে কোকোর সরবরাহ সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে কোকোর দাম কেজিপ্রতি প্রায় ১১ ডলারে পৌঁছেছে, যা ইতিহাসের সর্বোচ্চ।
এই পরিস্থিতিতে বহু কোম্পানি রেসিপি বদলে ফেলছে। চকোলেটের আসল উপাদান কোকোর পরিবর্তে এখন ব্যবহার করা হচ্ছে পাম অয়েল, শিয়া অয়েল ও কৃত্রিম ফ্লেভার।
বিখ্যাত বিস্কুট প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ম্যাকভিটিজ-এর প্যারেন্ট কোম্পানি প্লাডিস জানিয়েছে, তারা তাদের জনপ্রিয় ‘ক্লাব’ ও ‘পেঙ্গুইন’ বিস্কুটে এখন ‘চকোলেট ফ্লেভার কোটিং’ ব্যবহার করছে। এতে সামান্য কোকো থাকলেও এটি আর পূর্ণ চকোলেট নয়। তাদের দাবি, “নতুন রেসিপিতে আগের স্বাদ বজায় আছে।” তবে নিয়ম অনুযায়ী, এসব পণ্যকে আর ‘চকোলেট বিস্কুট’ বলা যাবে না।
এছাড়া নেসলে জানিয়েছে, কোকোর দাম বেড়ে যাওয়ায় তারা ‘কিটক্যাট হোয়াইট’ ও ‘ম্যাকভিটিজ হোয়াইট ডাইজেস্টিভস’-এর রেসিপি বদল করেছে। এতে ২০ শতাংশ কোকো বাটার না থাকায় এসব পণ্য আর ‘হোয়াইট চকোলেট’ নামে বিক্রি করা যাবে না। কোম্পানিটি বলছে, “আমরা মান বজায় রেখে ভোক্তার ওপর অতিরিক্ত দাম চাপাতে চাই না।”
বিশ্লেষকদের মতে, এই প্রবণতা ক্রমে বাড়বে। কারণ কোকোর দাম যদি এভাবেই বাড়তে থাকে, তাহলে ভবিষ্যতে ‘আসল চকোলেট’ আরও বিরল ও দামী হয়ে উঠবে।
বহু বছর আগে থেকেই এমন কৌশল গ্রহণ করেছিল পুরনো ব্র্যান্ড ওয়াগন হুইল। এবার সেই পথেই হাঁটছে বিশ্বের শীর্ষ বিস্কুট ও কনফেকশনারি ব্র্যান্ডগুলো।

কোন মন্তব্য নেই