আলমারিতে মিললো শিশুর মরদেহ
রাজিউর রহমান রুমী, পাবনা : পাবনার
ঈশ্বরদী উপজেলায় বাড়ির আলমারি থেকে দেড় মাস বয়সী এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার
করেছে পুলিশ। শিশুটির নাম আতিকা জান্নাত। শনিবার রাত ১১টার দিকে নিজ ঘরের
আলমারি থেকে তার নিথর শরীর উদ্ধার করা হয়। উপজেলার অরণকোলা এলাকার এ ঘটনা
ঘটে।
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে শিশুটির পরিবারের ৪
সদস্যকে আটক করা হয়েছে। আতিকা ওই এলাকার ব্যবসায়ী আশরাফুল ইসলামের মেয়ে।
পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে শিশুটিকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, শনিবার শিশুটি বেলা ১২টা
থেকে হঠাৎ শিশু আতিকা নিখোঁজ হয়। দুপুরে ঈশ্বরদী পুলিশ অরণকোলা এলাকার
ব্যবসায়ী আশরাফুল ইসলামের নিজ বাড়ি থেকে শিশু কন্যা আতিকা জান্নাতকে
অপরিচিত কেউ চুরি করেছে এমন অভিযোগে খোঁজ শুরু করে।
এ সময় শিশুর পিতা মোঃ আশরাফুল ইসলাম, দাদী
সেলিনা খান (৬৮), দাদা মোঃ আইয়ুব আলী খান (৭২) পি/মৃত জব্বার খান, ছেলের
মামী জোৎস্না খাতুন (৫৭) আটক করে। পরে দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত ঈশ্বদীর
বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি করে আতিকার খোঁজ না মিললে রাতে শিশুটির বাবা
আশরাফুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
এসময় তার আচরণ সন্দেহজনক মনে হলে বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। পরে আলমারিতে কাপড়ে জড়ানো অবস্থায় শিশু আতিকার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
আতিকার মা নিশি খাতুন জানান, দুপুরে
আতিকাকে ঘরের খাটে শুইয়ে রেখে ছাদে রোদ পোহাতে গিয়েছিলেন তিনি। পরে ছাদ
থেকে ঘরে এসে দেখেন তার মেয়ে নেই। এসময় বাড়ির চারপাশ ও পাশের বাড়িতে খোঁজ
নেওয়া হয়। দুপুর থেকে অনেক খোঁজ করেও আতিকার সন্ধান না পাওয়ায় ঈশ্বরদী
থানায় বিষয়টি জানানো হয়।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)
আজিম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে
শিশুটির বাবা, দাদা-দাদীসহ ৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার পাবনা জিহাদুল কবির পিপিএম
জানান, কন্যা শিশু হত্যা যেন প্রাগঐতিহাসিক বর্বরতার সংস্কৃতির নগ্ন ছবি।
পর পর কন্যা শিশুর জন্ম, আগের ১ বছরের একটি কন্যা শিশু ৭ মাসে ভূমিষ্ট হওয়া
আতিকার জন্মকে আনন্দহীন করে তোলে । অপরাধী করে দেয় পুরো মানব জাতিকে। দেড়
মাসের আতিকার মৃত্যু আমাদের অপরাধী করে দেয়।
দুঃখজনক, শয়ন কক্ষের আলমারী হতে উদ্ধার হল
মৃত কন্যা শিশুর লাশ, বাবা, দাদা ও দাদী কৌশলে বাচ্চার মাকে ছাদে পাঠিয়ে
ইচ্ছাকৃত ভাবে শারীরিক ভাবে অস্বাভাবিক দেড় মাসের কন্যাকে শ্বাস রোধে হত্যা
করে আলমারীতে রেখে দেয় এবং বাচ্চার মা এসে বাচ্চাকে না পেলে, সবাই
প্রতিবেশীকে দায়ী করে তার কন্যা শিশু হারানোর জন্য। এ ব্যাপারে আইনগত
ব্যাবস্থা নেয়া হচ্ছে।
এমএন

কোন মন্তব্য নেই