চতুর্থ প্রজন্মের মোবাইল নেটওয়ার্কের যুগে প্রবেশ করলো বাংলাদেশ।
সোমবার সন্ধ্যায় বাংলালিংক, গ্রামীণফোন,
রবি এবং টেলিটককে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন ফোরজির লাইসেন্স
হস্তান্তর করলে নতুন এই যুগের সূচনা হলো।
রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে অনুষ্ঠিত লাইসেন্স
হস্তান্তরে মূলত অ্যালফাবেটিক্যালি হিসেবে চার অপারেটরকে লাইসেন্স তুলে
দেওয়া হয়। তবে সরকারি অপারেটর হিসেবে টেলিটককে আগে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে।
প্রথমে বাংলালিংক, এরপর গ্রামীণফোন, রবি
এবং টেলিটককে লাইসেন্স হস্তান্তর করেন ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি
মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, বিটিআরসির চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ,
বিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগের পরিচালক।
পর্যায়ক্রমে তারা অপারেটর চারটির প্রধান নির্বাহীদের হাতে ফোরজির লাইসেন্স তুলে দেন।
এর কিছু পরেই অনুষ্ঠান স্থল থেকে
গ্রামীণফোন এবং বাংলালিংক দেশে ফোরজি চালু করে। অপারেটর দুটির প্রধান
নির্বাহীরা সেখান থেকেই তাদের ফোরজি চালু করেন।
প্রাথমিক অবস্থায় দেশের সাত শতাধিক
বিটিএসে ইতোমধ্যে ফোরজি সেবা চালু করেছে বলে জানিয়েছে। আর বাংলালিংক দুই
শতাধিক বিটিএসে ফোরজি চালু করেছে।
অনুষ্ঠানে লাইসেন্স পাওয়ার পর অপারেটরগুলোর প্রধান নির্বাহীরা গ্রাহকের চাহিদাকে প্রাধান্য দিয়ে সর্বোচ্চ সেবা দেবার অঙ্গীকার করেন।
এর আগে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ফোরজি সেবার জন্য
স্পেকট্রাম নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। ওই নিলামে ফোরজির লাইসেন্স অনুমোদন পাওয়া
চার অপারেটরের মধ্যে দুটি অংশ নেয় নতুন করে স্পেকট্রাম কেনার জন্য। সেখানে
বাংলাংলিংক ও গ্রামীণফোন নতুন করে স্পেকট্রাম কেনে।
বাংলালিংক ১৮০০ ব্যান্ড থেকে ৫ দশমিক ৬ মেগাহার্জ ও ২১০০ ব্যান্ড থেকে ৫ মেগাহার্জ নতুন স্পেকট্রাম কেনে।
আর গ্রামীণফোন শুধুমাত্র ১৮০০ ব্যান্ড থেকে স্পেকট্রাম কেনে ৫ মেগাহার্জ।
নিলামের পর গ্রামীণফোন ও বাংলালিংকের তরঙ্গের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে
যথাক্রমে ৩৭ ও ৩০.৬ মেগাহার্টজ। এর আগে গ্রামীণফোনের ৩২, রবির ৩৬.৪,
বাংলালিংকের ২০ ও টেলিটকের ২৫.২ মেগাহার্টজ তরঙ্গ ছিলো। রবি আর এয়ারটেল
একীভূত হওয়ায় কোনো তরঙ্গ কিনেনি রবি। আর টেলিটকেরও গ্রাহকের চাহিদার তুলনায়
বেশি তরঙ্গ রয়েছে।
এর আগে দেশে তৃতীয় প্রজন্মের নেটওয়ার্ক বা
থ্রিজি চালু হয় ২০১৩ সালের ৮ সেপ্টেম্বর। যাতে অপারেটরদের বেশিরভাগই
থ্রিজির আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে বলে দাবি করে আসছিল।
দেশে ফোরজি নেটওয়ার্কের জন্য পাঁচ অপারেটর
আবেদন করে। কিন্তু নতুন করে বাঁচার সুযোগ থাকলেও মূলধন স্বল্পতার জন্য সেই
সুযোগ হারায় দেশের প্রথম মোবাইল অপারেটর সিটিসেল। পরে গত ৮ ফেব্রুয়ারি
বিটিআরসি চারটি অপারেটরকে ফোরজি লাইসেন্স দেবার জন্য চূড়ান্ত অনুমোদনের
জন্য মন্ত্রীসভায় দৃষ্টি আর্কষণ করে।
১১ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রীসভা চূঢ়ান্ত অনুমোদন দিলে ১৩ ফেব্রুয়ারি স্পেকট্রাম নিলাম অনুষ্ঠান হয়।
লাইসেন্স হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ডাক,
টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার, বিটিআরসি সচিব সাওয়ার আলমসহ
বিটিআরসি, টেলিযোগাযোগ বিভাগ, অপারেটরদের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত
ছিলেন।
কোন মন্তব্য নেই