অধিকার পুনুদ্ধারে ঐক্যের আহ্বান
অধিকার পুনরুদ্ধার করতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন।
তিনি বলেছেন, দেশের স্বাধীনতায় বলা হয়েছে জনগণ সব ক্ষমতার মালিক। কিন্তু আজ দেশের মানুষ ভোটাধিকার, মানবাধিকার, সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। এসব পুনরুদ্ধার করতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
শনিবার রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে সূচনা বক্তব্যে ড. কামাল এসব কথা বলেন।
ড. কামাল হোসেন বলেন, দেশের জনগণের চলাফেরার স্বাধীনতা নেই। তাই তারা দিশেহারা। দেশের জনগণ একটি নিরাপদ ও স্থিতিশীল সমাজ নিশ্চিত করতে চায়। কার্যকর গণতন্ত্র ও আইনের নিরপেক্ষ প্রয়োগের মাধ্যমে সুশাসন দেখতে চায়।
তিনি বলেন, দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতেই আমাদের এই ঐক্য প্রক্রিয়া। দেশে ভোটাধিকার ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই। তাই একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবিতে ঐক্য প্রক্রিয়ার ডাক দেয়া হয়েছে। আমি আশা করব- আজকে যারা এই নাগরিক সমাজে এসেছেন তারা জনগণের অধিকার নিয়ে কথা বলবেন এবং কাজ করবেন।
ড. কামাল বলেন, মানুষ পরিশ্রম করে উৎপাদন বাড়ায়, কিন্তু ন্যায্য দাম পায় না। এদিকে দেশের হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে।
গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ঐক্য প্রক্রিয়ার সদস্যসচিব আবম মোস্তফা আমীন।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. মঈন খান, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের চেয়ারম্যান নূর হোসেন কাশেমী, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিভ রহমান পার্থ প্রমুখ।
প্রধানমন্ত্রীকে ঐকে আসার আহ্বান জানালেন রব
এদিকে সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আসম আবদুর রব বলেছেন, আপনি সংসদ ভেঙে দিন। নিরপেক্ষ সরকার গঠন করে আমাদের ঐক্যে চলে আসুন। আপনি জিতলে আমরা মেনে নেব।
জাতীয় ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই উল্লেখ করে আসম আবদুর রব বলেন, দেশ থেকে স্বৈরাচার হটাতে আমরা মাঠে নামব। এ জন্য জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই। রাজনৈতিক নেতাদের কারাগারে বন্দি করে রাখা হচ্ছে। আমরা রাজপথে নামলে কাউকে বন্দি রাখা যাবে না। নির্বাচন কমিশন বাতিল করতে হবে। উই ওয়ান্ট জাস্টিস।
তিনি বলেন- দেশ আজ গুম, খুন, অপহরণ ও বেওয়ারিশ লাশে পরিণত হয়েছে। দেশে উন্নয়ন হয়েছে আবার লুটও হয়েছে। ব্যাংকের টাকা লুট হচ্ছে। কবে যে দেশের মানচিত্র লুট হয়ে যায়, সেই আতঙ্কে রয়েছি। সরকার দেশ রক্ষায় নয় অন্য কাজে ব্যস্ত।
গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে মহানগর নাট্যমঞ্চে বিকাল ৩টার দিকে শুরু হয় নাগরিক সমাবেশ। এতে যোগ দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের শীর্ষ চার নেতা।
পরে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে উপস্থিত হন সমাবেশের প্রধান অতিথি বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি, যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী।
গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ঐক্য প্রক্রিয়ার সদস্যসচিব আ ব ম মোস্তফা আমীন।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মঈন খান, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের চেয়ারম্যান নূর হোসেন কাশেমী প্রমুখ।
বৃদ্ধিমানদের রাষ্ট পরিচালনায় আসতে হবে : সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী
সমাবেশে কোটাব্যবস্থার সমালোচনা করে বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক এ কিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেছেন, ‘নির্বোধ ব্যক্তিরা কেন দেশের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকবে? দায়িত্বে থাকতে হবে মেধাবীদের, বুদ্ধিমানদের। রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব (প্রশাসনে) মেধাবীদেরই গুরুত্ব দিতে হবে।’
শনিবার বিকালে ঢাকা মহানগর নাট্যমঞ্চে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নাগরিক সমাবেশে বদরুদ্দোজা চৌধুরী এসব কথা বলেন।
সাবেক এ রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আজকের মেধাবী তরুণ কালকের ভবিষ্যৎ। তিনি কোটা আন্দোলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, তাদের ওপর ছুরি দিয়ে আঘাত করবেন, চাপাতি দিয়ে আঘাত করবেন। গুন্ডা লেলিয়ে দেবেন। আপনি করেন নাই, আপনার লোকজন করেছে। এটা লজ্জার বিষয়।’ বি. চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ প্রতিবাদী জাতি, বাংলাদেশ স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছে, বাংলাদেশ পাকিস্তানি স্বৈরাচার বরদাশত করে নাই, প্রতিবাদ করেছে। এখনো করবে।
এ সময় তিনি দুর্নীতি ও ঘুষ নিয়ে মন্তব্য করে বলেন, স্পিড মানি বলে সেটা বৈধ করা হয়েছে। সরকারের প্রতিটা মন্ত্রণালয়ে চ্যানেল করেছে একটা মন্ত্রণালয়ও ঘুষ ছাড়া চলে না। এর আগে শনিবার বিকাল পৌনে ৫টার দিকে তিনি গুলিস্তানে ঢাকা মহানগর নাট্যমঞ্চে সমাবেশে যোগ দেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন ছেলে মাহী বি চৌধুরী ও মেজর (অব.) মান্নান।
প্রসঙ্গত, শনিবারের সমাবেশে বি চৌধুরীর অংশগ্রহণ নিয়ে একধরনের অনিশ্চয়তা ছিল। গত কয়েক দিন মাহমুদুর রহমান মান্নার চেষ্টায় তিনি সমাবেশে এলেন। শুক্রবার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলসহ তিন সিনিয়র নেতাও যান তার বারিধারার বাসায়।
বিকাল ৩টা ১৫ মিনিটে সমাবেশ শুরু হয়। ‘কার্যকর গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলুন’ শীর্ষক এ সমাবেশের আয়োজন করেছে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া।
জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নাগরিক সমাবেশে বদরুদ্দোজা চৌধুরী বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলটির স্থায়ী কমিটির আরও তিন সদস্য সমাবেশে উপস্থিত রয়েছেন।
কোন মন্তব্য নেই