শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি
রাজশাহীতে হঠাৎ করেই শিলাবৃষ্টি হয়েছে। বসন্তের শুরুতে এমন শিলাবৃষ্টি অনেকের কাছেই অপরিচিত। এই শিলাবৃষ্টিতে আমের মুকুলসহ সবধরনের রবি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জেলার পুঠিয়া উপজেলার জিওপাড়া ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম রোববার দুপুর পর্যন্ত শিলার চাদরে ঢেকে ছিল। এমন শিলাবৃষ্টিতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে ওই এলাকার মানুষ। কৃষি অফিস থেকে জানা গেছে, প্রায় ২ হাজার ১৮২ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ফসল নষ্ট হয়েছে।
রাজশাহীতে মৌসুমের প্রথম এই শিলা-ঝড়-বৃষ্টিতে আমের মুকুলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঝরে পড়েছে অসংখ্য মুকুল। এতে হতাশায় পড়েছেন চাষিরা। শিলাবৃষ্টিতে পেঁয়াজ, রসুন, গম, সরিষা ও আমের মুকুলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিলাবৃষ্টির আঘাতে রাজশাহীর গোদাগাড়ী, তানোর, পুঠিয়া, চারঘাট ও বাঘা উপজেলায় আমের মুকুলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গাছ থেকে প্রচুর পরিমাণে মুকুল ঝরে পড়েছে।
পুঠিয়ার বানেশ্বর এলাকার কৃষক শহিদুল ইসলাম জানান, এবার প্রায় প্রতিটি আমের গাছে প্রচুর মুকুল এসেছিল। কিন্তু ভোরে শিলাবৃষ্টির আঘাতে প্রচুর মুকুল ঝরে পড়েছে। এতে লোকসান গুণতে হবে চাষিদের। তিনি জানান, শিলাবৃষ্টিতে অন্য ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে পেঁয়াজ ও রসুন চাষিরা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
চারঘাট উপজেলার রায়পুর গ্রামের আম ব্যবসায়ী শামসুল হক জানান, ‘আম গাছে মুকুল যে পরিমাণ এসেছিল তাতে অন্যান্য বছরের লোকসান অনেকটা পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হতো। আজকের শিলাবৃষ্টিতে তাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। আমের উৎপাদন কেমন হবে তা নিয়ে তিনি দুশ্চিন্তায়’।
কৃষক নজরুল ইসলাম জানান, তিনি এবার প্রায় দেড় বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছিলেন। জমিতে সরিষাও হয়েছিল ব্যাপক। দুই-একদিনের মধ্যে সেগুলো কাটার উপযোগি হত। কিন্তু শিলাবৃষ্টিতে সরিষার দানাগুলো প্রায় সবই ঝরে মাটিতে মিশে গেছে। এখন দেড় বিঘা জমিতে দুই মণ সরিষাও হয়তো ঘরে উঠবে না।
উপজেলার শিলমাড়িয়া এলাকার কৃষক নূর হোসেন জানান, তাঁদের এলাকায় আমের মুকুল, গম, সরিষা, মশুর, আলু, ভুট্টা ও পেয়াজের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শিলার কারণে কোনো কোনো কৃষকের একেবারে মাথায় হাত পড়েছে। রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামছুল হক বলেন, শিলা এবং ভারি বৃষ্টি কারণে পেঁয়াজ, রসুন, গম ও আমের মুকুলের ক্ষতি হয়েছে। প্রায় প্রায় ২ হাজার ১৮২ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ফসল নষ্ট হয়েছে বলে তিনি জানান।
কোন মন্তব্য নেই