বিদেশে গিয়ে কোন বপদে পড়লে কি করবেন?
![]() |
বিদেশে গিয়ে কোন বপদে পড়লে কি করবেন? timesexpress24.com |
বাংলাদেশের থেকে প্রায় ১ কোটির বেশি প্রবাসী পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বসবাস করছে। প্রবাসে বসবাসরত ব্যক্তিগণ সংশ্লিষ্ট দেশে থাকা অবস্থায় বিভিন্ন অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনার বা বিপদের শিকার হন । এসব অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা থেকে প্রবাসীদের রক্ষা করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করে থাকে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যুলার ও কল্যাণ অনুবিভাগ বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাসসমূহ এবং বাংলাদেশী নাগরিকদের বহুমুখী কনস্যুলার সেবা প্রদান করে থাকে। বিদেশে অবস্থানকালে কোন ব্যক্তির যদি কোন প্রকার কনস্যুলার সেবার প্রয়োজন হয়, তাহলে তিনি নিকটস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সাথে যোগাযোগ করে কিংবা দেশে তাঁর নিকটজন তাঁর পক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যুলার ও কল্যাণ অনুবিভাগের সাথে যোগাযোগপূর্বক কনস্যুলার সেবা গ্রহণ করতে পারেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যুলার ও কল্যাণ অনুবিভাগ যে সকল সাহায্য সহজুগিতা করে থাকে তা হলঃ
ক্ষতিপূরণ আদায়ে সহায়তা
প্রবাসী বাংলাদেশীরা চাকুরিরত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে চাকুরির শর্তানুযায়ী তাঁদের ক্ষতিপূরণ আদায়ে জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো ও সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশ দুতাবাসের সহযোগিতায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে। মৃত ব্যক্তির বৈধ উত্তরাধিকারীগণের আবেদনের ভিত্তিতে জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো আদায়কৃত ক্ষতিপূরণ প্রদানের ব্যবস্থা নেয়। উল্লেখ্য যে আবেদনপত্রের সঙ্গে নিম্নোক্ত দলিলাদি/তথ্যাদি থাকা প্রয়োজন।
- · মৃত ব্যক্তির পাসপোর্ট/পরিচয়পত্র;
- · নিয়োগকারী ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের নাম ও ঠিকানা;
- · মৃত্যুর স্থান, তারিখ এবং মৃত্যুর কারণ;
- · আবেদনকারীর পূর্ণ ঠিকানা;
- · বৈধ উত্তরাধিকার সংক্রান্ত সনদ।
এছাড়াও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ বা পঙ্গুত্ববরণকারী প্রবাসী বাংলাদেশীদের ক্ষতিপূরণ আদায়ের ক্ষেত্রেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সরকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে সমন্বয়পূর্বক প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করে।
বিদেশে আটক বাংলাদেশীদের দেশে প্রত্যাবাসন
প্রবাসে কোন বাংলাদেশী আটক হলে বা কারাদন্ড হলে এবং তার আত্মীয়-স্বজন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যুলার ও কল্যাণ অনুবিভাগে যোগাযোগ করলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্বল্পতম সময়ে সংশ্লিষ্ট দেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করে। তবে, এক্ষেত্রে যোগাযোগের সুবিধার্থে আটক ব্যক্তির সঠিক ও বিশদ পরিচয় বিবরণী (নাম, ঠিকানা, পাসপোর্ট নম্বর, আটকের স্থান ও সম্ভাব্য টেলিফোন নম্বর ইত্যাদি) এবং আবেদনকারীর নাম, ঠিকানা ও টেলিফোন নম্বর থাকা প্রয়োজন।
প্রবাসে কোন বাংলাদেশীর দেশে প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত কোন সমস্যা হলে সংশ্লিষ্ট দেশে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস অথবা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক (কনস্যুলার ও কল্যাণ) বরাবর আবেদন করলে সম্ভাব্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা গ্রহণ করা হয়।
এছাড়াও প্রবাসী বাংলাদেশীদের অন্য যে কোন সমস্যা জানিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক (কনস্যুলার ও কল্যাণ) বরাবর আবেদন করলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
বাংলাদেশের যে সকল নাগরিক জনশক্তি, কর্মসংস্হান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর অনুমতি নিয়ে বিদেশে গমন করেন, তাদের মধ্যে কেউ বিদেশে আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জনশক্তি, কর্মসংস্হান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর সহায়তায় এবং উক্ত ব্যক্তির আত্মীয়-স্বজন কর্তৃক প্রদত্ত খরচে তাদের দেশে ফেরৎ আনার ব্যবস্হা গ্রহণ করে।
দ্বৈত নাগরিকত্ব
কোন প্রবাসী বাংলাদেশী ইউরোপের কোন দেশের অথবা নাগরিক উত্তর আমেরিকা (যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা) নাগরিকত্ব গ্রহণ করলে সে দেশের নাগরিকত্ব প্রাপ্তির জন্য পঠিতব্য শপথ বাক্যে বা কোন দলিলে যদি বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য প্রত্যাহারের শপথ না থাকে, তাহলে তাঁর বাংলাদেশী নাগরিকত্ব বহাল থাকবে। এক্ষেত্রে বিদেশী নাগরিকত্বধারী প্রবাসী বাংলাদেশী তার বাংলাদেশী পাসপোর্ট ব্যবহার ও নবায়ন করতে পারবেন।
মৃত ব্যক্তির লাশ দেশে ফিরিয়ে আনা
প্রবাসে কোন বাংলাদেশী মৃত্যুবরণ করলে তার লাশ দেশে ফিরিয়ে আনা অথবা নিকটাত্মীয় বা বৈধ অভিভাবকের অভিপ্রায় অনুযায়ী প্রবাসে তার লাশ সনাক্ত/দাফনের জন্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্হান মন্ত্রণালয় এবং জনশক্তি, কর্মসংস্হান এবং প্রশিক্ষণ ব্যুরোর সাথে সমন্বয়পূর্বক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা গ্রহণ করে। এক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তির নিকটাত্মীয়/বধ অভিভাবককে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যুলার ও কল্যাণ অনুবিভাগ বরাবর মৃত ব্যক্তির নিম্নোক্ত তথ্যাবলীসহ একটি আবেদনপত্র দাখিল করতে হয়।
বাংলাদেশী নাগরিকত্ব প্রমাণের সনদপত্র; পাসপোর্ট (প্রথম পাঁচ পাতা)/ট্রাভেল পারমিট-এর অনুলিপি; চাকরি সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্যাদি (যেমন, চাকরিস্থল, চাকরিদাতার পূর্ণাঙ্গ নাম, ঠিকানা, টেলিফোন নম্বর ইত্যাদি এবং আনুষঙ্গিক অন্যান্য তথ্যাদি যদি থাকে)।
উপর্যুক্ত তথ্য সম্বলিত আবেদন পত্র প্রাপ্তির পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সাধারণত তিন কর্মদিবসের মধ্যে আবেদনপত্রটি প্রয়োজনীয় কার্যার্থে বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট দূতাবাসে প্রেরণ করে থাকে। উল্লেখ্য, লাশ দেশে ফিরিয়ে আনার পর তা নিকটাত্মীয়/বৈধ অভিভাবকের নিকট হস্তান্তর এবং আনুষঙ্গিক অন্যান্য প্রয়োজনীয় কার্য জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (BMET) (ঠিকানাঃ ৮৯/২, কাকরাইল, ঢাকা। ফোনঃ ৯৩৩৯৭০৫, ৯৩৫০৮৪৮; ফ্যাক্সঃ ৮৩১৯৯৪৮) সম্পাদন করে থাকে। পক্ষান্তরে, বিদেশে মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তির কোন নিকটাত্মীয় বা শুভানুধ্যায়ী তাঁর সাথে থাকলে তিনি সেই দেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে যোগাযোগ করলে সংশ্লিষ্ট মিশন একই রকম সহযোগিতা প্রদান করবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রদান ক্রিত সেবা সমূহ
তথ্যসূত্রঃ প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়
সূত্রঃ BDROYAL
কোন মন্তব্য নেই