তিনি ছয়দিন প্রধানমন্ত্রী, একদিন ডাক্তার - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

তিনি ছয়দিন প্রধানমন্ত্রী, একদিন ডাক্তার



ডাক্তারি এবং প্রধানমন্ত্রীত্ব দুটোকেই এক চোখে দেখেন তিনি।




প্রধানমন্ত্রী হয়েও নিজ হাতে রোগীদের সেবা দিয়ে যাওয়ার ব্রত ত্যাগ করতে পারেননি ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং৷ আর তাই ভাগ করে নিয়েছেন সপ্তাহের দিনগুলো৷ পাঁচ দিন প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর সামলে প্রতি শনিবার সশরীরে হাসপাতালে উপস্থিত থেকে রোগী দেখেন, নিজ হাতে করেন অস্ত্রোপচার৷ সপ্তাহের অবশিষ্ট দিন, অর্থাৎ রবিবার সারা দিন কাটান পরিবারের সাথে৷

 ‘‘এমনিতে কেউ ফুটবল খেলে কাটান সপ্তাহান্তের অবসর, কেউবা খেলেন গল্ফ৷ পুরো সপ্তাহের কর্মদিবস শেষে আমিও ক্লান্ত হয়ে পড়ি৷ আর তাই প্রতি শনিবার রোগীদের নিজ হাতে সেবা দেই৷ এতে আমি আনন্দ পাই, আমার শারীরিক ও মানসিক চাপ কমাই,’’ বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন তিনি৷

ডাক্তারি এবং প্রধানমন্ত্রীত্ব দুটোকেই এক চোখে দেখেন শেরিং৷ এক মনে করার একটা ব্যাখ্যাও দিয়েছেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী৷ হাসপাতালে একজন ডাক্তার রোগীকে সারাতে ঔষধ দেন কিংবা শরীরের বিভিন্ন অংশ পরীক্ষা করে দেখেন৷ প্রধানমন্ত্রীর কাজও একই। কারণ, তাকে সরকারের বিভিন্ন পলিসি পরীক্ষা করে দেখতে হয়, সার্বিক অবস্থার উন্নতির চেষ্টা করতে হয়৷

১৯৯১ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে পড়েছেন লোটে শেরিং৷ এমবিবিএস কোর্স শেষ করার পর একটি প্রশিক্ষণও নেন ময়মনসিংহে৷ তারপর জাপান, অষ্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে উচ্চশিক্ষা নেন শেরিং৷ শুরু হয় পথ চলা৷ প্রায় এক দশক মাঠপর্যায়ে ডাক্তারি পেশায় ব্যাস্ত ছিলেন তিনি৷



২০১৩ সালে অনেকটা আকস্মিকভাবেই দেশটির জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেন তিনি৷ কিন্তু ভাগ্য সহায় হয়নি৷ তবে নির্বাচনের হার মেনে নিয়ে আবার মনোনিবেশ করেন ডাক্তারি পেশায়৷ এসময় গ্রামে-গঞ্জে চিকিৎসা দিয়ে বেড়িয়েছেন মানুষকে৷ তারপর ২০১৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে প্রধানমন্ত্রী হন তিনি৷

প্রধানমন্ত্রী হয়ে দেশের স্বাস্থ্যখাতকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করেন তিনি, নেন নানামুখী পদক্ষেপ৷ নাগরিকদের সুন্দর স্বাস্থ্য আর সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যকে দেশের উন্নয়নের মাপকাঠি হিসেবে বিবেচনা করেন লোটে শেরিং৷

প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসা পেয়ে রোগীরাও খুশি৷ মূত্রাশয়ের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন বুমথাপ৷ প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে তাঁর অস্ত্রোপচার করেন প্রধানমন্ত্রী নিজে৷ প্রধানমন্ত্রীর এমন সেবা পেয়ে ভীষণ আনন্দিত এবং আস্বস্ত বুমথাপ৷

প্রতিদিন নিজেই গাড়ি চালিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে যান লোটে শেরিং৷ পথিমধ্যে পড়ে হাসপাতাল৷ কিন্তু সপ্তাহের পাঁচদিন তো তাঁকে সামলাতে হয় দপ্তর৷আর তাই সামলে নেন নিজের আবেগ৷ বললেন, ‘‘হাসপাতাল দেখে আমার মনে হয় গাড়িটি ঘুড়িয়ে যদি হাসপাতালে চলে যেতে পারতাম!’’


কোন মন্তব্য নেই