চক পাউডার ও ময়দা দিয়ে গরুর খাঁটি দুধ! - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

চক পাউডার ও ময়দা দিয়ে গরুর খাঁটি দুধ!

ভেজাল নিত্যপণ্য ও খাদ্যদ্রব্যে আজ ছেয়ে গেছে সারাদেশে। কোথাও নির্ভেজাল ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পাওয়া যাচ্ছে না। পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্যসমৃদ্ধ খাবার পাওয়া যেন আজ অনেকটাই দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে। চারিদিকে শুধু ভেজাল আর ভেজাল।



এমন হতাশার কথা খোদ এক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মুখে শোনা গেছে। বৃহস্পতিবার সকালে শহরের জগনাথপুর এলাকার বিনি বাজারে হঠাৎ পরিদর্শনে যান সেখানকার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইসরাত সাদমীন।

ইউএনওকে দেখেই দৌড়ে পালালেন এক দুধ বিক্রেতা। ইউএনও পুলিশ নিয়ে ওই বাজারে গেলে এক দুধ বিক্রেতা তার বালতিভর্তি দুধ রাস্তায় রেখেই দৌঁড়ে পালিয়ে যান। এ সময় তার দৌঁড় দেখে পাশের আরও তিনজন দুধ বিক্রেতা একইভাবে দৌঁড়ে পালিয়ে যান।

এ সময় অভিযানে থাকা পৌর স্যানেটারি পরিদর্শক নাসিমা বেগম ওই বালতির দুধ পরীক্ষা করেন। পরীক্ষায় দেখতে পাওয়া যায় ভেজাল দুধ আছে বালতিতে। প্রতি লিটার দুধে ৭০০ গ্রাম করে পানি আছে এবং দুধে মেশানো হয়েছে চক পাউডার আর ময়দা। পুরো দুধেই ভেজাল।

জানা যায়, ওই বাজারে রমজান মাসের আগেও দুধ বিক্রি হতো। কিন্তু রমজান মাসের শুরুতেই দুধ বিক্রির পরিমাণ বেড়ে যায়। এরপর ইউএনও ভেজাল দুধ বালতি থেকে ড্রেনে ফেলে দেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন ইউএনও ইসরাত সাদমীন। তবে দুধ বিক্রেতাদের না পাওয়ায় এদিন তাদেরকে জরিমানা করা সম্ভব হয়নি।



স্যানেটারি পরিদর্শক নাসিমা বেগম বলেন, বিনিবাজারে রমজানের আগেও আমি অভিযান চালিয়েছি। তখনও দুধে ভেজাল পেয়েছি। তবে তখন পানির পরিমাণ কম ছিল। দুধ বিক্রেতারা চক পাউডার, ময়দাসহ নানা কেমিকেল দিয়ে দুধের রং ও গাঢ় করত। ক্রেতারা না চিনে সুন্দর কালার দেখে ভেজাল দুধ কিনত।

তিনি বলেন, রমজানের আগে প্রতি লিটার দুধের দাম ছিল ৪৫-৫০ টাকা। আর রমজান আসার পর বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা। এ কারণে দুধ বিক্রেতারা অবাধে গরুর দুধের নামে ভেজাল করে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছে। তবে বাজারে কিছু কিছু দুধ বিক্রেতার কাছে ভেজালহীন দুধ পাওয়া গেছে বলে জানান নাসিমা বেগম।

ভৈরবের এই বিনি বাজারে পার্শ্ববর্তী গ্রাম মাহমুদাবাদ, নারায়নপুর, রায়পুরা থেকে প্রতিদিন দুধ আসে। এলাকার মানুষ খাঁটি দুধ মনে করে এসব দুধ কিনে খাচ্ছেন।



কৃষকদের দাবি, আমরা বাড়িতে গাভী পালন করে খাঁটি দুধ গোয়ালাদের কাছে বিক্রি করছি। তারা দুধে ভেজাল মিশ্রণ করে বিক্রি করে।

এ ব্যাপারে ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত সাদমীন হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, কী করব বলুন। শহরের সবকিছুতেই ভেজাল। দুধের মধ্যে চক পাউডার আর ময়দা মেশানো জঘন্য অপরাধ। ভৈরবে সেমাই, মশলা, খেজুর, রেস্তোরাঁ যেখানেই যাই শুধু ভেজাল আর ভেজাল। ভেজাল ধরতে প্রতিদিন ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে অভিযান চালাচ্ছি।

কোন মন্তব্য নেই