ঢাবির প্রথম ছাত্রীর পরিচয়
নারী শিক্ষার অগ্রগতি দেশে বড় ভূমিকা রেখেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। প্রতিষ্ঠানটির প্রথম ছাত্রী ছিলেন লীলা রায়। লীলা রায় ১৯২১ সালে ঢাবির ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন।
লীলা রায় বাংলার ইতিহাসে প্রথম মহিলা কলেজ ‘বেথুন কলেজ’ থেকে বিএ পরীক্ষা দিয়ে প্রথম হয়েছিলেন এবং ‘পদ্মাবতী স্বর্ণ পদক’ পান।
মূলত সেখান থেকে কলেজ জীবন শেষ করে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে ইচ্ছা পোষণ করেন। কিন্তু তখন ঢাবিতে মেয়ের পড়ার ব্যবস্থা ছিল। লীলার মেধার কথা বিবেচনা করে তৎকালীন উপাচার্য ড. হার্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার বিশেষ অনুমতি দিয়েছিলেন তাকে।
লীলা রায় একজন বাঙালি সাংবাদিক, জনহিতৈষী এবং রাজনৈতিক আন্দোলনে সক্রিয় ব্যক্তি ছিলেন। ১৯২৩ সালে ঢাবি থেকে এমএ পাশ করেছিলেন তিনি।
লীলা ছাত্রাবস্থায় নারী আন্দোলনে যুক্ত হন। নারীশিক্ষা প্রসারের উদ্দেশ্যে ১৯২৩ সালে গড়ে তুলেছিলেন দীপালি সংঘ। এই সংগঠনের উদ্যোগে বেশ কিছু মেয়েদের স্কুল গড়ে ওঠে। মুসলিম নারীদের শিক্ষাতেও তিনি ভূমিকা রাখেন।
লীলা রায় নারী আত্মরক্ষা ফান্ড গঠন করেন। মেয়েদের মার্শাল আর্ট এবং শরীরচর্চার প্রশিক্ষণ দেয়া হতো সেখানে।
লীলা রায় ১৯০০ খ্রিষ্টাব্দের ২১ অক্টোবর আসামের গোয়ালপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুর ফাঁসি হলে তাদের বাড়িতে পালিত হয়েছিল অরন্ধন। ফলে ছোটবেলা থেকে তার মনে দেশপ্রেমের আগুন জ্বলে উঠেছিল।
১৯৩৯ সালে লীলা বিয়ে করেছিলেন বিপ্লবী অনিল রায়কে। ফরোয়ার্ড ব্লক গঠনে অনিল রায় এবং লীলা রায় ছিলেন সুভাষচন্দ্র বসুর সহযোগী।
লীলা রায় ১৯৪৬ সালে বাংলা থেকে ভারতীয় গণপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন লীলা রায়। ভারতীয় সংবিধানের খসড়া তৈরিতে অবদান রেখেছিলেন তিনি। দেশভাগের পর তিনি পশ্চিমবঙ্গে চলে গিয়েছিলেন।
কোন মন্তব্য নেই