আবরার হত্যা: পাওয়া গেল সিসিটিভি ফুটেজ - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

আবরার হত্যা: পাওয়া গেল সিসিটিভি ফুটেজ





বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের একটি সিসিটিভি ফুটেজ সমকালের হাতে এসেছে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, চারজন আবরারকে বহন করে নিয়ে যাচ্ছে। তাদের পেছনে আরও একজনকে হেঁটে আসতে দেখা যায়। তারপর আরও পাঁচজনকে দেখা যায়। ভিডিওতে মোট ১০ জনকে দেখা গেছে।

সিসিটিভি ফুটেজ সমকালের হাতে আসার আগে দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় বলেন, আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পেয়েছি। আমরা দেখছি কারা এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত। এটি যে হত্যাকাণ্ড, এতে সন্দেহ নেই।

তিনি বলেন, কয়েকটি সিটি সিসিটিভি ফুটেজ আমাদের কাছে রয়েছে। বিচার বিশ্লেষণ করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। রাজনৈতিক পরিচয় যাই থাকুক, যে জড়িত থাকবে তাকেই তার বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।

বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করার দাবি জানিয়ে আসছিলেন।

কিন্তু এই ফুটেজ প্রকাশ করা হলে ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীলতা তৈরি হতে পারে শঙ্কা প্রকাশ করে এর জন্য সময় চাওয়া হয় পুলিশের পক্ষ থেকে।

রোববার রাত ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা হলের সিঁড়ি থেকে আবরার ফাহাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।

বুয়েটের চিকিৎসক মাসুক এলাহী জানান, অন্য ছাত্রদের মাধ্যমে খবর পেয়ে শেরে বাংলা হলের প্রথমতলা ও দ্বিতীয়তলার মাঝামাঝি জায়গায় ফাহাদের নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। তার শরীরে অনেকগুলো আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে।

তিনি জানান, রাত্রিকালীন ডিউটিতে ছিলেন। খবর পেয়ে শেরে বাংলা হলে গিয়ে ফাহাদকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে নিজে পরীক্ষা করে দেখেন, তিনি মারা গেছেন। পরে বুয়েট কর্তৃপক্ষ ও পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়।

চকবাজার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) দেলোয়ার হোসেন জানান, ভোরে সংবাদ পেয়ে বুয়েটের শেরেবাংলা হলের উত্তর ব্লকের ২য় তলার সিঁড়ি থেকে ফাহাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন আছে। ধারণা করা হচ্ছে, রাতের কোনো এক সময় তাকে পিটিয়ে হত্যা করে ফেলে রেখেছে কেউ।

তিনি জানান, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর তার মৃত্যুর বিষয়ে আরও ধারণা পাওয়া যাবে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে।



সহপাঠীদের অভিযোগ, রোববার রাত আটটার দিকে শেরে বাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে কয়েকজন আবরারকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর রাত দুইটা পর্যন্ত তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাদের ধারণা, ২০১১ নম্বর রুমে নিয়ে তাকে পেটানো হয়।

হল শাখা ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, আবরারকে জেরা ও পেটানোর সময় ২০১১ নম্বর কক্ষে বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের উপ-আইন বিষয়ক সম্পাদক অমিত সাহা, মুজতাবা রাফিদ, ইফতি মোশারফ ওরফে সকালসহ তৃতীয় বর্ষের আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী ছিলেন৷ ওই কক্ষে এসে দ্বিতীয় দফায় আবরারকে পেটান বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী অনিক সরকার, ক্রীড়া সম্পাদক ও নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একই বর্ষের মেফতাহুল ইসলাম জিয়নসহ কয়েকজন৷ তারা সবাই বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলের অনুসারী।

আবরার ফাহাদ বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের (ইইই) বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। শেরে বাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন তিনি। তার বাড়ি কুষ্টিয়া শহরে।


কোন মন্তব্য নেই