এসক্যাপ ডেন: শহরের অদূরে শহুরে কোলাহল থেকে মুক্তি
আকাশে ভেসে বেড়াচ্ছে পেজা তুলোর মতো শুভ্র মেঘ। আর চারপাশ ঘেরা সাদা কাশফুলে, মাঝে মাঝে ছুঁয়ে দিচ্ছে মৃদু হাওয়া
ভাবুন তো, এই শরতে শহুরে কোলাহল ছাড়িয়ে আপনি বসে আছেন একটি নির্জন খোলা জায়গায়। আকাশে ভেসে বেড়াচ্ছে পেজা তুলোর মতো শুভ্র মেঘ। আর চারপাশ ঘেরা সাদা কাশফুলে, মাঝে মাঝে ছুঁয়ে দিচ্ছে মৃদু হাওয়া।
ভাবতেই যেন স্বর্গীয় অনুভূতি দোলা দেয় মনে।
এমন নির্মল প্রশান্তি এবার আপনিও চাইলে উপভোগ করতে পারবেন। শহুরে জীবনের যান্ত্রিকতা আর মানসিক চাপ থেকে নিজেকে দূরে রাখতে আপনাকে যেতে হবে “এসক্যাপ ডেন”-এ। রাজধানীর কোলাহল থেকে বিচ্ছিন্ন হলেও জায়গাটা রাজধানীর অদূরেই। প্রগতি সরণীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে সামান্য দূরত্বে অবস্থিত।
“এসক্যাপ ডেন” এর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান আর্কিটেকচার ফার্ম “রিভার অ্যান্ড রেইন লিমিটেড”।
২০১৭ সালে নিজেদের মালিকানাধীন ২০ কাঠা জমিতে একটি বহুতল ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা করেন তানজিম হক ও আসমা সুলতানা। সে অনুযায়ী নির্দেশনা দেওয়া “রিভার অ্যান্ড রেইন লিমিটেড”-কে। কিন্তু কিছুদিন পর পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনেন তানজিম ও আসমা। এবার তারা ভাবলেন ওই জমিতে একটা অস্থায়ী বাড়ি বানানো হবে। যেখানে ছুটির দিনে বন্ধু-স্বজনদের নিয়ে ঘুরে বেড়ানো যাবে।
এদিকে, জমি পর্যবেক্ষণ করে “রিভার অ্যান্ড রেইন লিমিটেড”-এর আর্কিটেক্ট কাজী ফিদা দেখলেন, জমিটি সুউচ্চ বহুতল ভবনের জন্য উপযুক্ত না। বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে জমির মালিককে জানান তিনি। একইসঙ্গে সেখানে রিসাইকেল করা শিপিং কন্টেইনারের আকৃতিতে একটি বাড়ি নির্মাণের পরিকল্পনার কথাও জানান ফিদা।
তিনি বলেন, “নতুন পরিকল্পনার একটি স্কেচ ও অ্যানিমেশন নিয়ে আমরা ভূমি মালিকের সঙ্গে দেখা করি। তিনি সঙ্গে সঙ্গে আমাদের প্রস্তাবে রাজি হয়ে যাওয়ায় একইসঙ্গে স্বাচ্ছন্দ্য ও চিন্তিত লাগতে শুরু করলো। যদিও বাড়ি নির্মাণে শিপিং কন্টেইনার ব্যবহারের বিষয়টি নতুন নয়, তবে আমরা বাংলাদেশের গ্রামের বাড়িঘরকে অনুসরণ করে আধুনিক কিছু বানানোর পরিকল্পনা করি।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা চেয়েছিলাম অতিথিদের জন্য আলাদা বসার ঘর, একটি রান্নাঘর, ঘরের ভেতর প্রশস্ত খোলা জায়গা এবং একটি খেলার মাঠের ব্যবস্থা করতে। পাশাপাশি গ্রামের বাড়িগুলোর মতো থাকবে সবুজের ছোঁয়া। এসক্যাপ ডেনের সীমানা প্রাচীরটি বিভিন্ন ধরনের গাছপালা দিয়ে ঘেরা।”
এসক্যাপ ডেন-এ যা পাবেন
ঢোকার পথটিকে এই শরতে ঘিরে রেখেছে কাশফুল। ঢুকতেই চোখে পড়বে লাল-নীল রংয়ের গেট। পুরো স্থাপনাটিকে ঘিরে রেখেছে বিভিন্ন ধরনের সবুজ লতা-গুল্ম আর বাঁশের প্রাচীর।
জায়গাটির শ্যামলিমা আর নির্মল হাওয়া মনে এনে দেয় অন্যরকম প্রশান্তি। বাড়ির সামনের খোলা জায়গায় দাঁড়ালে আপনি যেন হারিয়ে যাবেন পুরনো কোনো সুখস্মৃতিতে।
বাড়ির ভেতরকার কারুকাজ আপনাকে মুগ্ধ করবেই। ঘরোয়া পরিবেশের জন্য দ্বিতীয় তলায় আছে একটি রান্নাঘর, ছোট একটি লাউঞ্জ, ডাইনিং স্পেস, স্টোররুম আর টয়লেট। কাঠের তৈরি হওয়ায় ডাইনিং স্পেসটিতে বসে আপনার মনে আসতে পারে জাহাজের ডেকের কথা।
সব মিলিয়ে এটি শুধু একটি বাড়িই নয়, কিছুক্ষণের জন্য হারাতে চাইলে আপনি যেতে পারেন এসক্যাপ ডেনে।
কোন মন্তব্য নেই