কেউ আসলেই ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

কেউ আসলেই ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে












করোনা পরিস্থিতির মধ্যে আসছে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল ফিতর। এই উৎসবকে ঘিরে মুসলমানদের থাকে নানা প্রস্তুতি। তবে এবারের ঈদ যে যেখানে আসেন সেই এলাকায় ঘরে বসেই পালন করতে। আর এবিষয়ে কঠোর হতে চলেছে প্রশাসন। ঈদ উপলক্ষে দেশের অন্য এলাকা থেকে কাউকে রাজশাহীতে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। জেলা ও মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে এমনটিই জানানো হয়েছে। আর জেলা প্রশাসন বলছে, আদেশ অমান্য করে যারা রাজশাহীতে প্রবেশ করবে তাদেরকেই ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হবে।
শুধু তাই নয়, করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে জনস্বার্থে নগরীর সকল মর্কেটসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছে ব্যভসায়ীরা। এবার ঈদে আগে ও পরের জনসমাগম ঠেকাতে মাঠে থাকবেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। আর ঈদে বাইরের জেলা থেকে রাজশাহীতে প্রবেশ ঠেকাতেও নেয়া হচ্ছে জোর প্রস্তুতি।
স্থানীয় প্রশাসন মনে করছে, করোনা মোকাবিলায় যে যেখানে আছেন সেখানেই তাকে ঈদ করতে হবে; সরকারো নির্দেশনা এমনটাই। তাই স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হচ্ছে, ঈদ উপলক্ষে বাইরের জেলা থেকে রাজশাহীতে প্রবেশ এবং সব ধরনের জনসমাগম ঠেকাতে তারা প্রস্তুত।
এদিকে রাজশাহী জেলা প্রশাসক হামিদুল হক তার ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে জানিয়েছেন, এবার ঈদে কেউ রাজশাহীতে প্রবেশ করলে তাকে প্রতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে। জেলা প্রশাসকের পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো ‘আপনাদের যাদের আত্মীয় স্বজন ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, গাজিপুর বা অন্যান্য জেলায় রয়েছেন তাদেরকে আসন্ন ঈদের ছুটিতে নিজ নিজ স্থানে ঈদ উদযাপনের অনুরোধ করুন। ঈদের ছুটিতে কাউকে রাজশাহীতে ঢুকতে দেয়া হবে না। যদি সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে কেউ নিজে বা পরিবার পরিজন নিয়ে চলে আসেন তাহলে তাদেরকে ১৪ দিনের প্রতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনসহ পড়তে হবে নানা প্রশাসনিক বিড়ম্বনায়। আসুন সাবই পরস্পর পরস্পরকে সহায়তা করি। রাজশাহীকে করোনা মুক্ত রাখি।’ জেলা প্রশাসকের এমন উদ্যোগকে রাজশাহীবাসী সাধুবাদ জানিয়ে তাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন।
স্থানীয় প্রশাসনের একজন পদস্থ কর্মকর্তা বলেন, সবাই মনে করছেন ঈদকে সামনে রেখে রাজশাহী ভিড় আরও বাড়বে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে অনেক লোকজন রাজশাহীতে আসার চেষ্টা করবেন। বিভিন্ন কৌশলেই তারা রাজশাহীতে প্রবেশ করার চেষ্টা করবেন। এতে রাজশাহীতে জনসমাগম বাড়বে। সেই সঙ্গে বাড়বে করোনার ঝুঁকিও। তাই ঈদের সময় কড়াকড়ির বিকল্প নেই।






এদিকে ঈদ উপলক্ষে প্রস্তুতি থাকছে জানতে চাইলে রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, আমরা ইতিমধ্যেই চেকপোস্টগুলোতে নজরদারি আরও বাড়িয়েছি। ঈদের দুই একদিন আগে যা আরও বাড়ানো হবে। থাকবে প্রচারণামুলক কার্যক্রম। এছাড়াও থাকবে বাড়তি নজরদারি।
জেলা পুলিশের মুখপাত্র ইফতেখায়ের আলম বলেন, আমরা বিভিন্ন চেকপোস্টের সংখ্যা বাড়িয়েছি। কোনভাবেই যেন বাইরের কেউ প্রবেশ করতে না পারে সেই ব্যাপারে সর্বোচ্চ সর্তকর্তা অবলম্বন করেছি। এছাড়াও আমরা সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালাবো। কোথাও যদি লোকজন বাইরে জেলা থেকে আসেন সঙ্গে সঙ্গে যেন আমাদেরকে জানানো হয় সেটি সকলকে জানানো হচ্ছে। কোথাও যেন ঈদকে ঘিরে জনসমাগম না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবো।
জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক বলেন, এখনো রাজশাহীতে লকডাউন চলছে। গণপরিবহনও বন্ধ। ঈদ পর্যন্ত এমন চললে তো রাজশাহীতে এমনিতেই মানুষ আসার সুযোগ নেই। তারপরেও কেউ কেউ হয়তো ভিন্ন কৌশলে রাজশাহী প্রবেশের চেষ্টা করবেন। আমরা তা মোকাবিলা করব।
তিনি বলেন, আমরা অগামী ১৭ তারিখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে নতুন নির্দেশনা আসবে। সেই নির্দেশনা এলে আমরা বুঝতে পারব পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা নতুন পদক্ষেপ নেব। তবে ঈদ উপলক্ষে রাজশাহী আসা যাবে না, এটি ধরে নিয়েই আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।
এদিকে গণপরিবহন বন্ধ থাকলে এবং লকডাউন চলমান থাকলে প্রতিবছরের মতো এবারের ঈদটি আনন্দমুখর পরিবেশে পালন করতে পারবেন না মুসলমানরা। করোনার জন্য এবার একটু ভিন্নভাবে পালন করতে হবে ঈদ। হাজার বছরের মতো এবার ঈদের সকালে প্রতিটি মুসলমানকে একে অন্যের সঙ্গে কোলাকুলি করে আনন্দ ভাগাভাগি করতেও হয়তো দেখা যাবে না।





নতুন পাঞ্জাবী পরে ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে বৃদ্ধদেরও হয়তো দেখা দেখা যাবে না ঈদের নামাজের জন্য ঈদগাহে ভিড় জমাতে। বিকেল হলেই দর্শনীয় স্থানে বন্ধু-বান্ধব কিংবা পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঘুরতে যেতে পারবেন না কেউ। এমনকি আনন্দ ভাগাভাগি করতে বেড়াতেও যেতে পারবেন না আত্নীয়-স্বজনদের বাড়িতে।

কোন মন্তব্য নেই